মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতে বিষপ্রয়োগে মাছ নিধন, ফিরে যাচ্ছেন পর্যটকরা

বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০১৯, ১১:০৩ পিএম

দেশের অন্যতম পর্যটন স্পট মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের পানিতে দুর্বৃত্তরা বিষপ্রয়োগে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণী নিধন করেছে।
পঁচা মাছের দুর্গন্ধে ৩ দিন ধরে জলপ্রপাত ও ইকোপার্ক এলাকার পরিবেশের বিপর্যয় ঘটেছে। পানি ও বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়ানোর কারণে আগত পর্যটকরা আনন্দ উপভোগ না করেই ফিরে যাচ্ছে।
মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে, কেমিকেল নয়, লতা জাতীয় বিষপ্রয়োগের ফলেই মাছ ও জলজ প্রাণী মরে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে মাছ শিকার করতেই অসাধু চক্র আমানবিক এ কাজটি করে। তবে পানির স্বাভাবিক অবস্থা ফেরাতে মৎস্য বিভাগ দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে।
শনিবার সকালে হঠাৎ পর্যটন পুলিশ, স্থানীয় আদিবাসী খাসিয়া ও ইকোপার্কের কর্মীরা জলপ্রপাতের পানিতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, ব্যাঙ, কুচিয়া, কাকড়াসহ জলজ প্রাণী মরে ভেসে থাকতে দেখেন। পঁচে দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকলে তারা মরা মাছগুলো উঠিয়ে অন্যত্র ফেলে দেন। ওই দিন থেকেই দুর্গন্ধের কারণে মাধবকুণ্ডে আগত পর্যটকরা মূল স্পটে না গিয়েই ফিরে যাচ্ছেন।
সোমবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে কুণ্ডের ও ছড়ার পানিতে বিভিন্ন প্রজাতির মরা মাছ, ব্যাঙ ভেসে থাকতে দেখা গেছে।
ইকোপার্কের টিকিট কালেক্টর শামীর আহমদ, মাধবকুণ্ড পর্যটক সহায়ক ও উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন জানান, শনিবার ভোর থেকেই তারা বামাস, সউল, সরপুটি, পাহাড়ি চিংড়ি, বাইং, টেংরাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মরা-পঁচা মাছ ভাসা অবস্থায় দেখতে পান। তাদের ধারণা, মাছ শিকারের জন্য কোনো কুচক্রী মহল ৩-৪ দিন পূর্বে হয়তো পানিতে বিষ প্রয়োগ করায় এমনটি হচ্ছে।
তারা কয়েকটি মরা-অর্ধপচা বামাস মাছ উদ্ধার করেছেন যাদের বয়স ১৫-২০ বছর হবে বলেই তাদের ধারণা। দুর্বৃত্তদের কারণে মাধবকুণ্ডের জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়েছে। অমানবিক এ কাজের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে তারা কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।
মাধবকুণ্ড পর্যটন পুলিশের ইন্সপেক্টর আবু ফয়সল মো. ফয়সল আতিক জানান, মরা ও পঁচা মাছ ভেসে থাকতে দেখেই তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বন বিভাগকে জানিয়েছেন।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এসএম সাজ্জাদ হোসেন জানান, বিষয়টি তাকে কেউ অবগত করেনি। এইমাত্র জানলেন, খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন।
উপজেলা মৎস্য কর্তকর্তা মো. সুলতান মাহবুব জানান, সোমবার বিকালে তিনি ঘটনাস্থলে একজন স্টাফ পাঠিয়ে পানি পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছেন, কেমিকেল জাতীয় নয়, লতা (একধরণের বিষ লত) জাতীয় বিষপ্রয়োগে মাছ ও জলজ প্রাণী মারা গেছে। পানির স্বাভাবিক অবস্থা ফেরাতে মঙ্গলবার সেখানে ওষুধ প্রয়োগ করবেন। এতে পানি ও বাতাসের দুর্গন্ধ দূর হবে এবং স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে।