Logo
Logo
×

সারাদেশ

বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী মুখস্থ ছিল আবরার ফাহাদের

Icon

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০১৯, ১০:০০ পিএম

বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী মুখস্থ ছিল আবরার ফাহাদের

আবরার ফাহাদ। ফাইল ছবি

ভাইয়ার পোস্টে যে তথ্যগুলো ছিল, কেউ তো একটা ভুল দেখাতে পারল না। আপনি আমি কয়জন ওই ব্যাপারগুলো জানতাম? বুয়েটে ভাইয়ার থেকে একাডেমিকভাবে অনেকেই ভালো ছাত্র ছিলেন। কিন্তু এইভাবে নিজের চারপাশ সম্পর্কে কতজন জানতেন। 

জানি না বিশেষত যারা নিজেদের বঙ্গবন্ধুর চেতনার দাবি করে ভাইয়াকে শিবির সন্দেহে এইভাবে হত্যা করেছে। যেই ছেলেটার বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীর প্রচ্ছদ রচনাকারী থেকে পেজ সংখ্যা পর্যন্ত মুখস্থ ছিল তার থেকে তাদের চেতনা অনেক বেশি ছিল? আমি তো আমার ভাইকে হারালাম কিন্তু এই দেশের ক্ষতি তো কম হল না। 

কথাগুলো বলছিলেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে নিহত আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ। ৬ অক্টোবর রাতে ৬ ঘণ্টার অমানুষিক নির্যাতনে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে আবরার। খুনের ঘটনার এক মাসেও কান্না থামেনি তার পরিবারের।

বৃহস্পতিবার দুপুরে কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই সড়কের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল, আবরারকে হারিয়ে শোকে কাতর পুরো পরিবার। এক মাসেও কান্না থামেনি মায়ের। এখনও কাঁদছেন তিনি। তিন কক্ষের বাড়ির একটি কক্ষ ছিল আবরার ফাহাদের। ওই কক্ষে রাখা হয়েছে আবরারের বুয়েটে ব্যবহৃত বইপত্রসহ যাবতীয় জিনিসপত্র। পাশের কক্ষেই থাকেন মা রোকেয়া খাতুন। আরেক কক্ষে থাকেন ছোট ভাই ফাইয়াজ।

ফাইয়াজ বলেন, এক মাস, আস্তে আস্তে এক বছর, ১০ বছর হবে। ভাইয়ার বন্ধুরাও বুয়েট থেকে একদিন বের হবে, কিন্তু ভাইয়া আর বের হবে না, পূরণ হবে না তার কোনো স্বপ্ন, সবাই ভুলে যাবে। কিন্তু হয়তো ভাইয়াই আমাদের মনে রাখবে শুধু। এক সময় ওই জগতও হয়তো ভাববে আমাকে একটু মনে করে না কেউ। 

ফাইয়াজ জানান, ৬ অক্টোবর বিকাল সাড়ে ৫টায় শেষবারের মতো পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। রাত ৯টা ৪০ মিনিটে সর্বশেষ কথা হয় ভাইয়ার এক স্টুডেন্টের মায়ের সঙ্গে। তখন ভাইয়ার গলা কাঁপাকাঁপা থাকায় আন্টি জিজ্ঞেস করেন বাবা তোমার কোনো সমস্যা? ভাইয়া বলে, না, আন্টি। 

তখন হয়তো চড় মারা শুরু হয়ে গিয়েছিল। ভাইয়া বলে, আন্টি আমি আপনাকে ১০টার পরে কল দিচ্ছি। আর আপনি চিন্তা করেন না আমি বাসায় যেয়ে ওকে বুঝিয়ে দিয়ে আসব। আর কল দেয়ার সুযোগ হয়নি তার। রাত আড়াই থেকে তিনটার মধ্যে ভাইয়া শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। 

ফাইয়াজ বলেন, এক মাসে অনেকের অনেক নাটকই দেখেছি। যারা আগে চিনতো পর্যন্ত না। তারা এসেছেন। (এখন আর দেখি না অবশ্য)।

বাবা বরকতউল্লাহ জানালেন, বুধবার আবরারের মামা ও মামাতো ভাই বুয়েটে গিয়েছিলেন। সেখানে বুয়েটের উপাচার্যের কাছে মামলায় আইনজীবী নিয়োগের বিষয়ে আবেদন করা হয়। ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম ও আরেকজন আইনজীবী নিয়োগের জন্য আবেদন করা হয়েছে। বুয়েট কর্তৃপক্ষ মামলা চালানোর ব্যয় বহনের আশ্বাস দিয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম