কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আকবর হোসেন হিরুর পক্ষে আনন্দ মিছিল করতে গিয়ে প্রাণ হারাল শিশু ইয়াসিন (১০)।
সোমবার ভোরে রাজিবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।
হাসপাতালের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আবদুল কুদ্দুস মিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইয়াসিনের মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেন। তবে রাজিবপুর হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন একটি চক্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিষয়টি ধামাচাপার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা।
জানা গেছে, রোববার রাতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) আকবর হোসেন হিরু বেসরকারিভাবে বিজয়ী হওয়ার পর তার নিজ এলাকা রাজিবপুরের জালছিড়া গ্রামে নারী-পুরুষ মিলে আনন্দ-উল্লাস করতে থাকে। এতে পার্শ্ববর্তী ব্যাপারীপাড়া থেকে যোগ দেয় শিশু ইয়াসিন।
ঢাকঢোল সহকারে উল্লাস করতে গিয়ে লোকজনের ধাক্কায় কবরস্থানের দেয়ালে ছিটকে পরে মাথায় আঘাত পায় সে। পরে অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে ফিরে আসে। রাতে খাওয়ার পর শরীরে খিঁচুনি ও বমি করলে রাজিবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে মারা যায় সে।
ইয়াসিনের দাদা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, উপজেলার বালিয়ামারী ব্যাপারীপাড়ার দরিদ্র মৎস্যজীবী আনসার আলীর ছেলে সে। পরিবারের কাউকে না জানিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সে ভোটের উৎসবে যোগ দেয়। এরপর রাত সাড়ে ৮টায় দিকে আহত হয়ে বাড়িতে ফিরে আসে। রাতে আহারের পর শুয়ে পরে। রাত ২টার দিকে শরীরে খিঁচুনি ও বমি করায় পরিবারের লোকজন তাকে রাজিবপুর হাসপাতালে নিয়ে আসে।
রাজিবপুর হাসপাতালের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আবদুল কুদ্দুস মিয়া জানান, শিশুটিকে গুরুতর আহত অবস্থায় রাত সাড়ে ৩টার দিকে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসাসহ তাকে অক্সিজেন দেয়া হয়। পরিবারের লোকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র নিয়ে যেতে বলা হলেও গভীর রাত হওয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটিকে রেখে পরিবারের লোকজন চলে যায়।
রাজিবপুর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আবুল কাশেম ফজলুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
রাজিবপুর হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন একটি চক্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিষয়টি ধামাচাপার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা।
রাজিবপুর হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন যুগান্তরকে মোবাইলে জানান, এ ধরনের কোনো রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়নি। সে বাড়িতেই চিকিৎসাধীন ছিল। হাসপাতালে ভর্তি হলে আমি জানতাম।