Logo
Logo
×

কর্পোরেট নিউজ

পুষ্টি নিশ্চিত করার একমাত্র উপায় হচ্ছে খাদ্য নিরাপত্তা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৩, ০১:৪২ এএম

পুষ্টি নিশ্চিত করার একমাত্র উপায় হচ্ছে খাদ্য নিরাপত্তা

বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। কিন্তু পুষ্টি নিরাপত্তা ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে আমরা এখনো অনেক পিছিয়ে।এ জন্য খাদ্যশস্য আর প্রাণিজ আমিষ উৎপাদনে আমাদের আরও মনোযোগী হতে হবে। পুষ্টিকর খাবারের নিশ্চিত করার একমাত্র উপায় হচ্ছে খাদ্য নিরাপত্তা। তবেই আমরা স্বাস্থ্যবান জাতি হিসেবে বিশ্বে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারব বলে মন্তব্য করেছেন গোলটেবিলে বক্তারা।  

মঙ্গলবার বিকেলে মোহাম্মদপুর ডিএনইটি কনফারেন্স হলে ‘নিরবচ্ছিন্ন নগরায়নের কারণে পুষ্টির স্থানান্তর, এর চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাব্য সমাধান এবং উপযুক্ত পুষ্টি সেবার অন্তর্ভুক্তি’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। 

নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনালের প্রযুক্তিগত সহায়তায় ডিএনইটি তাদের নিজস্ব ভেন্যুত এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করেন।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন গেইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মো. রুদাবা খন্দকার এবং নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর মিস সাইকা সিরাজ মূল বক্তব্য দেন।

গোলটেবিলে বাংলাদেশের  শহরাঞ্চলে পুষ্টি পরিষেবা সমর্থনে পরিস্থিতির উন্নতির জন্য বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ, সম্ভাব্য সমাধান এবং নীতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক ড. এস.এম. মুস্তাফিজুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. খালেকুজ্জামান, বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদের সহকারী পরিচালক ডা. নুসরাত জাহান, ন্যাশনাল নিউট্রিশন সার্ভিসেসের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার এস এম হাসান মাহমুদ, পুষ্টি ও খাদ্য ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. নাজমা শাহীন, কেয়ার বাংলাদেশের পরিচালক ড. ইখতিয়ার উদ্দিন খন্দকার, বাংলাদেশ ফুড সেফটি অথরিটির বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মিসেস রওশন আরা বেগম, আইসিডিডিআরবির গবেষক ড. সাবরিনা রশিদ, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির পুষ্টি কর্মকর্তা সামিউল নেওয়াজ এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন থেকে মোঃ মিজানুর রহমান।

বক্তারা বলেন,পুষ্টির স্থানান্তরের কারণে আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করে, বিভিন্ন শহুরে জনগোষ্ঠীর মধ্যে পুষ্টি স্থানান্তরের প্রভাব, খাদ্যে ভেজাল এবং ফলস্বরূপ পুষ্টি স্থানান্তরের প্রভাব, পুষ্টির ঘাটতি এবং বাংলাদেশে নগরায়নের ফলে সৃষ্ট বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা। এই পরিস্থিতে আমাদের গুণগত খাদ্যের মান বাড়াতে হবে, যা পুষ্টি নিশ্চিত করবে।

এছাড়া কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণের অভ্যাস গড়ে তুলতে ছাদকৃষি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তারা যখন নিজ হাতে খাদ্য উৎপাদনে কাজ করবে, সুষম খাদ্যগ্রহণে এমনিতেই তারা আগ্রহী হয়ে উঠবে। তাছাড়া গ্রামীণ পর্যায়ে কাজের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে গ্রামীণ মানুষদের স্বাবলম্বী করে তুলতে হবে যাতে তারা শহর-কেন্দ্রিক চাকরির সন্ধানে শহরে এসে ভীড় না করে।

এসময় ডিএনইটির  সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী পরিচালক এম. শাহাদাত হোসেন বলেন, “গবেষণা বলছে যে ২০৫০ সালের মধ্যে আফ্রিকা ও এশিয়ার শহরে বসবাসকারী আরও আড়াই বিলিয়ন মানুষ থাকবে। বাংলাদেশ দ্রুত নগরায়ণ প্রত্যক্ষ করছে এবং এর ফলে পুষ্টির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। সুতরাং আমাদের অবশ্যই পুষ্টির পরিবর্তনের দিকে নজর দিতে হবে এবং নগরায়ন ও পুষ্টির গতিশীলতা বুঝতে হবে।

গেইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর রুদাবা খন্দকার বলেন, পুষ্টি সচেতনতা প্রচারাভিযানে আরও তরুণদের সম্পৃক্ত করতে হবে। আমাদের যুব নীতিগুলিকে একীভূত করা এবং সচেতনতা বৃদ্ধিকে বিনোদনমূলক করতে হবে।

নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. সাইকা সিরাজ বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অপুষ্টি হ্রাস এবং অতিরিক্ত পুষ্টি বৃদ্ধি সত্ত্বেও সমাজে অপুষ্টির মাত্রা পরিবর্তন হয়নি, বিশেষ করে শহরাঞ্চলে।

বাংলাদেশ ফুড সেফটি অথরিটির ফুড সেফটি অফিসার রওশন আরা বেগম বলেন, সরকারি ও বাণিজ্যিক উভয় ক্ষেত্রেই উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর সমান জোর দিতে হবে। কারণ খাদ্য কর্পোরেশন কম লাভের জন্য বিস্তৃত খাদ্য পণ্যে বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহার করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাজমা শাহীন বলেন, ভবিষ্যৎ বিবেচনা করা জরুরি। এখন থেকে পঞ্চাশ বছর পর কি ঘটবে। শহুরে বাসিন্দাদের মধ্যে প্রক্রিয়াজাত খাবারের ব্যবহার বেশি দেখা যায়। গবেষণা অনুসারে স্বাস্থ্যকর কোনো প্রক্রিয়াজাত খাবার নেই। সুতরাং পুষ্টি নিশ্চিত করার একমাত্র উপায় খাদ্য নিরাপত্তা।

বিশ্ব ব্যাংক এর কনসালটেন্ট ড. এস. এম মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, "গ্রামীণ পর্যায়ে কাজের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে গ্রামীণ মানুষদের স্বাবলম্বী করে তুলতে হবে যাতে তারা শহর-কেন্দ্রিক চাকরির সন্ধানে শহরে এসে ভীড় না করে।"

আইসিডিডিআরবি-র বিজ্ঞানী ড. সাবরিনা রশিদ বলেন, তরুণদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিতে হবে, যা বেশিরভাগই স্কুলে সহকর্মীর চাপ এবং পিতামাতার সামাজিক মান দ্বারা তৈরি হয়।

তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, যে শারীরিক শিক্ষা এবং ক্রিয়াকলাপ কখনো কখনো তত্ত্বের আকারে পাঠ্য বইয়ের জন্য সীমাবদ্ধ থাকে।
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম