
প্রিন্ট: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩৫ এএম
রাজবাড়ীতে চিকিৎসার নামে শিশুর চোখ নষ্ট করল দোকানী

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০১৯, ১১:৪৩ পিএম

মায়ের সঙ্গে শিশু সোনিয়া
আরও পড়ুন
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে সাড়ে ৩ বছর বয়সী ছানি পড়া শিশুর একটি চোখ চিরতরে নষ্ট করে ফেলেছে রাজবাড়ী শহরের পাবলিক হেলথ এলাকার মাসুদ মাহবুব (৪০) নামের একজন স্টুডিও দোকানী।
এ ঘটনায় ওই শিশুর দাদা বাদী হয়ে রাজবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযুক্ত মাসুদ মাহবুবকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে।
চোখ হারানো শিশুটির নাম সোনিয়া। সে রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর তালুকদারপাড়া গ্রামের কৃষি শ্রমিক রফিক সরদারের মেয়ে।
সোনিয়ার রিকশাচালক দাদা খোরশেদ সরদার জানান, তার নাতনি সোনিয়ার ডান চোখে ছানি পড়ে। তিনি ছানি রোগের চিকিৎসকের খোঁজ করতে থাকেন। লোক মারফত মাসুদ মাহবুবের কথা জানতে পেরে গত ১০ এপ্রিল সকালে পুত্রবধূ রুবিয়া বেগম ও নাতনি সোনিয়াকে নিয়ে পাবলিক হেলথ এলাকায় মাসুদ মাহবুবের ‘সিঙ্গাপুর স্টুডিও’ নামক দোকানে যান।
তিনি বলেন, মাসুদ মাহবুব নিজেকে হোমিও চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে প্রকাশ করে, ‘কোনো সমস্যা নাই। ১৮ মাসের চিকিৎসায় সোনিয়ার চোখ পুরোপুরি ভালো হয়ে যাবে।’
খোরশেদ সরদার জানান, এরপর মাসুদ মাহবুব তার কাছ থেকে ১ হাজার টাকা গ্রহণ করে এবং প্রতি সপ্তাহে ১শ’ টাকা করে নিয়ে সোনিয়ার ছানি পড়া চোখের চিকিৎসা করার অঙ্গীকার করে। সে অনুযায়ী মাসুদ মাহবুব সোনিয়ার চোখের চিকিৎসা করে।
তিনি জানান, মাসুদ মাহবুবের দেয়া ওষুধ ব্যবহার করতে থাকলে সোনিয়ার চোখের অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। মাসখানেক পূর্বে তার চোখ একেবারে বাইরে (কোটরের) বের হয়ে আসে।
খোরশেদ সরদার জানান, বিষয়টি মাসুদ মাহবুবকে জানালে সে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাকে ঢাকায় নিতে বলে। কোনো চিকিৎসক না হয়েও ভুল ওষুধ দিয়ে তার নাতনির চোখের অপচিকিৎসা করে চোখটি চিরতরে নষ্ট করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে তার নাতনিকে ঢাকার ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করানো হচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যেই অপারেশন করে চোখটি ফেলে দিতে বলেন তারা।
রাজবাড়ী থানার ওসি স্বজন কুমার মজুমদার যুগান্তরকে জানান, ‘ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। অপচিকিৎসায় শিশুটির চোখ চিরতরে নষ্ট হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে শিশুটির দাদার দাখিলকৃত এজাহারটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করে মাসুদ মাহবুবকে গ্রেফতার করে সোমবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তার যাতে উপযুক্ত শাস্তি হয় সে জন্য যথাযথভাবে মামলাটির তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হবে।’