ছাত্রলীগ নেতার জন্য ঘর ভাঙছে প্রকৌশলীর

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০১৯, ০৮:০৮ পিএম

ছাত্রলীগ নেতা কাউছার। ছবি: সংগৃহীত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে প্রকৌশলীর স্ত্রীকে কু-প্রস্তাব দিয়ে নানাভাবে হয়রানির অভিযোগ ওঠেছে। এর ফলে ওই প্রকৌশলীর সংসার টেকানোই এখন দায় হয়ে পড়েছে।
অভিযুক্ত ইমতিয়াজ আহম্মদ কাউছার জেলার নবীনগর উপজেলার বড়াইল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী প্রকৌশলী মো. গোলাম হাক্কানী শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে ওই ছাত্রলীগ নেতা জানিয়েছেন প্রকৌশলীর স্ত্রী নিজ থেকেই তার সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। বিষয়টি ‘মিটমাট’ হয়ে গেছে।
প্রকৌশলীর অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের মে মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের কাজীপাড়া এলাকার কবির আহম্মদের ছেলে গোলাম হাক্কানীর সঙ্গে নবীনগর উপজেলার বীরগাঁও ইউনিয়নের বীরগাঁও গ্রামের গোলাম সরকারের মেয়ে নিশাত বেগমের বিয়ে হয়।
বিয়ের পর হাক্কানী জানতে পারেন তার স্ত্রী নিশাতের সঙ্গে বড়াইল ইউনিয়নের ফকির বাড়ি এলাকার ছাত্রলীগ নেতা কাউছারের পূর্ব পরিচয় রয়েছে। নিশাত কোনো কাজে বাড়ির বাইরে বের হলে কাউছার তাকে উত্ত্যক্ত করে কু-প্রস্তাব দিতেন। নিশাত সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় কাউছার ফোনে তাকে হুমকি দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
নিশাতের কাছ থেকে বিষয়টি জানার পর গত ৪ অক্টোবর কাউছারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন হাক্কানী। এ সময় কাউছার তাকে হত্যা করে নিশাতকে অপহরণ করবেন বলেও হুমকি দেন।
হুমকির পর নিশাতকে তার বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন হাক্কানী। কাউছারের কারণে হাক্কানী-নিশাতের সংসার এখন ভাঙার উপক্রম হয়েছে। এ ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের কাছেও লিখিত অভিযোগ করেছেন হাক্কানী।
ভুক্তভোগী প্রকৌশলী গোলাম হাক্কানী জানান, সংসারটা টিকিয়ে রাখার জন্য নিরুপায় হয়ে আমি থানায় অভিযোগ করেছি। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি চাই আর কারও দাম্পত্য জীবনে যেন এমন না ঘটে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ আহম্মদ কাউছার জানান, বিয়ের আগে নিশাত আমার পরিচিত ছিল, বিয়ের পরে মাঝে-মাঝে আমাকে নক করত। খুব একটা কথা হতো না। দুই মাস তিন মাস পর হয়তো একটু কথাবার্তা হতো।
নিশাতের ফোন নাম্বারের কললিস্ট বের করে আমার নাম্বার পেয়েছে, তার জন্য আমাকে সন্দেহ করছে। উনি (হাক্কানী) আমাকে ভুল বুঝছেন। ওনার সঙ্গে কথা হয়েছে, ভুল বোঝাবুঝি শেষও হয়েছে। উনি অভিযোগ করবেন এমন কথা ছিল না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন জানান অভিযোগটি পেয়েছি। সভাপতির সঙ্গে কথা বলে অভিযোগটি যাচাই-বাছাই করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আতিকুর রহমান জানান, অভিযোগটির তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।