
প্রিন্ট: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪৯ এএম
প্রেমঘটিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংর্ঘষ

মিরপুর (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১০ পিএম

আরও পড়ুন
রাজধানীর মিরপুরে প্রেমঘটিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রুপনগর ১২ নম্বর রোডের পশ্চিম মাথার ঝিলপাড়ের রাস্তায় ঘটনাটি ঘটে।
জানা গেছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অনিকের সঙ্গে কিছুদিন আগে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। সাবেক প্রেমিকাকে দেখতে সোমবার রাতে অনিক উত্তরা থেকে রুপনগর এলাকায় চলে আসেন। এসে ওই সাবেক প্রেমিকাকে খবর দেন। ওই প্রেমিকা দেখা করতে রাজি হয় না। মোবাইলে কিছু আপত্তিকর ছবি আছে- দেখা না করলে এই ছবি প্রচার করা হবে এ কথা বলে তাকে হুমকি দেন অনিক। পরে তিনি অনিকের সঙ্গে দেখা করতে এসে মোবাইলের ছবি ফেরত চান। অনিক ছবি দিতে রাজি না হলে তিনি আশিক ও শেখ মাহিন নামে তার পরিচিত দুই বন্ধুকে খবর দেন। ওই দুই বন্ধু ঘটনাস্থলে এসে অনিকের কাছে মোবাইল দেখতে চাইলে তাদের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। এক পর্যায়ে মাহিন তার লোকজনকে খবর দিলে মুহূর্তের মধ্যে বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লোকজন ও অনিকের পক্ষে বিএনপির ২০০ থেকে ৩০০ লোক জড়ো হয়ে হাতাহাতিতে লিপ্ত হন। এক পর্যায়ে টুটুল নামে রুপনগর থানার এক স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আশিক ও শেখ মাহিনকে ধাক্কা দিলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে এ ঘটনায় মঙ্গলবার বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় সদস্য ও ঢাকা মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্য সচিব শেখ মাহিন আহমেদ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর রুপনগর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত আসামি ৫০-৬০ জন।
মামলার আসামিরা হলেন টুটুল মিয়া, মামুন মিয়া, সাখাওয়াত হোসেন সুমন, নাঈম হোসেন, ইমরান মুন্সি, মোছা. সাহিদা বেগম, কাওসার মল্লিক, মুরাদ, কামাল হোসেন, টুকু মিয়া, কাল্লু মিয়া, সোহাগ মিয়া, সুজন মিয়া, ইলিয়াস হোসেন, হান্নান হোসেন, মো. আশরাফ, পানি মনির, ইউসুফ মাতবর, শামীম মিয়া, কদরআলী, লাবু মিয়া ও অজ্ঞাত ৫০-৬০ জন।
এর মধ্যে টুটুল মিয়া রুপনগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক, মামুন মিয়া ৭নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি, নাঈম হোসেন সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক রূপনগর থানা যুবদল, ইমরান মুন্সি সাংগঠনিক সম্পাদক ৭নং ওয়ার্ড বিএনপি, সোহাগ মিয়া আহ্বায়ক ৭ নং ওয়ার্ড যুবদল, কাওসার মল্লিক সাধারণ সম্পাদক রূপনগর থানা ছাত্র দল, মো. আশরাফ রুপনগর থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক, ইউসুফ মাতবর রুপনগর থানা বিএনপির সদস্য এবং মো. কামাল হোসেন, টুকু মিয়া, কাল্লু মিয়া, সুজন মিয়া, ইলিয়াস হোসেন, পানি মনির রুপনগর থানা যুবদলের সক্রিয় কর্মী।
মামলার অভিযোগে শেখ মাহিন উল্লেখ করেন, সোমবার রাত ৮ টার দিকে রূপনগর আবাসিক এলাকার ১২নং রোডের পশ্চিম পাশের শেষ মাথায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন নেতাকর্মী কুষ্টিয়ার কুমারখালীর নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী অনিককে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। এক পর্যায়ে মামলার ১নং আসামি টুটুলসহ অজ্ঞাতনামা ৫০/৬০ জন আসামি ঘটনাস্থলে এসে ছাত্রলীগকর্মী অনিককে ছাড়ানোর চেষ্টা করলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের মারামারি হয়। মোবাইল ফোনে মারামারির খবর শুনে মোটরসাইকেলযোগে ঘটনাস্থলে আসেন মাহিন। মাহিনকে মোটরসাইকেলে দেখে মামলার ১নং আসামি টুটুলের নির্দেশে অন্য আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেন। এক পর্যায়ে তাকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে পেটাতে থাকেন হামলাকারীরা। মাহিনকে বাঁচাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন নেতাকর্মী এগিয়ে আসলে তাদেরও পিটিয়ে আহত করা হন। এ দিকে পুলিশের একটি গোয়েন্দা সংস্থার গোপন প্রতিবেদনেও দুপক্ষের সংঘর্ষের পেছনে প্রেমঘটিত ঘটনার তথ্য উঠে এসেছে।
রুপনগর থানার ওসি মোকাম্মেল বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।