Logo
Logo
×

কর্পোরেট নিউজ

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ আয়োজিত ওয়েবিনার

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:২৮ এএম

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ আয়োজিত ওয়েবিনার

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস) গ্লোবাল পিস এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরতে বিশিষ্ট বক্তাদের নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক ওয়েবিনার আয়োজন করেছে। ওয়েবিনারের শুরুতে ড. এম জসিম উদ্দিন, সহযোগী অধ্যাপক এবং সিপিএসের পরিচালক, প্রারম্ভিক বক্তব্য প্রদান করেন। 

তিনি বলেন, সিপিএসের মূলমন্ত্র হলো ‌‘মানুষের মাধ্যমে শান্তির প্রচার’। কিন্তু শান্তি অর্জন করা সহজ নয়। আমরা প্রায়শই শান্তির কথা শুনি, তবুও স্থানীয়ভাবে এবং বিশ্বব্যাপী আমরা সংঘাত, সহিংসতা এবং রক্তপাত প্রত্যক্ষ করছি। 

তিনি রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সাহায্য কমে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ড. জসিম বলেন, গণমাধ্যম বিশ্ব জনমত গঠন করে। ন্যায়বিচার এবং মানবিক সহায়তা অর্জনের জন্য, গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আজকের বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং জাতির মধ্যে বোঝাপড়া ও সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য পিস্ স্টাডিজের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- প্রফেসর তোশিয়া হোশিনো, ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এমেরিটাস এবং জাতিসংঘে জাপানের সাবেক রাষ্ট্রদূত। প্রফেসর হোশিনো আন্তর্জাতিক কূটনীতি এবং সংঘাত সমাধানে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে মূল্যবান ধারণা আলোচনা করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত আলোচনা ভবিষ্যতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সহযোগিতা গড়ে তুলবে, বিশেষ করে ওসাকা ইউনিভার্সিটি এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির মধ্যে। এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী শান্তি ও মানব নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা এবং শিক্ষা সম্প্রসারণ সম্ভব হবে। এটি শান্তি গবেষণার অগ্রগতি ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে।

মূল বক্তা হিসেবে ড. ভার্জিল হকিন্স, ওসাকা স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল পাবলিক পলিসির অধ্যাপক, বক্তব্য রাখেন। ড. হকিন্স শান্তি প্রতিষ্ঠার চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ নিয়ে চিন্তাশীল আলোচনা করেন এবং অংশগ্রহণকারীদের সমাধান তৈরিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বিভিন্ন জাতির মধ্যে বোঝাপড়া ও সহযোগিতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন, বিশেষ করে রোহিঙ্গা সংকটের মতো জরুরি ইস্যুগুলোর ক্ষেত্রে। 

তিনি বলেন, ২০১৬ সালে মিয়ানমার সরকারের দ্বারা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবির তৈরি হয়। এই সংকটের প্রাথমিক পর্যায়ে বহির্বিশ্বের সংবাদমাধ্যমগুলো তুলনামূলকভাবে প্রচুর পরিমাণে কভারেজ (এবং সহানুভূতি) পেয়েছিল। কিন্তু সংঘাত অব্যাহত থাকায় এবং শরণার্থীরা কয়েক বছর ধরে তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে না পারায়, এই কভারেজ হ্রাস পেতে শুরু করে। তিনি রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক টাইমস এবং জাপানের ইউমিউরি শিম্বুন এবং আসাহি শিম্বুনের মিডিয়া কভারেজের কিছু নির্ধারক বিষয় ব্যাখ্যা করেছেন। 

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের কোনো ধরণের সমাধান না হওয়াতে, বা পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন না হওয়াতে মিডিয়া তার আগ্রহ হারিয়েছে।  

প্রফেসর আব্দুল হান্নান চৌধুরী, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর, সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাখাইনে আরাকান সেনাবাহিনী এবং মিয়ানমারের জাতীয় সেনাবাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘাত বাংলাদেশের জন্য একটি নিরাপত্তা হুমকি। ২০১৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমিতে প্রত্যাবাসন করতে ব্যর্থ হয়েছে। 

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের উচিত রোহিঙ্গাদের মানবাধিকারের জন্য বিশ্বব্যাপী সচেতনতা তৈরি করতে রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কে প্রচারণা চালিয়ে যাওয়া এবং বৃহৎ শক্তি এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গাদের সাহায্য প্রদান এবং সংকট সমাধানে অবদান রাখার জন্য চাপ দেওয়া। প্রফেসর চৌধুরী অংশগ্রহণকারীদের সম্মেলনে অর্জিত জ্ঞান তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রয়োগ করার জন্য উৎসাহিত করেন।এই সম্মেলনটি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শান্তি গবেষণার প্রচার এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রতি প্রতিশ্রুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। 

ওয়েবিনারে উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এছাড়া আরও ছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম