এবার আড়াই টন ‘ভায়াগ্রা’র চালান আটক বেনাপোলে
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০১৯, ০৯:০৯ এএম
আড়াই টন ওজনের ‘ভায়াগ্রা’র একটি চালান
মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে ভারত থেকে আমদানিকৃত ১২ কোটি টাকা মূল্যের আড়াই টন (২৫০০ কেজি) ওজনের ‘ভায়াগ্রা’র একটি চালান আটক করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
বুধবার দুপুরে বেনাপোল কাস্টমস ক্লাবে এক প্রেস কনফারেন্সে কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
কাস্টমস সুত্র জানায়, ঢাকার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মিডফোর্ডের বায়োজিদ এন্টারপ্রাইজ মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে ভারত থেকে আড়াই হাজার কেজি ‘সোডিয়াম স্টার্চ গ্লাইকোলেট’ আমদানি করেন। যার এলসি নং-৯৪৬১৯০১০৩৪২ তারিখ: ২১/০৫/২০১৯। কাস্টমস মেনিফেস্ট নাম্বার- ১৯১৯৩ তারিখ: ২৬/০৫/২০১৯
যার বিল অব এন্ট্রি নম্বার -সি-৩৬৪৯৬, তারিখ: ২৯/০৫/২০১৯।
রাজস্ব পরিশোধ করে বন্দর থেকে খালাশ নেয়ার সময় গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গত জুলাই বিকালে কাস্টমস কর্মকর্তারা পণ্য চালানটি আটক করে। পরে কাস্টম হাউসের নিজস্ব অত্যাধুনিক ল্যাবে পরীক্ষা শেষে ভায়াগ্রার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
পরবর্তীতে অধিকতর নিশ্চিত হওয়ার জন্য অত্যন্ত স্পর্শকাতর পণ্য বিবেচনায় পণ্যের নমুনা বুয়েট, বিসিএসআইআর, খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ও ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরে পাঠানো হয়। দীর্ঘ ২ মাস পর বুয়েট ও বিসিএসআই আর পরীক্ষা শেষে পন্য চালানটি ‘সোডিয়াম স্টার্চ গ্লাইকোলেট’ বলে প্রতিবেদন দায়ের করে।
পরবর্তীতে কাস্টমস কতৃপক্ষ বিষয়টি আবারও ঢাকার ওষুধ প্রশাসন ও কুয়েটের পরীক্ষার জন্য নমুনা প্রেরন করে। সেখানে পরীক্ষা করে ৯৯.০৮ % ভায়াগ্রা পাওয়া গেছে বলে পরীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদন প্রাপ্তির পরেই অপঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত হয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ব কাস্টমস সংস্থার ১৮২ সদস্য দেশকে মাদক, বিস্ফোরক ও এ ধরনের ক্ষতিকর পণ্য চোরাচালানের বিষয়ে দীর্ঘদিন সর্তকবার্তা দিলেও বাংলাদেশেই বিশ্বের প্রথম এ ধরনের বড় চালান আটক করা হল। বিষয়টি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে জানানো হলে তারা ভবিষ্যতে আরও সতকর্তার সাথে কাজ করার নির্দেশনা দেন বেনাপোল কাস্টমস হাউস কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরীকে।
পণ্য চালানটি টেস্টে পাঠানোর আগেই ছেড়ে দেয়ার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরীকে জীবননাশেরও হুমকি দেয়া হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরী জানান, এ ঘটনায় যুগ্ম-কমিশনার শহীদুল ইসলামকে প্রধান করে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিতে ৪৯ বিজিবির কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল সেলিম রেজাকে অন্তর্ভক্ত করা হয়।
তিনি বলেন, ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিস্ট সিএন্ডএফ এজেন্ট সাইনী শিপিং সার্ভিসেস এর লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করা হয়। তদন্ত কমিটি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন। রিপোর্ট পাওয়ার পরই দোষীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা করা হবে বলে কাস্টমস সুত্র জানান।
উল্লেখ্য, জুলাই মাসেও ২০০ কেজির ভায়াগ্রার চালান আটক করেছিল বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।