Logo
Logo
×

কর্পোরেট নিউজ

হৃদহান এগ্রোর "হাম্বাহাট" এর সফলতার গল্প

Icon

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৩, ১২:২৮ এএম

হৃদহান এগ্রোর

মানবসভ্যতার আদিলগ্নে গুহামানবদের ক্ষুধা নিবৃত্তির লক্ষ্যে খাদ্য সংগ্রহের জন্য যখন কৃষিকাজের সূচনা হয়েছিল, তখন থেকেই কৃষিকাজে সহায়তার জন্য বিভিন্ন কৃষি উপকরণ ও তার মাধ্যমের কথা চিন্তা করছিল। ফসল ফলানোর প্রক্রিয়া ও তা বহন সহজতর করার লক্ষ্যে পশুকে বশ মানিয়ে কৃষিকাজের উপযোগী বানানোর প্রথম ধাপে মানুষ শুরু করল কুকুর পালন।  ধারণা করা হয়, ১০,৫০০ বছর ধরে মানুষ গৃহপালিত প্রাণী পালন করে আসছে। সেই থেকে পশুপাখি পালন কৃষির সাথে সম্পৃক্ত। 

নব্যপ্রস্তরযুগের সময়সীমা আনুমানিক ১০০০০ থেকে ৫০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ। নব্যপ্রস্তরযুগের বিপ্লব মূলতঃ কৃষি বিপ্লব। এই যুগের কৃষি বিপ্লবের ধারাবাহিকতায় প্রাচীন ইউরোপে পশুপালনের জন্য তৎকালীন সময়ে মানুষেরা গবাদি পশুর খামার তৈরি করে তাতে গরু, ছাগল, ভেড়ার  সহ নানাবিধ গবাদি পশু পালন করতে থাকে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আদিমানবেরা খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০০ অব্দ থেকে পশুপালনে মনোনিবেশ করে।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে পশুপালনের জন্য খামার বা এগ্রো ফার্ম ব্যক্তি পর্যায় থেকে প্রতিষ্ঠা হতে থাকে। আজ থেকে গৃহপালিত পশুপালনের যে রীতি গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে দেখা যেত সেই রীতি এখন অনেকটা বিলুপ্ত। তাই সেই চাহিদা পূরণে বাণিজ্যিকভাবে মানুষ শুরু করল এগ্রোফার্ম। বিভিন্ন সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ও বেসরকারি উদ্যোগে এই খাতে তৈরি হতে থাকল হাজারো উদ্যোক্তা। ৩০-৩৫ বছর আগেও পবিত্র কোরবানী ঈদের আগে বাংলাদেশে গরু-ছাগলের বিপুল পরিমাণ চাহিদা পূরনার্থে ভারতীয় সীমান্ত পেরিয়ে  কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও ব্যাপারীদের অপতৎপরতায় অবৈধভাবে প্রচুর গরু বাংলাদেশে প্রবেশ করত। এতে বিপুল অংকের রাজস্ব হারাত সরকার। বিগত দুই দশক ধরে এই সমস্যার সমাধাকল্পে গবাদি পশু উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির উপর সরকারী ও বেসরকারীভাবে নানা উদ্যোগ নেয়া হয় এবং বিভিন্ন কৃষি উদ্যোক্তাদের খামারে বিপুল পরিমাণ গবাদি পশু উৎপাদনের কারণে আমাদের দেশেই এখন  গরু-ছাগলের বিপুল পরিমাণ চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে। সুতরাং গবাদি পশু তথা প্রাণীজ আমিষের চাহিদা পূরণে আমাদের ভারতমুখীতার প্রয়োজন হচ্ছেনা। 

ঢাকার অদুরে সাভারের বিরুলিয়াতে হৃদহান এগ্রো এন্ড ক্যানেল "হাম্বাহাট" নামে একটি বাণিজ্যিকভাবে গবাদি পশু পালনের একটি লাভজনক প্রকল্প নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। বিশাল পরিসরে সুবিস্তৃত এলাকাজুড়ে "হাম্বাহাট" প্রকল্পটি অবস্থিত। সবুজের ছায়াঘেরা নির্জন প্রকৃতির মাঝে রিধান এগ্রো বিভিন্ন জাতের পশু পালনের মাধ্যমে দেশের কৃষি উন্নয়নের ধারা অব্যহত রেখে সামগ্রিক অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। বিভিন্ন পশুপাখি ও বৃক্ষরাজির সমারোহ এই খামারে থাকলেও তারা বাণিজ্যিকভাবে ষাড়গরু ও কুকুর পালন করে আসছে।

প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার জনাব মোঃ  শাফায়াত উল্লাহ রহমত যুগান্তর প্রতিবেদককে বলেন, "এই খামারে পালন করা ষাড় প্রসবের পর নিয়ে আসা হয়। কোনপ্রকার গরু মোটা তাজাকরণ প্রক্রিয়া ছাড়া অর্গানিক উপায়ে এদের বড় করা হয়। এ বছর আমাদের খামারে ২১২ কেজি হতে ৮০০ কেজি ওজনের ৯২টি ষাড় রয়েছে। এর মধ্যে ৬টি হারিয়ানা প্রজাতির ষাড় রয়েছে যার আনুমানিক ওজন ৭৫০ কেজির উর্ধ্বে। আরও রয়েছে হোলেষ্টাইন ফ্রিজিয়ান প্রজাতির ৫৬টি গাভী। এই ফ্রিজিয়ান গাভীগুলো থেকে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ লিটার দুধ সংরক্ষণ করে তা বিক্রি করা হচ্ছে।"

হৃদহান এগ্রো ফার্মের নিজস্ব জমিতে ষাড় ও গাভীর জন্য খাবার লাল নেপিয়ার ঘাস ফলানো হয়। এছাড়াও খড় ও কৃষিবিদ ইন্সটিউট থেকে ক্রয়কৃত পুষ্টিযুক্ত খাবার এদের খাওয়ানো হয়। ষাড় ও ফ্রিজিয়ান গাভীর পাশাপাশি এই খামারে রয়েছে শতাধিক মোরগ ও মরগী যার প্রতিদিন শতাধিক ডিম বিক্রয় হয় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। 

জনাব শাফায়াত উল্লাহ রহমত আরও বলেন, "এই খামারে কুকুরের সংগ্রহ খুবই সমৃদ্ধ। সংগ্রহের তালিকায় আছে, জার্মার শেফার্ড, সাইবেরিয়ান হাস্কি, আমেরিকারন পিটবুল, গোল্ডের রডরিগার, ডুগো আর্জেন্টিনা, ডুবারম্যান, কেনক্রস, রডউইলার সহ এগার প্রজাতির দেশি-বিদেশি কুকুর রয়েছে। এছাড়াও খামারে আগত অতিথিদের বিনোদনের জন্য আমরা চারটি ঘোড়া পালন করে আসছি। "

খামারের গবাদি পশুর লালন-পালন ও যত্নের জন্য বিশেষ ট্রনিংপ্রাপ্ত কর্মীবাহিনী নিরলস কাজ করে যাচ্ছে এবং অত্যাধিক তাপদাহ থেকে রক্ষার জন্য আধুনিক প্রযুক্তির ফগার সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে যা ৫ ডিগ্রী পর্যন্ত তাপ হ্রাস করতে পারে।  এই খামারে পশুপালন ছাড়াও নানা জাতের দেশজ সব্জির পর্যাপ্ত ফলন হয়।

আসন্ন কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে হৃদহান এগ্রো এন্ড ক্যানেলের "হাম্বাহাট" প্রকল্প থেকে খুব সুলভে গরু বিক্রয় চলছে বলে জানালেন কর্ণধার জনাব মোঃ শাফায়াত উল্লাহ রহমত।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম