ক্যাম্পস আয়োজিত ফ্রি মেডিকেল ও চক্ষু ক্যাম্পে স্বাস্থ্যসেবা পেল ২৫০০ সাধারণ মানুষ

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৪ পিএম

প্রায় তিন হাজারেরও অধিক সুবিধাবঞ্চিত রোগীদের বিনামূল্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, চিকিৎসা সেবা প্রদান ও ঔষধ সরবরাহ করেছে স্বেচ্ছাসেবী স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ‘কিডনি এওয়ারনেস মনিটরিং এন্ড প্রিভেনশন সোসাইটি’ (ক্যাম্পস)।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে ব্যতিক্রমধর্মী এ আয়োজনটি ২১ বছর ধরে করে আসছে ক্যাম্পস। এরই ধারাবাহিকতায় ২১ তম বছরে এসে ক্যাম্পস চলতি বছরেও টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর উপজেলার হাতিবান্ধা ইউনিয়নের তালিমঘর প্রাঙ্গণে ‘ফ্রি মেডিকেল ও চক্ষু ক্যাম্প’ এর মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে।
ফ্রি মেডিকেল ও চক্ষু ক্যাম্পে টাঙ্গাইল ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের দরিদ্র গ্রামবাসীর মধ্যে প্রায় ২ হাজার ৫ শত জন রোগীর নিবন্ধন ও প্রাথমিক রোগ নির্ণয়ের জন্য বিনামূল্যে রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা, ইসিজি, আল্ট্রাসনোগ্রামসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় ১০ দিনব্যাপী। এরপর ২১শে ফেব্রুয়ারির দিন রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে আগত বিশেষজ্ঞসহ প্রায় অর্ধশতাধিক চিকিৎসক দিনব্যাপী রোগীদের সেবা প্রদান করেন ও বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ঔষধ প্রদান করেন।
এছাড়াও ২৫০ এর অধিক চক্ষু রোগীদের বিনামূল্যে চোখের ছানী অপারেশন ও লেন্স প্রতিস্থাপনের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়।ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প এর পাশা পাশি ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সুস্থ জীবনধারা’ শীর্ষক একটি মুক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও ক্যাম্পস এর প্রকাশনা ‘প্রয়াস-২১’ এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সোনালী ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শওকত আলী খান। আলোচনা সভায় কিডনি বিষয়ের উপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্যাম্পস এর সভাপতি দেশের বিশিষ্ট কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ।
তিনি বলেন, কিডনি রোগের প্রকোপ দিন দিন বেড়েই চলছে। আামাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে কিডনি রোগের হার উন্নত দেশের চেয়ে বেশি। বাংলাদেশে প্রায় ৩ কোটি ৮০ লক্ষ লোক কোন না কোন কিডনি রোগে আক্রান্ত। কিডনি বিকল রোগের চিকিৎসা ব্যয় এত বেশি যে, আমাদের মত দেশের শতকরা দশভাগ লোক তা বহন করতে পারে না। পক্ষান্তরে সবাই যদি স্বাস্থ্য সচেতন হয় এবং সুস্থ জীবন ধারা চর্চা করে তবে ৬০ থেকে ৭০ ভাগ ক্ষেত্রে কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা সম্ভব।
তিনি আরো বলেন, কিডনি রোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ, ক্যান্সার প্রতিরোধে ৮ টি স্বার্ণালী উপায়ের উপর জোর দেন, তা হল-নিয়মিত ব্যয়াম, সুষম পরিমিত খাবার ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, মাদক ও ধূমপান পরিহার করা, পর্যাপ্ত পানি পান করা, ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখা, যারা কিডনি রোগের ঝুঁকিতে আছে তাদের নিয়মিত চেক-আপ এ থাকা ও শিশুদের জন্মগত কিডনি রোগ আছে কিনা তা পরীক্ষা করা ও সময়মত চিকিৎসা করানো এবং বেশি দিন ব্যাথার ঔষধ বা যত্রতত্র এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবন না করা।
তিনি আরো জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুসারে, ২০৪০ সালের মধ্যে ৫০ লাখের বেশি কিডনি বিকল রোগী সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসার অভাবে অকাল মৃত্যুবরণ করবে। বর্তমানে ৮৫ কোটির অধিক লোক দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত। দুঃখজনক হলেও সত্য এরমধ্যে ৭৫ কোটি রোগী জানে না যে মরণঘাতী কিডনি রোগ নীরবে তাদের কিডনি নষ্ট করে চলেছে।