Logo
Logo
×

সারাদেশ

লাঙ্গলবন্দে স্নানোৎসবে পুণ্যার্থীদের ঢল

Icon

বন্দর (নারায়ণগঞ্জ) নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০১৯, ০৬:৩০ পিএম

লাঙ্গলবন্দে স্নানোৎসবে পুণ্যার্থীদের ঢল

লাঙ্গলবন্দে স্নানোৎসবে পুণ্যার্থীদের ঢল

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের লাঙ্গলবন্দে আদি ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে শুক্রবার শুরু হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অষ্টমী স্নানোৎসব। দুই দিনব্যাপী স্নানোৎসবের প্রথম দিনে শুক্রবার সকাল ১১টা ৪৮ সেকেন্ডে স্নানের লগ্ন শুরু হয়।

তিথি অনুযায়ী শনিবার সকাল ৮টা ৫৮ মিনিট ১৪ সেকেন্ডে লগ্ন শেষ হবে। সেই সঙ্গে সমাপ্তি ঘটবে দুই দিনব্যাপী অষ্টমী স্নানোৎসবের।

শুক্রবার লগ্ন শুরুর পর নদে পুণ্যার্থীর ঢল নামে। জগতের যাবতীয় সংকীর্ণতা ও পঙ্কিলতার আবরণে ঘেরা জীবন থেকে পাপমুক্তির বাসনায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তীর্থস্থান লাঙ্গলবন্দে আসেন।

‘হে মহা ভাগ ব্রহ্মপুত্র, হে লৌহিত্য আমার পাপ হরণ কর’- এ মন্ত্র উচ্চারণ করে পাপ মোচনের আশায় লাখ লাখ পুণ্যার্থী আদি ব্রহ্মপুত্র নদে স্নানে অংশ নেন। এ সময় স্নানমন্ত্র পাঠ করে নিজ নিজ বাসনা অনুযায়ী ফুল, বেলপাতা, ধান, দূর্বা, হরিতকি, ডাব, আম পাতা ইত্যাদি পিতৃকুলের উদ্দেশ্যে নদের জলে তর্পণ করেন পুণ্যার্থীরা।

স্নান উৎসবকে কেন্দ্র করে লাঙ্গলবন্দকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার কারণে কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতে হয় স্নানার্থীদের। তীর্থস্থান থেকে বেশকিছু দূরে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় পায়ে হেঁটে পুণ্যার্থীদের স্নানঘাটে পৌঁছতে হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়ছেন বৃদ্ধরা।

তবে লাঙ্গলবন্দ স্নান উদযাপন পরিষদের নেতারা নিরাপত্তাব্যবস্থায় সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, প্রচুর স্নানার্থী আসছে, তাতে কিছুটা দুর্ভোগ মেনে নিতেই হবে। ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এবার ভারত, শ্রীলংকা, নেপাল থেকেও প্রচুর দর্শনার্থী লাঙ্গলবন্দ স্নানে অংশ নিচ্ছেন বলে স্নান উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আসা তীর্থযাত্রী দিপক কুমার (৫৫) জানান, ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করলে পাপ মোচন হয়, ব্রহ্মার কৃপা লাভ করা যায়। তাই তিনি প্রতি বছর স্নানোৎসবে অংশ নেন। তিনি নদীপথে ট্রলার নিয়ে পাড়া প্রতিবেশীদের নিয়ে সপরিবারে লাঙ্গলবন্দে এসেছেন বলে জানান।
 
বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিন্টু বেপারী জানান, সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে চলছে স্নানোৎসব। অষ্টমী স্নানকে কেন্দ্র করে নেয়া হয়েছে ৩ স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা। পুলিশ, র‌্যাব ও আনসারের দেড় সহস্রাধিক সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। বসানো হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার ও নিরাপত্তা চেকপোস্ট। সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে তীর্থস্থানের ৩ কিলোমিটার এলাকা। ২টি অস্থায়ী হাসপাতালসহ বেশ কটি মেডিকেল টিম স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত আছে।

সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম, সাধু নাগ মহাশয় আশ্রম, ১নং ঢাকেশ্বরী টিন লাইন ও বনগুন মিলন সংঘ, নিপসম, সেবা সংঘ, হিন্দু কল্যাণ পরিষদসহ অর্ধশত স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান দর্শনার্থীদের খাবার সরবরাহ ও অন্যান্য সেবা প্রদান করছে।

অষ্টমী স্নান উপলক্ষে লাঙ্গলবন্দে দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসেছে লোকজ মেলা। মেলায় আবহমান বাংলার চিরায়ত রূপ ফুটে উঠেছে।

শুক্রবার বিকালে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও ব্যবসায়ী নেতা একেএম সেলিম ওসমান।

সরোজ কুমার সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথ, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া, পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ, স্নান উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাপস কুমার পাল, বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এমএ রশিদ, গোপীনাথ প্রমুখ।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম