উদ্বোধনের ১ বছর আগেই দেবে যাচ্ছে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০১৯, ০৪:৪২ এএম
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু ৭০ কিলোমিটার চার লেন মহাসড়কটি উদ্বোধনের এক বছর আগেই দেবে যেতে শুরু করেছে। আবার সড়কের মাঝখানে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও দেড়-দুই ইঞ্চি পর্যন্ত দেবে যাচ্ছে পিচ।
এলেঙ্গা-টাঙ্গাইলের পাঁচ-সাত কিলোমিটার অংশেরও বেশি দেবে গেছে। সড়ক দেবে যাওয়ার এ সমস্যাকে প্রকৌশলীদের ভাষায় বলা হয় ‘রাটিং’। আগামী বছরের জুনের মধ্যে উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে মহাসড়কটি।
সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়কটি নির্মাণ করছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতর। ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কের প্রতি কিলোমিটারের নির্মাণ ব্যয় ৫৮ কোটি টাকারও বেশি।
টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়কটি চার লেনে নির্মাণ করছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতর।
৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কের প্রতি কিলোমিটারের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৮ কোটি টাকারও বেশি। চার লেনের মহাসড়কটি ২০২০ সালের জুনের মধ্যে উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের পর থেকে ঢাকার দিকে (ডান পাশে) প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়ক দেবে গেছে।
এ ছাড়া সদর উপজেলার রসুলপুর সিএনজি পাম্পের সামনে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আবার উত্তরবঙ্গের দিকে (ডান পাশে) এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত চার লেনের মহাসড়ক দেবে গেছে। এদিকে দেবে যাওয়া কয়েকটি স্থানে নতুন করে কার্পেটিং করে মেরামত করা হয়েছে, তার চিহ্ন এখনও রয়েছে।
সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় সড়ক গবেষণাগারের প্রকৌশলীরা বলছেন, পিচের জন্য পাথর-বিটুমিনের যে মিশ্রণ তৈরি করা হয়, সেটি ঠিকমতো না হলে রাটিং বা সড়ক দেবে যেতে পারে। সড়ক দেবে যাওয়ার আরেকটি কারণ যানবাহনের ‘ওভারলোড’।
এর বাইরে দুর্বল নকশা বা দুর্বল নির্মাণকাজের কারণেও সড়ক দেবে যেতে পারে। একই সমস্যায় পড়েছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কও। এ কারণে উদ্বোধনের এক বছরের মাথায় সড়কটিতে হাজার কোটি টাকার বেশি সংস্কারকাজের প্রয়োজন পড়ে।
উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকাগামী বিনিময় পরিবহনের চালক মিরাজ জানান, মহাসড়কটির এক পাশে দেবে যাওয়া খুবই দুঃখজনক। অথচ আগামী বছরে এটি উদ্বোধনের কথা। ঠিকমতো ভিটুমিন দিয়ে কাজ করলে হয়তো মহাসড়কটি আরও ভালো হতো।
চার লেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক অমিত দেবনাথ জানান, মহাসড়কে যেসব স্থানে দেবে গেছে, সে স্থানগুলো থেকে কার্পেটিং উঠিয়ে আবার নতুন করে করা হবে। আর মহাড়কে কোনো নিম্নমানের কাজ হয়নি। দেবে যাওয়াটা ওভারলোড গাড়ি এবং গাড়িগুলো একপাশ দিয়ে চলাচলের কারণেই হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্পটি ২০১৩ সালে একনেকসভায় অনুমোদিত হয়ে কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে।
চার প্যাকেজে কাজ হচ্ছে। এর মধ্যে প্যাকেজ-৪ নম্বর পড়েছে এলেঙ্গা-টাঙ্গাইলের ১০ কিলোমিটার। দক্ষিণ কোরিয়ার জিডিসিএলের এ অংশের নির্মাণকাজ করছে ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডিয়েনকো লিমিটেড। কাজের চুক্তিমূল্য ৩৫৬ কোটি টাকা।
দ্বিতীয় প্যাকেজে টাঙ্গাইল থেকে কালিয়াকৈর বাইপাস ইন্টারসেকশন পর্যন্ত আরও ১৯ কিলোমিটার নির্মাণ করছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড ও মালয়েশিয়ার এইচসিএম ইঞ্জিনিয়ারিং।
তৃতীয় প্যাকেজে দুল্লামারী রোড থেকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত ২২ দশমিক ৪০ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নয়ন করছে দক্ষিণ কোরিয়ার সামহোয়ান ও বাংলাদেশের মীর আখতার।