
প্রিন্ট: ০২ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:১০ এএম
যাত্রীদের পদচারণায় মুখরিত সদরঘাট

মোস্তাকিম আহমেদ, পুরান ঢাকা
প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৫, ০৯:৫৭ পিএম

আরও পড়ুন
ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাটে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে চারদিক। টার্মিনালে ঘরমুখো মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে ঢাকা ছাড়ছেন রাজধানীবাসী।
শনিবার সদরঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সদরঘাট টার্মিনাল ও পন্টুন এলাকায় যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। যাত্রীঠাসা লঞ্চগুলো ছেড়ে যাওয়ার অপেক্ষায়। ঈদের দুদিন বাকি থাকতেই ডেক ও কেবিনে পরিপূর্ণ যাত্রী থাকায় সন্তুষ্ট লঞ্চ মালিক ও শ্রমিকরা। পন্টুনে নোঙর করা লঞ্চগুলোতে ছেড়ে যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন যাত্রীরা। আর বাইরে হাঁক-ডাক করে যাত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন লঞ্চের স্টাফরা।
এদিকে যাত্রীদের ভিড়ে গুলিস্থান থেকে সদরঘাট সড়কেও তীব্র যানজট তৈরি হয়েছে। ফলে ঘাটে আসতে বেগ পেতে হয়েছে যাত্রীদের। অনেকেই পুরো রাস্তা হেঁটে এসেছেন ব্যাগ-ব্যাগেজ নিয়ে। বিশেষ করে ছোট শিশু ও বৃদ্ধদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে বেশি। তবে ঈদ উপলক্ষে বিশেষ লঞ্চের ব্যবস্থা থাকায় সহজেই টিকিট পেয়েছেন সবাই।
বরিশালগামী যাত্রী জুয়েল হাওলাদার বলেন, গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত ব্যাপক যানজট। এইটুকু আসতে দেড় ঘণ্টা সময় লেগেছে। রায় সাহেব বাজার থেকে ব্যাগ নিয়ে হেঁটে এসেছি। গাড়ির চাকা নড়ে না। তবে আগে কেবিন বুক করে রেখেছিলাম। তাই ভোগান্তি হয়নি।
চাঁদপুরগামী যাত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি ফিরছি। সড়কে ভোগান্তি হলেও তার থেকে বাড়ি ফেরার আনন্দ বেশি। অগ্রীম টিকিটি শেষ হয়ে যাওয়ায় ব্যবস্থা করতে পারিনি, এ কারণে ডেকে যেতে হচ্ছে। ঘাটে ভিড় আছে, তবে অন্য যেকোনও বছরের তুলনায় পরিবেশ ভালো।
পটুয়াখালীগামী যাত্রী কামাল হোসেন বললেন, লঞ্চে এবং পন্টুনে অনেক ভীড়। কিন্তু অনেক দিন পর বাড়িতে যামু, সবাই মিইল্লা ঈদ করমু, হেইতে এই কষ্টরে কষ্ট মনে অয় না।
এমভি সুন্দরবন-৯ লঞ্চের স্টাফ বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, গতবার ঈদের আগের দিন যাত্রী হইছিল। এবার দুইদিন আগেই অনেক যাত্রী। কেবিন সবগুলো বুক, আর ডেকও প্রায় ভড়ে গেছে।
বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক মোবারক হোসেন বলেছেন, নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীদের সেবা ও নিরাপত্তার জন্য বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা–কর্মচারীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোনো অবস্থাতেই লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও হয়রানি বরদাশত করা হবে না। নির্ধারিত সময়ে পন্টুন থেকে লঞ্চ ছাড়ছে। এ ব্যাপারে সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে।
সদরঘাট নৌ থানার ওসি মো. সোহাগ রানা বলেন, যাত্রীর চাপ বেশি হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর থাকায় কোনও বিশৃঙ্খলা ঘটেনি। সেনাবাহিনী আমাদের সহযোগিতা করছে। এ ছাড়াও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যরা ঘাট এলাকায় তৎপর রয়েছে। আশা করছি সবাই নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারবে।