নতুন প্রজন্মের কাছে রায় বাহাদুর যদুনাথকে তুলে ধরতে পরিবারের আহ্বান
ইন্দ্রজিৎ রায়, যশোর ব্যুরো প্রধান
প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০১৮, ০৩:০৫ এএম
যশোর সার্কিট হাউসে দৈনিক যুগান্তর যশোর প্রতিনিধির সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎ হয়। ছবি: যুগান্তর
নতুন প্রজন্মের কাছে বাঙালি সম্পাদক, আইনজীবী ও সাহিত্যিক যদুনাথ মজুমদারের কর্মজীবন তুলে ধরতে আবেদন জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
শনিবার যশোর সার্কিট হাউসে একান্ত সাক্ষাৎ হয় যদুনাথ মজুমদারের ভ্রাতুষ্পুত্র ডা. সূর্য কুমার মজুমদার ও তার সহধর্মিণী ডা. শিপ্রা মজুমদার, মেয়ে ডা. শর্মিষ্ঠা ভট্টাচার্য মজুমদার ও তার স্বামী ডা. গৌরব দীপ ভট্টাচার্যের সঙ্গে।
নিজেদের শেকড়ের টানে ভারত থেকে পূর্বপুরুষের ভিটেমাটিতে যশোরে এসেছেন বলে জানান তারা।
যশোর উন্নয়নে রায় বাহাদুর যদুনাথ মজুমদারের অবদান অনেক উল্লেখ করে সাক্ষাৎকারে তারা দুই বাংলাতেই রায় বাহাদুর যদুনাথ মজুমদারের জন্মদিন (২৩ অক্টোবর) পালনের দাবি জানান।
তাদের মতে, নতুন প্রজন্মের কাছে তিনি দিন দিন অচেনা হয়ে যাচ্ছেন। তাই এ জন্মদিন পালনে রায় বাহাদুরের কীর্তিময় জীবন যশোরবাসীর কাছে ফুটে উঠবে।
এ ছাড়া যদুনাথ মজুমদারের নামে যশোর শহরে গুরুত্বপূর্ণ কোনো এলাকা, সড়ক কিংবা সরণির নামকরণ করতে অনুরোধ করেন যদুনাথ মজুমদারের ভ্রাতুষ্পুত্র ডা. সূর্য কুমার মজুমদার।
এ দুটি উদ্যোগ যদুনাথ মজুমদারকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরবে বলে মত দেন তারা।
এ সময় শিপ্রা মজুমদার বলেন, যদুনাথ মজুমদার মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। কখনও নিজের নামের জন্য কাজ করেননি। তাকে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা উচিত।
বাংলাদেশের জন্য তারা রায় বাহাদুরের মতোই কাজ করতে চান জানিয়ে ডা. গৌরব দীপ ভট্টাচার্য জানান, ‘সেভিয়ার লেট যদুনাথ মজুমদার লেগেসি রিমেন্স’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান করতে যাচ্ছেন তারা। যার কাজ হবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করতে যাওয়া রোগীর সহায়তা করা।
অনেক বাংলাদেশি ভারতে চিকিৎসা করতে গিয়ে নানা হয়রানির শিকার হন। তাই টাকা অনুযায়ী কোথায় ডাক্তার দেখাতে হবে, সেখানে সে ব্যবস্থা করে দেবে এ প্রতিষ্ঠান।
এ প্রসঙ্গে শুধু একটি সার্ভিস চার্জ নেয়া হবে বলে জানান শর্মিষ্ঠা ভট্টাচার্য মজুমদার।
তারা আরও বলেন, আপনারা যতদিন রায় বাহাদুর যদুনাথ বাবুকে মনে রাখবেন, আমরা এখানে আসব আর আপনারা যাবেন, ততদিন যেন সম্পর্কটি থাকে।
রায় বাহাদুর যদুনাথ মজুমদারের মেজভাই পঞ্চানন মজুমদারের ছেলে সূর্য কুমার মজুমদার বলেন, যশোর সম্মিলনী ইনস্টিটিউশন থেকে মেট্রিকুলেশন পাস করেছি। ১৯৪৭ সালে দেশ ছেড়েছি।
শহরের ঘোপে আমাদের বাড়ি। নিজের দেশে এসে ভালো লাগছে।
উল্লেখ্য, যদুনাথ মজুমদার ১৮৫৯ সালের ২৩ অক্টোবর ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত লোহাগড়া নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি ১৯০৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯০৭ সালের ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত যশোর জেলা বোর্ড ও যশোর পুরসভার (পৌরসভার) সভাপতি ছিলেন।
এ সময় তিনি যশোরের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ১৮৮৯ সালে তিনি যশোর শহরে সম্মিলনী ইনস্টিটিউশন নামক একটি উচ্চবিদ্যালয় স্থাপন করেন।
তার জন্মস্থান লোহাগড়ার বাসস্থানে লোহাগড়া আদর্শ মহাবিদ্যালয় ও যশোরের বাসস্থানে আদর্শ বালিকা উচ্চবিদ্যালয় স্থাপিত হয়।
এ ছাড়া যশোরের সুফলা কাটি হাইস্কুল, রাজঘাট হাইস্কুল ও বরিশালের কদমতলা হাইস্কুল প্রতিষ্ঠা করেন যদুনাথ মজুমদার।