বিয়েতে পেঁয়াজ উপহার। ছবি-সংগৃহীত
মাস পেরিয়ে গেছে দেশের বাজারে পেঁয়াজের অস্থিরতা কাটেনি। বরং হু হু করে বাড়ছে এর দাম। দুই দিন আগেই ডাবল সেঞ্চুরি করেছে মসলাটির প্রতি কেজির মূল্য।
লাগাম টেনে ধরতে পারছে না খোদ সরকারও।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত রফতানি বন্ধ করে দেয়াই পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। এদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, দেশে পেঁয়াজের তেমন ঘাটতি নেই। সিন্ডিকেটের কারণে পেঁয়াজের বাজারে এমন পরিস্থিতি।
এদিকে মধ্যবিত্ত ও নিম্মবিত্তরা পেঁয়াজের ঝাঁঝে মরণ দশা। গত দুই দিন ধরে হালিতে পেঁয়াজ কিনতে দেখা গেছে দেশের বিভিন্ন বাজারে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই রান্নায় পেঁয়াজ ব্যবহার করবেন না বলে পোস্ট দিচ্ছেন।
এমন যখন পরিস্থিতি পেয়াজের মূল্য কমানোর দাবিতে অভিনব এক উপায় বেছে নিয়েছেন কুমিল্লা আদর্শ উপজেলার কালখড়পাড় গ্রামের তিন যুবক।
শুক্রবার বন্ধুর বিয়েতে উপহার হিসেবে পাঁচ কেজি পেঁয়াজ দিলেন তার বন্ধুরা।
জানা গেছে, শুক্রবার অনুষ্ঠিত হলো কুমিল্লা আদর্শ উপজেলার কালখড়পাড় গ্রামের আবদুর রহিম মিয়ার ছেলে বিদ্যুৎ বিভাগে কর্মরত এমদাদুল হক রিপনের বিয়ের বৌ-ভাত। সেখানে শহিদ, শাহজাহান ও শিপন নামে তার তিন বন্ধু রেপিং পেপারে মুড়িয়ে পাঁচ কেজি পেঁয়াজ উপহার হিসেবে দেন।
শহিদ, শাহজাহান ও রিপন জানান, মাস খানেক ধরে পেঁয়াজের মূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য আমাদের মতো সাধারণদের পেঁয়াজ কিনতে ঘাম ছুটছে। নিত্য প্রয়োজনীয় এ পণ্যটির এতো দাম মেনে নেয়ার মতো নয়।
সরকার বলছে, দেশে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ মজুত রয়েছে। তবে কেন আমাদের এতো দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। তাই প্রতীকী প্রতিবাদস্বরূপ বন্ধুর অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে পেঁয়াজ উপহার দিলাম।
তারা আরও জানান, বিয়ের উপহার মানেই দামি কিছু। বর্তমানে পেঁয়াজ সবচেয়ে দামি বস্তুতে পরিণত, যা কাঙ্খিত নয়। তাই বন্ধুর বিয়েতে পেঁয়াজ উপহার দিলাম।
কত টাকা দরে কিনেছেন জানতে চাইলে তারা বলেন, বৃহস্পতিবার বাজারে গিয়ে পেঁয়াজ কিনতে গিয়ে দেখি এক কেজির মূল্য ২২০ টাকা। আমরা অবশ্য ১ হাজার টাকায় পাঁচ কেজি পেঁয়াজ কিনেছি।
কালখড়পাড় গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি আলহাজ বাচ্চু মিয়া বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, আমার আশি বছর বয়সে পেঁয়াজের এমন অস্বাভাবিক দাম আর দেখিনি। এখন যা দেখছি এই দামি জিনিস নিয়মিত খেতে নয়, বিয়ের উপহার হিসেবেই দিতে হবে।