বশেমুরবিপ্রবির সাবেক ভিসি নাসিরের বাসভবন সিলগালা
যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০১৯, ১২:৩৪ এএম
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবির) সদ্য পদত্যাগ করা ভিসি অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিনের অরক্ষিত বাসভবন সিলগালা করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. নুর উদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আন্দোলন চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ উপাচার্যের বাসভবন অরক্ষিত হয়ে পড়ে। বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পর কর্মকর্তাদের নিয়ে শুক্রবার বেলা ১১টায় এক জরুরি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়ার পর উপাচার্যের বাসভবন সিলগালা করে দেয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে গত ২৮ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) আবদুল্লাহ আল হাসান চৌধুরীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন।
এর আগে শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মধ্যে গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে অসুস্থতার কথা বলে ক্যাম্পাস ছেড়ে যান উপাচার্য।
এ সময় ক্যাম্পাসের ভেতরে অবস্থিত সরকারি বাসভবন থেকে পুলিশের পাহারায় চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আসেন তিনি।
প্রসঙ্গত ভিসি নাসিরের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের সূত্রপাত হয় একটি ফেসবুক পোস্ট নিয়ে ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাংবাদিক ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে বহিষ্কারের মধ্য দিয়ে।
এর মধ্যে জিনিয়া ও ভিসির কথোপকথনের একটি অডিও ভাইরাল হয়, যেখানে ওই ছাত্রীকে বকাঝকা ও হুমকি-ধমকি দিতে শোনা যায় উপাচার্যকে। মেয়েটির বাবাকে নিয়েও তির্যক মন্তব্য করেন তিনি। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে গত বুধবার জিনিয়ার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
পর দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ১৪টি বিষয় মেনে নেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়। এর মধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাকস্বাধীনতার নিশ্চয়তা, ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ ছাড়া বহিষ্কার না করা, অভিভাবকদের ডেকে এনে অপমান না করা এবং ফেসবুক পোস্ট ও কমেন্টকে কেন্দ্র করে কোনো শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার না করার কথা রয়েছে।
তবে এতে সন্তুষ্ট না হয়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে অনশনসহ আন্দোলন অব্যাহত রাখেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা হয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগত ক্যাডারদের হামলায় নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেন ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়। ৫ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
তদন্ত কমিটিতে বিএনপি-জামায়াত ঘরানার একজন শিক্ষককে আহ্বায়ক করায় এ নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা ক্যাম্পাসে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন জানান।
এতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মনোবল চাঙ্গা হয়ে ওঠে। ভিসির অপসারণের এক দফার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার শপথ নেন তারা।