যমুনা ফিউচার পার্কে হুর ও মেট্রো ফ্যাশনে উন্নতমানের পোশাক
ইন্দো-ওয়েস্টার্ন ও কাশ্মীরি পোশাকে ক্রেতার নজর

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৭ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪০ পিএম

দেশি-বিদেশি সব ব্র্যান্ড একসঙ্গে থাকায় ক্রেতার পছন্দের শীর্ষে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্ক। ঈদ ঘিরে সব শ্রেণির ক্রেতারা ভিড় করছেন এই শপিংমলে। এক শোরুম থেকে আরেক শোরুম ঘুরে কিনছেন হাল ফ্যাশনের পোশাক। দেশের শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড হুর ও মেট্রো ফ্যাশনে ছিল ক্রেতাদের ভিড়। প্রতিষ্ঠান দুটি ইন্দো-ওয়েস্টার্ন, কাশ্মীরিসহ ১৫-২০ ধরনের কালেকশন এনেছে। তাই নতুন ডিজাইন ও উন্নতমানের পোশাক পেয়ে খুশি ক্রেতা।
এদিকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সুবিশাল এই শপিংমলে ভিড় থাকলেও রোজা রেখে ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করতে পারছেন। এছাড়া এক ছাদের নিচে পোশাক ছাড়াও গয়না, কসমেটিকস, ক্রোকারিজ, জুতা, পারফিউমসহ সব ধরনের পণ্য থাকায় ঈদ ঘিরে জমজমাট যমুনা ফিউচার পার্ক।
শুক্রবার ছুটির দিন সকাল থেকেই ছিল ক্রেতার আনাগোনা। বিকাল নাগাদ লোকে লোকারণ্য হয় চারপাশ। ইফতারের আগেই ব্যস্ততা বাড়ে বেচাকেনায়। সন্ধ্যায় অনেকে শপিংমলের ফুডকোর্টে ইফতার সেরে আবার কেনাকাটায় মেতে ওঠেন। ইফতারের পর ফের ঢল নামে আস্থার শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্কে। অনেক রাত পর্যন্ত চলে কেনাকাটা। এ সময় ইনফিনিটি, কে-ক্রাফট, অঞ্জন’স, আড়ং, জিন্স অ্যান্ড কোম্পানি, টুয়েলভ, রেড, জেন্টল পার্ক, টিন’স ক্লাব, প্লাস পয়েন্ট, কান্ট্রি বয়, রেঞ্জ, লা রিভ, আর্টিসান, টপ টেন পোশাকের ব্র্যান্ড ও শপগুলোয় প্রচুর ক্রেতাসমাগম দেখা যায়।
এদিকে যমুনা ফিউচার পার্কে ঈদ কেনাকাটায় আকর্ষণীয় ক্যাম্পেইনের আয়োজন করেছে স্বনামধন্য শিল্পগোষ্ঠী যমুনা গ্রুপ। ঈদ ঘিরে যমুনা ফিউচার পার্কে কেনাকাটা করে কোটি টাকার উপহার জেতার সুযোগ করে দিয়েছে। আর এ অফারের আওতায় শপিংমলের যে কোনো শোরুম থেকে সর্বনিম্ন ২০০০ টাকার কেনাকাটা করলেই থাকছে টিভি, ফ্রিজ, ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক পণ্যসহ নানা ধরনের আকর্ষণীয় উপহার জেতার সুযোগ। এই ক্যাম্পেইন চলবে চাঁদরাত পর্যন্ত। ক্রেতারা যাতে সহজে উপহার পেতে পারেন, সেজন্য শপিংমলের সেন্টার কোর্টে গিফটের পৃথক বুথ করা হয়েছে। পণ্য ক্রয়ের রসিদ নিয়ে সেখানে থাকা কিউআর কোড দিয়ে তথ্য দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতা উপহার জিতলে বুথ থেকে সংগ্রহ করতে পারছেন। এতে ক্রেতাদের ঈদ আনন্দে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা।
বিকালে দেশের শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড হুর ও মেট্রো ফ্যাশনে গিয়ে দেখা যায়, নানা বয়সি ক্রেতার আনাগোনা। বাহারি ডিজাইনের পোশাক পছন্দে ব্যস্ত সবাই। মা-বাবার সঙ্গে এসেছে পরিবারের ছোট সদস্যও। গুটি গুটি পায়ে হেঁটে পছন্দ করছে জামা। মেট্রো ফ্যাশনের অ্যাসিস্টেন্ট ম্যানেজার কবির হোসেন যুগান্তরকে বলেন, এবারের ঈদ ঘিরে নতুনভাবে ১৫-২০ ডিজাইনের পোশাক আনা হয়েছে। এর মধ্যে সারারা-গারার, বেনারসি থ্রি-পিস, লং গাউন, কটি থ্রি-পিস, ইন্দো-ওয়েস্টার্ন টু-পিস, কাপ্তান টু-পিস, আফগান টু-পিস, কটি স্কার্টসহ বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক প্রদর্শন করা হয়েছে। ক্রেতারা সব ধরনের পোশাক পছন্দ করছে। প্রথম রোজা থেকেই বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে ক্রেতার সবচেয়ে বেশি নজর ইন্দো-ওয়েস্টার্ন পোশাকে।
এই শোরুমে গুলশান-১ থেকে আসা সায়মা আক্তার যুগান্তরকে বলেন, যমুনা ফিউচার পার্কে এক ছাদের নিচে সব ব্র্যান্ড থাকায় কেনাকাটায় কোনো চিন্তা করতে হয় না। এর মধ্যে আমার পছন্দের ব্র্যান্ড মেট্রো। তাদের পোশাক অনেক উন্নতমানের। তাই এখান থেকেই ঈদের পোশাক কেনা হয়।
দেশের শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড হুর শোরুমের শপ ম্যানেজার মো. রাজিব হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ঈদ ঘিরে আমাদের শোরুমে প্রতি সপ্তাহেই নতুন নতুন কালেকশন আনা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ঈদ ঘিরে নতুন ১৫-১৬ ধরনের নতুন ডিজাইনের পোশাক প্রদর্শন করা হয়েছে। ক্রেতার আস্থা থাকায় প্রথম রমজান থেকেই তারা ভিড় করছেন। পছন্দ করে পোশাক কিনে বাড়ি ফিরছেন।
তিনি বলেন, এক্সক্লুসিভ থ্রি-পিস, হুরাম থ্রি-পিস, কাশ্মীরি থ্রি-পিস ও কুর্তি ক্রেতাদের জন্য প্রদর্শন করা হয়েছে। সব ধরনের পোশাক ক্রেতারা পছন্দ করছেন। তবে বেশি নজর কাশ্মীরি থ্রি-পিসে। এছাড়া ছেলেদের কাবলি কটি পাঞ্জবি প্রদর্শন করা হয়েছে। ক্রেতাদের পছন্দসই হওয়ায় বিক্রিও ভালো হচ্ছে। তিনি জানান, মেয়েদের পোশাক ২৭০০-৬০০০ টাকা এবং ছেলেদের পোশাক ৩৩০০-৪৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।
এই শোরুমে উত্তরা ১০নং সেক্টর থেকে আসা ন্যান্সি যুগান্তরকে বলেন, হুরের পোশাক চোখ বন্ধ করে নেওয়া যায়। কারণ, তাদের কাপড়ের মান অনেক ভালো। হাল ফ্যাশনের ডিজাইন এবং দামের তুলনায় মান অনেক ভালো। তাই পরিবারের সবার জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছি।
দুপুরে কথা হয় খিলগাঁও থেকে আসা মো. জামিলের সঙ্গে। তিনি যুগান্তরকে বলেন, যমুনা ফিউচার পার্ক উদ্বোধনের পর থেকে আমি এখান থেকে কেনাকাটা করি। কারণ, এখানে এক ছাদের নিচে সবকিছু পাওয়া যায়। ঈদ ঘিরে পরিবারের সবার জন্য কিছু কেনাকাটা করছি।