নেপথ্যে পরকীয়া
ছেলেধরা সন্দেহে আটকদের ছিল খুনের পরিকল্পনা
রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০১৯, ০৫:৪৪ এএম
রাজশাহীতে ছেলেধরা সন্দেহে জনগণ দুইজনকে আটক করে পুলিশে দেয়ার পর জানা গেল অন্য কাহিনী। তারা মূলত বাগেরহাটের একজনকে খুনের জন্য রাজশাহীতে নিয়ে এসেছিল এবং খুনের পরিকল্পনাকারী ভুক্তভোগীরই স্ত্রী।
পরকীয়া সম্পর্কের ‘বাধা’ হিসেবে স্বামীকে মেরে ছেলেধরার শিকার বলে চালানোর পরিকল্পনা ছিল তাদের। এ ঘটনায় জড়িত চার তরুণকে আটক করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে নিজ কার্যালয়ে রোববার দুপুরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহিদুল্লাহ।
তিনি জানান, আটকরা হলেন- বাগেরহাটের মোল্লাহাট থানার গোড়ফা গ্রামের রাসেল শেখ, তার তিন বন্ধু নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন গ্রামের হাসেম আলীর ছেলে মো. সজীব ও ফতুল্লার আলীগঞ্জ এলাকার মো. পারভেজ ওরফে মোশাররফ হোসেনের ছেলে মিরাজ হোসেন এবং পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার নলুয়াবাগী গ্রামের মজিব মৃধার ছেলে মো. কাওসার।
শহিদুল্লাহ বলেন, বাগেরহাটের গোড়ফা গ্রামের কাঞ্চু শিকদার ওরফে কাঞ্চনের স্ত্রী সৌদি প্রবাসী তানিয়া খাতুন। তার সঙ্গে রাসেল শেখের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে।
সম্প্রতি তানিয়া ও রাসেল মিলে কাঞ্চনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তারা রাজশাহীতে কাঞ্চনকে গলা কেটে হত্যার পর এটি ছেলেধরাদের কাজ বলে চালিয়ে দেয়ার ছক কষেন।
পরিকল্পনা মতো পাসপোর্ট করানোর নাম করে তিন বন্ধুর সহায়তায় কাঞ্চনকে রাজশাহী নিয়ে আসেন রাসেল। গত শনিবার রাত ৮টার দিকে কাঞ্চনকে চারঘাট উপজেলার বাসুদেবপুর ফুলতলা বাজারে নিয়ে যান মিরাজ ও কাওসার।
সেখানে কাঞ্চনের মনে সন্দেহ জাগলে তিনি চিৎকার শুরু করেন ও দৌড় দেন। এ সময় স্থানীয়রা ছেলেধরা সন্দেহে মিরাজ ও কাওসারকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। পুলিশ তাদের কাছ থেকে ছুরি ও চেতনানাশক ওষুধ জব্দ করেছে।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা মূল ঘটনা খুলে বলেন। কাঞ্চনকে অচেতন করে তার মাথা কেটে পরিকল্পনা ছিল বলে জানান। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওইদিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী রেলস্টেশন থেকে রাসেল ও সজীবকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
এসপি বলেন, আটক চারজনের মধ্যে মোবাইল ফোনের মেসেজ থেকেও খুনের পরিকল্পনার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। প্রবাসী তানিয়া তার স্বামীকে হত্যার জন্য ২০ হাজার টাকাও পাঠিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে চারঘাট থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর ভয়ে বাগেরহাট চলে যান কাঞ্চন। তাকে থানায় আসতে বলা হয়েছে।
তার আসতে দেরি হওয়ায় পুলিশের পক্ষ থেকেই আটক চারজন ও প্রবাসী তানিয়ার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। চারঘাট থানার উপ-পরিদর্শক বজলুর রহমান মামলার বাদী হয়ে মামলার পর সোমবার (আজ) আটকদের আদালতে তোলা হবে।