ডেসকো'র বিদ্যুৎচালিত যানবাহনের চার্জিং পয়েন্ট উদ্বোধন
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:১৭ পিএম
বৈশ্বিক জলবায়ু পরিস্থিতি বিবেচনায় শনিবার ডেসকো কর্তৃক মাটিকাটা সুমাত্রা ফিলিং স্টেশনে বৈদ্যুতিক যান চার্জিং স্টেশন উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো: হাবিবুর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো: হাবিবুর রহমান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার অঙ্গীকারকে বাস্তবায়ন করতে EV চার্জিং স্টেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এছাড়া ঢাকা শহরকে বাসযোগ্য নগরীতে পরিণত করতে বায়ু দূষণ কমাতে হবে। বিদ্যুৎ চালিত যানবাহন এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। আমরা পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে এখন পর্যন্ত ৩ টি স্টেশন চালু করেছি, আরো ৩ টি করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে ফিলিং স্টেশনের মালিকদের বলবো আপনারা এগিয়ে আসুন। বিদ্যুৎ চালিত যানবাহনের ব্যবহার বাড়াতে সকলকে একত্রে কাজ করতে হবে। দূষণমুক্ত নগরী গড়তে এর বিকল্প নেই।'
সভাপতির বক্তব্যে মো: নিজাম উদ্দিন বলেন, প্রচলিত যানবাহনের তুলনায় বিদ্যুৎ চালিত যানবাহনে খরচ অনেক কম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে সবাইকে স্মার্ট টেকনোলজির সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হবে।
স্বাগত বক্তব্যে মো: কাওসার আমীর আলী বলেন, বৈশ্বক জলবায়ুর কথা চিন্তা করে সারা বিশ্বে বিদ্যুৎ চালিত যানবাহন ব্যবহার বাড়ছে এবং জনপ্রিয় হচ্ছে। আমাদেরকেও কার্বন নিঃসরণ কমাতে হবে। তাই বিদ্যুৎ চালিত যানবাহনের ব্যবহারের দিকে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। এখন দেশে যে পরিমান অনিবন্ধিত ইজি বাইক চলছে সেগুলোকে বিদ্যুৎ চালিত যানের ম্যাকানিজমে কনভার্ট করার পরিকল্পনা নিতে হবে। এতে করে অপচয় রোধের পাশাপাশি শৃঙ্খলা আসবে। নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্মাণ করলে দূর্ঘটনা থেকে মানুষ মুক্তি পাবে। এবিষয়েও উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুনীরা সুলতানা, এন ডি সি, চেয়ারম্যান, টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য বায়ুমণ্ডলে ক্ষতিকর গ্রিনহাউজ গ্যাস (জিএইচজি) তথা কার্বন ডাই অক্সাইডের নিঃসরণ বৃদ্ধিকে অন্যতম প্রধান কারণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর মোটরযান থেকে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ কমিয়ে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধে বিশ্বব্যাপী ইলেকট্রিক ভেহিকেল (EV) ব্যবহারের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে।
'ইলেকট্রিক মোটরযান' অর্থ এক বা একাধিক বৈদ্যুতিক মোটরের সাহায্যে চালিত যে-কোনো মোটরযান, যার চালিকা শক্তি উক্ত মোটরযানে বৈদ্যুতিক চার্জ অথবা সংযুক্ত রিচার্জেবল ব্যাটারি। বাইসাইকেল বা রিকশা এবং রিকশা ভ্যান এর অন্তর্ভুক্ত নয়। বৈদ্যুতিক যান প্রচলন ও পরিচালনার সাথে বিদ্যুৎ খাত সরাসরি সংশ্লিষ্ট। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও বৈদ্যুতিক যানের ব্যবহার ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে। বৈদ্যুতিক যানের ব্যবহারকে উৎসাহিত করা এবং এর জন্য চার্জিং অবকাঠামো স্থাপনের কার্যক্রমকে কাঠামোগত রূপ দেয়া প্রয়োজন। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক বৈদ্যুতিক যান চার্জিং নির্দেশিকা-২০২২ প্রণয়ন করা হয়েছে। উক্ত নির্দেশিকা অনুযায়ী 'ইলেকট্রিক মোটরযান' ব্যবহারে উৎসাহিত করতে এবং এর জন্য চার্জিং অবকাঠামো স্থাপনের কার্যক্রমকে কাঠামোগত রূপ দিতে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো) লিমিটেড এর আওতাধীন এলাকার ‘প্রথম ইভি পাবলিক চার্জিং স্টেশন’ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিভিন্ন ধরনের EVSE চার্জ করার বিভিন্ন গতি প্রদান করে। লেভেল ১ চার্জিং স্টেশনগুলি একটি ১২০ ভোল্ট (V), অল্টারনেটিং-কারেন্ট (AC) প্লাগ ব্যবহার করে এবং একটি ডেডিকেটেড সার্কিটের প্রয়োজন, যা চার্জ করার প্রতি ঘন্টার জন্য প্রায় ৫ মাইল পরিসীমা অফার করে।
লেভেল ২ স্টেশনগুলি একটি ২৪০ ভোল্ট AC প্লাগের মাধ্যমে চার্জ করে এবং হোম চার্জিং বা পাবলিক চার্জিং সরঞ্জাম ইনস্টল করা হয়৷লেভেল ২ স্টেশন প্রতি ঘন্টা চার্জ করার জন্য ১০ থেকে ২০ মাইল পরিসীমা প্রদান করে। লেভেল ২ চার্জারগুলি সাধারণ এবং একটি হোম সিস্টেমের মতো প্রায় একই হারে চার্জ করা হয়। লেভেল ৩ চার্জারগুলো ডিসি ফাস্ট চার্জার হিসাবেও পরিচিত। লেভেল ৩ একটি ৪৮০ ভোল্ট ডাইরেক্ট-কারেন্ট (ডিসি) প্লাগ ব্যবহার করে। এতে অনবোর্ড চার্জারকে বাইপাস করে এবং একটি বিশেষ চার্জিং পোর্টের মাধ্যমে ব্যাটারিতে ডিসি বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। DC ফাস্ট চার্জারগুলো প্রতি ১০ মিনিটের চার্জিংয়ের জন্য ৪০ মাইল পর্যন্ত পরিসীমা প্রদান করে।
ফাস্ট-চার্জিং নিয়মিত চার্জিংয়ের চেয়ে বেশি কার্যকর, এটি । দীর্ঘ পরিসর: দ্রুত-চার্জিং কম জ্বালানিতে গাড়ি চালানোর সুবিধা দিবে। বাংলাদেশ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ গাড়িকে ইভি গাড়িতে রূপান্তরের উদ্যোগ নিয়েছে। RTHD ইভি নিবন্ধন ও পরিবহন নীতি প্রকাশ করেছে।
BERC দ্বারা ইভি চার্জিংয়ের জন্য বৈদ্যুতিক শুল্ক কমানো হয়েছে। ২০ বছরের ট্যাক্স মওকুফ ভ্যাট, এসডি ছাড় (আমদানি ও বিক্রয়) এবং আমদানি শুল্ক শিথিল করেছে। অর্থাৎ আগামীদিনে পৃথিবীকে টিকিয়ে রাখতে হলে ইলেকট্রিক গাড়ি ব্যবহার বাড়াতেই হবে।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সুমাত্রা ফিলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্নেল অব: আকতার কামাল পিএসসিসহ ডেসকো'র উর্ধ্বতন কর্মকতাবৃন্দ।