বাঁচার আকুতি নিয়ে হাটহাজারীর লোকালয়ে মায়া হরিণ!
হাটহাজারী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০১৯, ০৫:২১ এএম
সেই মায়া হরিণ। ছবি: যুগান্তর
ধরিত্রীতে অসংখ্য জীব রয়েছে। সব জীবের সম্মেলনই জীববৈচিত্র্য, মানুষও এর বাইরে নয়। তবে গ্রামীণ বিভিন্ন পেশার মানুষ ও তাদের কর্মসংস্থানের সঙ্গে জীববৈচিত্র্যের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। জীববৈচিত্র্য ও মানব পরস্পরের পরিপূরক হওয়া সত্ত্বেও প্রকৃতির প্রতি মানুষের বিরূপ আচরণ থেমে নেই।
মানুষ নামে সভ্য জীব তার অবস্থান সুদৃঢ় করতে প্রতিনিয়ত উজাড় করছে পরিবেশের অন্যতম উপাদান বনজঙ্গল। এতে করে নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্যের আবাসস্থল ও রসদ।
মানুষের এমন নৃশংসতা ও বৈরী পরিবেশের কারণে জীববৈচিত্র্য বিপন্ন দশায় পতিত হয়েছে। ফলে কখনও বনজঙ্গলের প্রাণিকুল প্রাণে বাঁচতে খাবারের সন্ধানে, আবার কখনও মানুষের নৃশংসতার শিকার থেকে বাঁচাতে লোকালয়ে নেমে আসছে।
রোববার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) এলাকার কোনো এক পাহাড় থেকে শিকারির তাড়া খেয়ে বাঁচার আকুতি নিয়ে একটি মায়া হরিণ হাটহাজারী উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের হেলাল চৌধুরীপাড়া এলাকার এমকে রহমানিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন একটি গরুর খামারে অবস্থান নেয়।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হরিণটিকে দেখতে পেয়ে স্থানীয় জনসাধারণ ৯৯৯ নম্বরে কল করেন। এর পর পুলিশ এসে হরিণটি উদ্ধার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিয়ে আসে।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন যুগান্তরকে বলেন, হয়তো খাবারের সন্ধান, নয়তো চবির কোনো এক পাহাড় থেকে মায়া হরিণটি শিকারির তাড়া খেয়ে লোকালয়ে চলে এসেছে।
হরিণটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আনন্দের বিষয় হচ্ছে স্থানীয় লোকজনের দূরদর্শিতার কারণে হরিণটি প্রাণে বেঁচে গেছে।
তিনি আরও জানান, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা থেকে একটি টিম এসে হরিণটিকে চিকিৎসা সম্পন্ন করেছে। এর পর হরিণটি চিড়িয়াখানায় হস্তান্তর করা হবে।
তবে পাহাড় ও জঙ্গলে খাবার সংকটের কারণে বনজঙ্গলের প্রাণিকুল হরিণ, অজগর, মেছোবাঘ ইত্যাদি প্রাণে বাঁচতে খাবারের সন্ধানে কখনও লোকালয়ে নেমে এলে তাদের আঘাত না করে উপজেলা প্রশাসন, বন বিভাগ বা চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে খবর দেয়ার জন্য তিনি অনুরোধ জানান।