উন্নত বাংলাদেশ গড়ার শপথই হোক শোক দিবসের অঙ্গীকার
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৩, ০৬:৫২ পিএম
বিডার মাল্টিপারপাস হলে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এবং জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ) –এর যৌথভাবে আয়োজিত “ স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস ২০২৩” উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্ত্যবে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) লোকমান হোসেন মিয়া এবং বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, শেখ ইউসুফ হারুন, নির্বাহী চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব), বেজা, মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জনাব নাসরীন আফরোজ , নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) এনএসডিএ ও স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন জনাব অভিজিৎ চৌধুরী, নির্বাহী সদস্য, (অতিরিক্ত সচিব), বিডা।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র কুরআন থেকে তেলওয়াত ও শ্রীমদ্ভাগবত গীতা পাঠ এবং স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার শহিদ পরিবারসহ, সকল শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপনসহ এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিনম্র চিত্তে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে বাংলার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্ত্যবে মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বঙ্গবন্ধুর জীবনী কর্ম এবং দেশের প্রতি তার অসামান্য আত্মত্যাগ কথা উল্লেখ করে বলেন, এক সময়ে পূর্ব বাংলার ৮০% মানুষ ছিল দারিদ্র সীমার নীচে, একই দেশ অথচ মাথাপিছু আয় ছিল অনেক বৈষম্য ১৯৬২ সালে পূর্ব বাংলার মানুষের গড় আয় ছিল ২৯২ রুপি আর পশ্চিম পাকিস্তানিদের গড় আয় ছিল ৩৮০ রুপি, বাংলায় বিনিয়োগের হার ছিল মাত্র ২৩% । ১৯৬৫- থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত বাংলায় উন্নয়ন প্রকল্প চলমান ছিল মাত্র ৬৫টি আর পাকিস্তানে ২৯৭টি অথচ মোট জনসংখ্যার ৫৬% ছিল বাঙ্গালি। তখন আমদানি রপ্তানি লাইসেন্স শুধুমাত্র ইসলামাবাদ থেকে দেওয়া হতো। পাকিস্তানের সূচনালগ্ন থেকেই সরকারি চাকরিতে বৈষম্য ছিল আরো প্রকট বাঙ্গালিদের মধ্যে যুগ্ম সচিবের ওপরে কোন অফিসার ছিল না, সেনাবাহিনীতে বাঙ্গালিদের মধ্যে জেনারেল, ব্রিগেডিয়ার পর্যায়ের কোন অফিসার ছিল না। এই বৈষম্য থেকে বাংলার মানুষকে মুক্ত করতে যিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন তিনি আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মাত্র ৩৪ বছর বয়সে ১৯৫৪ সালে মন্ত্রী হয়েও মন্ত্রীত্ব ত্যাগ করেছিলেন শুধু আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য। দেশ স্বাধীন করার পরে, সল্পতম সময়ে বাংলাদেশের সংবিধান থেকে শুরু করে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যাবতীয় আইন তিনি তৈরি করেছিলেন, এমন কোন সেক্টর নেই যা নিয়ে বঙ্গবন্ধু পরিকল্পনা করেন নাই। এসময়ে তিনি আরো বলেন বঙ্গবন্ধু খুদা দারিদ্রমুক্ত উন্নত সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন, আজ তাঁর ই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ, তাই আমরা যারা বিডা বেজা এনএসডিএ সহ দেশের উন্নয়ন খাতে জড়িত আছি জাতিকে যথাযথা সেবা দিয়ে উন্নত করার দায়িত্ব আমাদেরও, তাই হোক আমাদের শোক দিবসের অঙ্গীকার।
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) জনাব লোকমান হোসেন মিয়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সহ ১৫ই আগস্টে শাহাদাৎ বরণকারী সকল শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে বলেন পাকিস্তানের সাথে আমাদের ২৪ বছরের ইতিহাস ছিল, বাঙ্গালীর প্রতি বঞ্চনা, নিপিড়ন, নির্যাতন, মাতৃভাষার উপরে আঘাত এবং অধিকার হরনের ইতিহাস। যার জন্ম না হলে সেই দুঃস্বপ্নের বৈষম্য থেকে আমরা মুক্তি পেতাম না তিনি বাংলার প্রাণ পুরুষ আমাদের জাতির পিতা, তিনি ছিলেন বলে আজ আমরা এখানে আসতে পেরেছি। এসময়ে তিনি আরো বলেন, আমি বিশ্বাস করি তিনি যদি আরো ১০ বছর বাংলাদেশ পরিচালনা করতে পারতেন তাহলে আজ আমরা সিংগাপুরের কাতারে থাকতাম। আজ তাঁর অসমাপ্ত কাজ আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করছেন, জাতিকে নিয়ে যাচ্ছেন উন্নত বাংলাদেশের দিকে।
এ সময়ে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, ১৫ আগস্ট আমাদের সবচেয়ে কলঙ্কের দিন , এইদিনে শুধু আমাদের জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যাই করা হয় নি রবং ইমডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে এবং পরে তাকে সাংবিধানিক বৈধতা দিয়ে রাষ্ট্রীয় জাস্টিফাই করার চেষ্টা করা হয়েছে। পরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৬ ক্ষমতায় এলে তা বাতিল করে সে হত্যার বিচার করা হয়েছে। কিন্তু সেই ঘাতক দল, সেই স্বাধীনতা বিরোধী গোষ্ঠি এখনো সক্রিয় আছে, তাদের থেকে আমাদের সজাগ থাকতে হবে, যাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতির এই উন্নয়নের অর্জন বৃথা না যায়।
এছাড়াও আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব জনাব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন, জাতির প্রতি তার আত্নত্যাগ এবং এনএসডিএ –এর নির্বাহী চেয়ারম্যান নাসরীন আফরোজ আধুনিক ও ধর্মিয় শিক্ষা বিস্তারে বঙ্গবন্ধুর অবদান ও বিডার, নির্বাহী সদস্য অভিজিৎ চৌধুরী জাতি গঠনে বঙ্গবন্ধুর অবদান, তার রাজনৈতিক জীবন ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্বাধীন বাংলাদেশের পরিচিতি তুলে ধরার ওপরে আলোচনা করেন।
এ সময়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এবং জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ) এর সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ এবং বিভিন্ন মিডিয়ার সংবাদ প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।