Logo
Logo
×

সারাদেশ

জিনের বাদশার মূর্তিতে নিঃস্ব কুলসুমআরার পরিবার

Icon

মীরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০১৯, ০৬:১৫ পিএম

জিনের বাদশার মূর্তিতে নিঃস্ব কুলসুমআরার পরিবার

জিনের বাদশার কাছ থেকে পাওয়া মূর্তি

‘আমি সোলেমান বাদশা বলছি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বি। ছেলেমেয়েদের নামাজ পড়তে বলবি। সকালে কাউকে না জানিয়ে এতিমদের জন্য আমার বিকাশ নম্বরে ১১০০ টাকা পাঠাবি। এখন ১১০০ টাকা পাঠাও কোরআন শরীফ ও জায়নামাজ কেনার জন্য।’

বুধবার ভোরে মীরসরাইয়ের বারইয়ারহাট পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের জামালপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন মিস্ত্রি বাড়ির কুলসুমআরা বেগমকে ফোন করে জিনের বাদশা এভাবে টাকা চায়।

প্রথমে ১১০০ টাকা পাঠানোর পর কয়েক দফায় প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা ও ১০ ভরি স্বর্ণ নিয়ে যায় কুলসুমার কাছ থেকে। এখন সব হারিয়ে প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছে কুলসুমআরার পরিবার।

কুলসুমআরা স্বামী পরিত্যক্তা। ছেলে মেয়েদের নিয়ে তিনি বাবার বাড়িতে বসবাস করতেন বলে স্থানীয় সূত্র জানায়।

জানা গেছে, বুধবার ভোরে একটি মোবাইল নম্বর থেকে জিনের বাদশা পরিচয়ে ভুক্তভোগী কুলসুমআরা বেগমকে এক ব্যক্তি ফোন দেন। এ সময় ছেলে-মেয়েদের ৫ ওয়াক্ত নামাজ ও এতিমদের খাওয়ার জন্য ১১০০ টাকা পাঠাতে বলে। তিনি কিছু না বুঝে ১১০০ টাকা পাঠান। এ সময় এক ব্যক্তি এসে তাকে একটি স্বর্ণের মূর্তি (আসলে পিতলের) দেয়।

মূর্তির ভেতরে একটি কাগজ ছিল। মূর্তিটি বাড়িতে আনার পর ওই জিনের বাদশা আবার অন্য একটি নম্বর থেকে ফোন করে। ফোনে তিনি জানান, মূর্তিটির ভেতরে একটি কাগজ আছে। কাগজটি ছেলেমেয়ের নাকে নিয়ে ঘ্রাণ নিতে বলেন।

কাগজ থেকে ছেলে-মেয়েরা ঘ্রাণ নেয়ার পর তারা অন্য রকম আচরণ করতে থাকে। এ সময় ওই জিনের বাদশা অন্য একটি নম্বর থেকে ফোন করে ছেলে মেয়েদের বাঁচাতে অনেক টাকা দিতে হবে বলে জানায়।

পরে কুলসুমআরা বারইয়ারহাট শেফা হাসপাতালের সামনে গিয়ে ১০ ভরি স্বর্ণ এক ব্যক্তির হাতে তুলে দেন। পরে কয়েক দফায় বিকাশের মাধ্যমে জিনের বাদশাকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা দেয়া হয়। এখন সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন কুলসুমআরা বেগম।

কুলসুমআরা বেগমের ছেলে আবদুল লতিফ জানান, তিনি প্রথমে মাকে টাকা পাঠাতে বারণ করেছেন। কিন্তু ওই পিতলের মূর্তিটি ঘরে আনার পর তিনি নিজে বিকাশে টাকা পাঠাতে থাকেন। তার মনে এক ধরনের পরিবর্তন দেখা দেয়।

কুলসুমআরার বোনের ছেলে ইকবাল হোসেন বলেন, সর্বশেষ আমার কাছ থেকে ৬৩ হাজার টাকা ধার নেয় আমার খালা। হঠাৎ এত টাকা কেন নিচ্ছেন? জানতে চাইলে খালা বলেন, জরুরি কাজে প্রয়োজন। আমি মনে করেছিলাম আমার খালাতো ভাই লতিফের চাকরির জন্য হয়তো টাকা প্রয়োজন।

ইদ্রিস নামে এক ব্যক্তি জানান, সব কিছু হারিয়ে বর্তমানে কুলসুমআরার পরিবারটি নিঃস্ব হয়ে গেছে।

জোরারগঞ্জ থানার এসআই আবেদ আলী জানান, জিনের বাদশার মাধ্যমে প্রতারণার বিষয়ে কেউ এখনো থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম