চিকিৎসার অভাবে মারা গেল ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত সেই শিশু
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০১৯, ১২:৪৪ পিএম
বাবা-মায়ের কোলে শিশু জাহিদ হাসান। ফাইল ছবি
ফুটফুটে ৪ বছরের শিশু জাহিদ হাসান। ব্রেইন টিউমারের সঙ্গে লড়াই করে চিকিৎসার অভাবে শুক্রবার সন্ধ্যায় মৃত্যু হয়েছে।
তার বাবা ইমরান আলী বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করেও তার পাশে কেউ দাঁড়ায়নি। ফলে তার ভ্যান চালক বাবা এমরান আলী দুশ্চিন্তায় পড়ে।
এক পর্যায়ে যুগান্তরের এ প্রতিনিধির কাছে আসেন ইমরান আলী।
গত ২২ সেপ্টেম্বর যুগান্তরের অনলাইন সংস্করণে ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত জাহিদ হাসান শিরোনামে সংবাদটি ছাপা হয়।
তারপর বিভিন্ন স্থান থেকে কিছু আর্থিক সহযোগিতা পান। কিন্তু প্রয়োজনীয় তুলনায় তা অপ্রতুল। এ টাকা নিয়ে তিনি শিশু জাহিদ হাসানকে ঢাকার আগারগাঁও তালতলা নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেনের কাছে নিয়ে যায়।
সেখানে তার চিকিৎসা দেয়া সম্ভব না বলে জানিয়ে দেন। তারপর তিনি বাড়িতে এসে ভারতে যাওয়ার জন্য ভিসার জন্য আবেদন করেন। তার ভিসার পুলিশ তদন্তও হয়ে গেছে। কিন্তু ভারতে যাওয়া অনুমতি পায়নি।
একদিকে টাকার সংকট অন্যদিকে ছেলেকে নিয়ে বড় সমস্যায় পড়েন তিনি। অবশেষে তার আড়াই শতাংশ জমির ওপর বাড়িটি বিক্রি করে ছেলেকে চিকিৎসা করানোর সিদ্ধান্ত নেই।
জাহিদ হাসান রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভার চকসিংগা গ্রামের হতদরিদ্র ভ্যান চালক একরাম আলীর ছেলে।
এ বিষয়ে জাহিদ হাসানের বাবা ইমরান আলী বলেন, আমার পিতা আলী মুদ্দিনের মৃত্যুর পর আড়াই শতাংশ জমি পেয়েছি। এই জমির উপর দুটি টিনের ছাপরা ঘর তুলে কোন মতে বসবাস করি। আমি ভ্যান চালিয়ে যে আয় হয়, সে টাকা দিয়ে সংসার ও ৩ ছেলে এবং ২ মেয়ের লেখা পড়ার খরচ করতে পারি না। এর মধ্যে ছোট ছেলে জাহিদ হাসানের ব্রেইন টিউমার ধরা পড়ে।
তিনি বলেন, অভাবের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। টাকার অভাবে আমার ছেলে চিকিৎসা করাতে পারিনি। আমি নিরুপায় হয়ে বিভিন্নস্থানে ঘুরেও কোনো কাজ হয়নি।
শনিবার সকাল ১০টায় জানাজা নামাজ শেষে আড়ানী কেন্দ্রীয় গোরস্তানে শিশু জাহিন হাসানকে দাফন করা হবে বলে তিনি জানান।