কুষ্টিয়ায় গাছে বেঁধে চুল কেটে গৃহবধূকে নির্যাতন
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০১৯, ০৭:২২ পিএম
![কুষ্টিয়ায় গাছে বেঁধে চুল কেটে গৃহবধূকে নির্যাতন](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2019/03/28/image-160419-1553779606.jpg)
গৃহবধূকে গাছের সঙ্গে বেঁধে চুল কেটে নির্যাতন
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় এক গৃহবধূকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। কেটে দেয়া হয়েছে ওই নারীর মাথার চুল।
ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন নির্যাতিতার চিকিৎসক উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রকিউর রহমান নির্যাতনের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ওই গৃহবধূকে সুস্থ হতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে।
রোববার ওই গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের এই বর্বরতার ঘটনায় থানায় মামলা হলেও এখনও জড়িত কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। এতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
পুলিশ বলছে, দ্রুতই আসামিদের গ্রেফতার করা হবে। বর্বর এই নির্যাতনের ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে কুষ্টিয়াজুড়ে।
তালাকপ্রাপ্তা ওই নারী দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন আসলাম হোসেনকে।
ওই গৃহবধূ জানেন না, কী তার অপরাধ। রোববার বিনা অপরাধে ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে এনে কাপড় খুলে করে চরম আপত্তিকর অবস্থায় গাছের সঙ্গে বেঁধে মাথার চুল কেটে নির্যাতন করার অভিযোগ করেন শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের বিরুদ্ধে।
প্রকাশ্যে এমন বর্বর নির্যাতনের দৃশ্য দেখে স্থানীয়রা ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। নির্যাতনের ক্ষত আর মানসিক যন্ত্রণার বিবরণ দিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন চিকিৎসাধীন গৃহবধূ। তিনি এই বর্বর নির্যাতনের কথা জানিয়ে জড়িতদের গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।
এ ঘটনায় জড়িত ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে ভেড়ামারা থানায় মামলা করেছেন ওই গৃহবধূ। কিন্তু ঘটনার ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার না করায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
ঘটনার দিন প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ দিয়ে স্থানীয় প্রতিবেশী আলেজান নেছা জানান, রোববার বিকালের দিকে হঠাৎ শোরগোল শুনে বাইরে এসে দেখি, ময়নাকে তার স্বামী আসলামের প্রথম স্ত্রী সাবিনাসহ ৫-৬ জন মিলে টেনেহিঁচড়ে ঘর থেকে বের করে আনছে। ময়নার মাথার চুল কেটে, গায়ের পোশাক খুলে শজনে গাছের সঙ্গে ওড়না ও রশি দিয়ে বাঁধে। তারপর বেদম মারধর করে।
নির্যাতিতার স্বামী আসলাম হোসেন বলেন, মাত্র দেড় মাস আগে তালাকপ্রাপ্তা ময়নার সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামী-স্ত্রী হিসেবে তাদের বিয়ে হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রথম স্ত্রী সাবিনা আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে করে আমাকেও মারধর করে এবং ময়নাকেও মারে।
তিনি বলেন, ঘটনার দিন নিজ বাড়িতে বসে ময়নার সঙ্গে কথাবার্তা বলছিলাম। এ সময় হঠাৎ প্রথম স্ত্রী তার আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে করে বাইরে থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে প্রথমে আমাকে মারে পরে ঘরে ঢুকে ময়নার চুল কেটে, টেনেহিঁচড়ে বাইরে নিয়ে এসে শরীরের জামা-কাপড় খুলে ফেলে এবং গাছের সঙ্গে বাঁধে।
বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি কুষ্টিয়ার সভাপতি অ্যাডভোকেট মঞ্জুরী বেগম গৃহবধূকে প্রকাশ্যে এমন নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করার দাবি করেন। একইসঙ্গে নির্যাতিতার সবরকম আইনি সহায়তার কথা জানালেন তিনি।
ভেড়ামারা থানার ওসি খন্দকার শামীম জানান, গৃহবধূ নির্যাতনের ঘটনায় ময়না খাতুন নিজেই বাদী হয়ে ৭ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন। দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
![img](http://showcase.infostation.co/2025/january/dettol/welcome/v6/jugantor/img/ctabutton2.png)
![img](http://showcase.infostation.co/2025/january/dettol/welcome/v6/jugantor/img/clickhand.png)