হবিগঞ্জে গ্রেফতারের পর আসামির মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৫:০৪ এএম
হবিগঞ্জে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করছে পুলিশ। ছবি: যুগান্তর
হবিগঞ্জে পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের নাম ফারুক মিয়া।
রোববার দিনগত রাতে গ্রেফতারের পর ফারুক মিয়াকে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়। ফারুক মিয়া শহরের মোহনপুর এলাকার সঞ্জব আলীর ছেলে।
পুলিশ বলছে, দেয়াল টপকানোর সময় আহত হয়ে ওই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
তবে পরিবারের দাবি, তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে পুলিশ। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী জানান, হবিগঞ্জ শহরের মোহনপুর এলাকার ফারুক মিয়া একই এলাকার আবদুল মান্নানের কাছ থেকে সাত মাস আগে ১৫ হাজার টাকা সুদে নেয়। তখন তিনি ব্যাংকের দুটি চেক দেয়। সুদাসলসহ বর্তমানে ওই টাকা ৩৫ হাজারে দাঁড়ায়।
সম্প্রতি ফারুক আসল ১৫ হাজার টাকা দেন। কিন্তু তার পরও আবদুল মান্নান সুদের টাকার জন্য ওই চেক দিয়ে পৃথক দুটি মামলা করেন।
মামলায় তার তিন মাস করে ছয় মাসের সাজা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার দিবাগত রাতে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। রাতেই তাকে আহতাবস্থায় সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থেকে তার মৃত্যু হয়।
পরিবার ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফারুককে পিটিয়ে হত্যা করেছে পুলিশ।
নিহতের ছেলে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শাহরিয়ার মাসুক জানান, বাবার বিরুদ্ধে চেকের মামলা ছাড়া অন্য কোনো মামলা নেই। রাতে পুলিশ বাবাকে সুস্থ অবস্থায় নিজ বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে তাকে নির্যাতন করলে তিনি মারা যান।
তিনি বলেন, আমরা এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
নিহতের ভাই নূরুজ্জামান জানান, রাতে পুলিশ ভাইকে আটক করে নিয়ে যায়। এর পর ফারুককে নির্যাতন করেছে পুলিশ। তিনি গুরুতর আহত হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তখন চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে বিচার দাবি করছি।
হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. মিজানুর রহমান মিজান জানান, আঘাতের চিহ্ন দেখে মনে হচ্ছে- আঘাতের কারণেই মৃত্যু হয়েছে।
সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মিথুন রায় বলেন, নমুনায় বলছে- আঘাতের কারণে মৃত্যু নাও হতে পারে। তবে ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে না।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লা জানান, ময়নাতদন্তে নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া গেলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।