
প্রিন্ট: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩৬ এএম
‘ডিজিটাল সিলেট সিটি’ প্রকল্পের উদ্বোধনে উপেক্ষিত মেয়র!

সিলেট ব্যুরো
প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০১৯, ০২:৪৬ পিএম

সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। ছবি: যুগান্তর
আরও পড়ুন
দেশের প্রথম ডিজিটাল নগরী গড়ে তুলতে শনিবার ‘ডিজিটাল সিলেট সিটি’ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা। দাওয়াত না পাওয়ায় এতে উপস্থিত ছিলেন না সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
এ আয়োজনে তাকে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি বলে দাবি করেছেন বিএনপি থেকে নির্বাচিত এ মেয়র।
শনিবার বিকালে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিলেটের সরকারি বিভিন্ন দফতরের প্রধান, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ জনপ্রতিনিধি ও সুধীজনরা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, প্রধান তথ্য কমিশনার মর্তুজা আহমেদ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
তবে নগরীকে ডিজিটালাইজেশনের এই প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে খোদ সিটি মেয়র অনুপস্থিত থাকায় নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদুল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহিন যুগান্তরকে বলেন, সিলেট সিটিকে ডিজিটালাইজেশনের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, সেটি অবশ্যই আনন্দের। কিন্তু সেটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সিলেট সিটির স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি হিসেবে মেয়রের ভূমিকা থাকা প্রয়োজন।
এসব প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেই যদি মেয়র উপেক্ষিত থাকেন, তা হলে ভূমিকা রাখবেন কীভাবে? জনগণের ভোটে নির্বাচিত মেয়রের ভূমিকা ছাড়া প্রকল্প সঠিকভাবে বাস্তবায়নও সম্ভব বলে মনে হচ্ছে না।
আমরা আশা করব ভবিষ্যতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ রকম দুঃখজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি করবেন না।
এ ছাড়া জনগণের কল্যাণের প্রকল্পে তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ না দেয়া জনগণকে অবজ্ঞা করার শামিল।
এ ব্যাপারে সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সিলেট সিটিকে ডিজিটাল করার জন্য অনুষ্ঠান হয়েছে শুনেছি। কিন্তু আমাকে এতে আমন্ত্রণ দেয়া হয়নি। জেলা প্রশাসন বা যারা আয়োজক তাদের পক্ষ থেকে আমাকে কোনো দাওয়াতও দেয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, এখন কেন দাওয়াত দেয়া হয়নি আমি জানি না। এই সিটির নির্বাচিত মেয়র আমি। সিটি ডিজিটাল করা হচ্ছে অথচ ওই অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয় না, এটি খুবই দুঃখজনক।
শনিবার বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের বাস্তবায়নাধীন ‘ডিজিটাল সিলেট সিটি’ প্রকল্পের আওতায় স্থাপিত ‘পাবলিক ওয়াইফাই জোন’ ও ‘আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স সংবলিত আইপি ক্যামেরা বেজড সার্ভিলেন্স সিস্টেম’ এবং তথ্য কমিশনের উদ্যোগে বাস্তবায়িত ‘তথ্য অধিকার (আরটিআই) অনলাইন ট্র্যাকিং সিস্টেম’-এর পাইলটিং কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
প্রকল্পের আওতায় দেশে প্রথমবারের মতো ফেস রিকগনিশন ও যানবাহনের নাম্বার প্লেট চিহ্নিতকরণ আইপি ক্যামেরা বসেছে সিলেট নগরীতে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এ প্রকল্পে সিলেট নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১১০টি অত্যাধুনিক আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স সংবলিত আইপি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। স্থাপনকৃত এসব আইপি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণের জন্য সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানায় মনিটরিং রুম স্থাপন করা হয়েছে।
এ সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকবে সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি)।
এ ক্ষেত্রে অপরাধে জড়িত কোনো অপরাধী অথবা কালো তালিকাভুক্ত যানবাহনের নাম্বার যদি আইপি ক্যামেরার আওতাভুক্ত কোনো এলাকায় ধরা পড়ে, তবে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে অটোমেটিক সিগন্যাল বেজে উঠবে, যা অপরাধীকে শনাক্ত করতে এসএমপিকে দ্রুত সহায়তা করবে।
তা ছাড়া পুলিশ চাইলে যেকোনো অপরাধীর ছবি অথবা গাড়ির নম্বর দিয়ে আইপি ক্যামেরার সার্ভারে অনুসন্ধান (সার্চ) করে দ্রুত অপরাধী শনাক্ত করতে পারবে।
এই অত্যাধুনিক সিস্টেমটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করবে।
এ ছাড়া এই প্রকল্পের আওতায় সিলেট নগরের ৬২টি স্থানে ১২৬ এক্সেস পয়েন্টের মাধ্যমে ফ্রি ইন্টারনেট সেবা প্রদান করা হবে।