
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বালিয়াঘাট বিওপি সংলগ্ন এলাকা থেকে ছবিটি তুলেছেন যুগান্তরের তাহিরপুরের ষ্টাফ রিপোর্টার হাবিব সরোয়ার আজাদ।
কাল বৈশাখীর বিদায়লগ্নে রক্তলাল কৃষ্ণচূড়া ভালোবাসায় রাঙিয়ে রেখেছে ২৮ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন বিজিবির সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের সীমান্তনদী পাটলাই তীরবর্তী বালিয়াঘাট বিওপির আশে পাশের গোটা এলাকাকে।
পাটলাই নদীর তীরবর্তী বিওপির চারপাশ জুড়ে গ্রামীণ আধা পাঁকা সড়ক জুড়ে ছড়িয়ে আছে কৃষ্ণচূড়ার পাপড়ি, বিওপি এবং বিওপির চারপাশে উঁচু ডালে থোকায় থোকায় মেলে ধরেছে কৃষ্ণচূড়ার রঙিন রূপ।
নগর জীবনের কর্মব্যস্তায় হয়তো শিরদাঁড়া উঁচু করে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কৃষ্ণচূড়াকে পাশ কাটিয়ে গেছেন অনেকে। কিন্তু এক পলক দৃষ্টিতে যারা দেখেছেন রক্ত রাঙা একঝাক কৃষ্ণচূড়া ফুটে উঠতে; তারা কেবলই হয়েছেন পুলকিত।
এ সময়টাতে গ্রীষ্মের প্রকৃতি চোখ ধাঁধানো টুকটুকে সিঁদুর লাল কৃষ্ণচূড়ায় সাঁজে৷ দূর থেকে দেখলে মনে হয় বৈশাখের চামড়া পোড়া রৌদ্রের সবটুকু গায়ে জড়িয়ে নিয়েছে এ রক্তলাল পুষ্পরাজি।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন ‘গন্ধে উদাস হওয়ার মতো উড়ে/ তোমার উত্তরী কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জরি...’।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা- ‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরী কর্নে—আমি ভূবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্নে’ এমন পঙতি দিয়ে বোঝা যায় কতটা সৌন্দর্য কৃষ্ণচূড়া প্রকৃতিকে দান করেছে।
উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মতে কৃষ্ণচূড়া ফুলের রং উজ্জ্বল লাল। পত্র ঝরা বৃক্ষ, শীতে গাছের সব পাতা ঝরে যায়। বাংলাদেশে বসন্ত কালে এ ফুল ফোটে। ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়ি যুক্ত। পাপড়িগুলো প্রায় ৮ সেন্টিমিটারের মত লম্বা হতে পারে।
কৃষ্ণচূড়া গাছের লাল, কমলা, হলুদ ফুল এবং উজ্জল সবুজ পাতা একে অন্যরকম দৃষ্টিনন্দন করে তোলে। কৃষ্ণচূড়া মাদাগাস্কারের শুষ্ক পত্রঝরা বৃক্ষের জঙ্গলে পাওয়া যায়। যদিও জঙ্গলে এটি বিলুপ্ত প্রায়, বিভিন্ন বিশ্বের অঞ্চলে এটি জন্মানো সম্ভব হয়েছে।
সৌন্দর্য বর্ধক গুণ ছাড়াও, এই গাছ উষ্ণ আবহাওয়ায় ছায়া দিতে বিশেষভাবে উপযুক্ত। কৃষ্ণচূড়া উদ্ভিদ উচ্চতায় কম (সর্বোচ্চ ১২ মিটার) হলেও শাকা-পল্লবে এটি বেশি অঞ্চল ব্যাপী ছড়ায়। শুষ্ক অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে কৃষ্ণচূড়ার পাতা ঝরে গেলেও, নাতিষীতোষ্ণ অঞ্চলে এটি চিরসবুজ।