পাপ মোচনের আশায় বগুড়ায় পুণ্যস্নানে অর্ধ লক্ষাধিক পুণ্যার্থী
শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৬:২৬ পিএম
শেরপুরের মা ভবানীর মন্দিরের শাঁখারী পুকুরে পূণ্যস্নান
হিন্দু ধর্মাম্বলীদের জীবনের পাপ, তাপ, দুঃখ বেদনা মোচনসহ পুণ্যলাভের আশায় মাঘী পূর্ণিমা উপলক্ষে বগুড়ার শেরপুরে মঙ্গলবার দিনব্যাপী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ৫১টি পীঠস্থানের অন্যতম ঐতিহাসিক মা ভবানীর মন্দিরে পুণ্যস্নান উৎসব উদযাপিত হয়েছে।
এ উৎসবে মন্দিরস্থলে ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আগত পুণ্যার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। এ উৎসব শান্তিপূর্ণ করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়।
মা ভবানী মন্দিরের এই চিরাচরিত তিথিতে পুণ্যস্নানসহ রতি প্রতিমা দর্শন, পূজাঅর্চনা, ভোগদান, অর্ঘদান, মাতৃদর্শন ইত্যাদি কর্মযজ্ঞ নির্বিঘ্নে সফল করতে কমিটি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
পঞ্জিকা তিথি অনুযায়ী প্রতিবছর মাঘী পূর্ণিমায় এ পুণ্যস্থানে স্নান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
ধর্মীয় শাস্ত্রমতে, মাঘী পূর্ণিমার দিনে এ স্থানে অংশ নিলে তার অতীত জীবনের পাপ, তাপ, দুঃখ বেদনা মোচনসহ পুণ্যতা লাভ হয়। আর সেই আশায় হাজার হাজার ভক্ত নর-নারী ও শিশু কিশোর মন্দিরের শাঁখারী পুকুরে স্নান করেন। সেই সঙ্গে ঐতিহাসিক এই মন্দিরে রতি প্রতিমা দর্শন, পূজাঅর্চনা, ভোগদান, অর্ঘদান, মাতৃদর্শন করেন ভক্তরা। মন্দিরের পক্ষ থেকে ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাত থেকেই তিথি অনুযায়ী মা ভবানীর মন্দিরে মাঘী পূর্ণিমার উৎসবে যোগ দিতে পুণ্যার্থীরা আসতে থাকেন। এজন্য অসংখ্য দর্শনার্থী রাত যাপন করেন মন্দির এলাকা ও আত্মীয়স্বজনের বাসাবাড়িতে।
সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলা থেকে আসা গীতা রানী, লক্ষী, সরস্বতী, আরতি, নাটোরের গুরুদাসপুরের রীতা রানী, জয়পুহাট সদরের দিপালী রানী বলেন, মায়ের দর্শন নিতে এখানে এসেছি। মনের আশা বাসনা পূরণের জন্য স্নান শেষে মায়ের কাছে প্রার্থণা করেছি।
শেরপুরের বৃন্দাবনপাড়ার পুণ্যর্থী বিউটি রাণী সরকার বলেন, এখানে এলে দেহ-মন পবিত্র হয়, তাই মায়ের মন্দিরে এসেছি। মনবাসনা পূরণ হবে- এমন আশা নিয়ে মায়ের মন্দিরে এসেছি বলে তিনি জানান।
এ উৎসব প্রসঙ্গে মা ভবানীপুর মন্দির সংস্কার, উন্নয়ন ও পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক গৌরদাস রায় চৌধুরী বলেন, এবার ভারতসহ বেশ কিছু দেশের ও দূরবর্তী জেলাগুলো থেকে পুণ্যার্থীরা এসেছেন।
এদিকে দিনটিকে ঘিরে সকাল থেকেই হাজার হাজার নারী-পুরুষ পূণ্যতা লাভের আশায় মন্দিরস্থলে সমবেত হন এবং শাঁখারী পুকুরে পুণ্যস্নান করেন।
এ উপলক্ষে প্রতিবছর মা ভবানী মন্দিরের চারপাশে মেলা বসে। মেলায় মুড়ি, মুড়কী, ঝুঁড়ি, মিষ্টান্ন, রকমারি খাবার সামগ্রীসহ মসলাদিও পাওয়া যায় । সেই সঙ্গে শিশুদের বিভিন্ন খেলনা, ইতিহাস ঐতিহ্যখ্যাত বই পুস্তুক এ মেলায় পাওয়া যায়।