শহিদদের গ্রাফিতি মোছার প্রতিবাদে উত্তরায় বিক্ষোভ

উত্তরা পূর্ব থানা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:১৯ পিএম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলি ও আওয়ামী লীগ এবং নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের হামলায় নিহত শহিদদের গ্রাফিতি মুছে ফেলায় আওয়ামী দুর্বৃত্ত ও তাদের দোসরদের গ্রেফতার করে বিচারের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গণমিছিল করেছে ছাত্র-জনতা।
শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের আবদুল্লাহপুর এলাকার পলওয়েল কনভেনশন সেন্টারের সামনে থেকে ছাত্র-জনতার মিছিলটি শুরু হয়। এ সময় তাদের সঙ্গে যোগ দেন বিশ্ব ইজতেমায় জুমার নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লিরা।
মিছিলে আসা ছাত্র-জনতা জানায়, আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা একের পর এক নিহত শহিদদের গ্রাফিতি মুছে ফেলেছে। উত্তরখানের ময়নারটেক স্কুল, দক্ষিণখান, কাওলা, বিএনএস সেন্টার, প্রিয়াংকা সিটি, দিয়াবাড়ী কাঁচকুড়া, আবদুল্লাহপুরসহ উত্তরার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও দেয়ালে আঁকা জুলাই স্মৃতির গ্রাফিতি মুছে ফেলেছে তারা।
আরও জানা যায়, গত ২৩ জানুয়ারি দুর্বৃত্তরা মুগ্ধ মঞ্চে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদদের ছবি ছিঁড়ে ফেলে, সেই সঙ্গে কালো কালি দিয়ে মীর মুগ্ধ মঞ্চের নাম ঢেকে দেয়। এসব ঘটনার প্রতিবাদে শহিদ মীর মুগ্ধ মঞ্চের সামনে শিক্ষার্থীরা মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে উত্তরার সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
খবর পেয়ে শুক্রবার দুপুরে শহিদ মীর মুগ্ধ মঞ্চ পরিদর্শন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
এছাড়াও গত ২৬ জানুয়ারি উত্তরখান ময়নারটেক স্কুলের দেয়ালের গ্রাফিতি মুছে ফেলায় ২৭ জানুয়ারি দুপুরে উত্তরখান মাজার চৌরাস্তায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
আওয়ামী দুর্বৃত্ত কর্তৃক গ্রাফিতি মুছে ফেলাসহ নাশকতার প্রতিবাদে এবং দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলের সময় স্লোগানে তারা বলেন, ‘আবু সাইদ মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ, দিয়েছি তো রক্ত আরও দেব রক্ত, আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে হবে নিষিদ্ধ। আওয়ামী লীগের গুন্ডারা রাজপথে থাকিস না, রাজপথে নামলে পিঠের চামড়া থাকবে না, আওয়ামী লীগের আস্তানা জ্বালিয়ে দাও পুরিয়ে দাও, ছাত্রলীগের আস্তানা ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও, আবু সাঈদ মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ, ছাত্রলীগ-যুবলীগ হুঁশিয়ার সাবধান, রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়, আপস না সংগ্রাম- সংগ্রাম সংগ্রাম।’
অপরদিকে উত্তরায় জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিলে হাসিনা ও তার দোসরদেরকে অবিলম্বে বিচারের মুখোমুখি করতে বলেন দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় শহিদ মীর মুগ্ধ মঞ্চসহ উত্তরার বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী দুর্বৃত্ত কর্তৃক নাশকতার প্রতিবাদে এবং জুলাই-আগস্ট গণহত্যার খুনিদের গ্রেফতার করে বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘এ সরকারের কাছে জনগণের বড় দাবি ছিল তারা জুলাই-আগস্টের গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্টদের বিচার করবে। ফ্যাসিবাদের বিচারের দীর্ঘসূত্রিতাই ফ্যাসিবাদকে নতুন কর্মসূচি দেওয়ার দুঃসাহস দিয়েছে। অবিলম্বে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদেরকে বিচারের মুখোমুখি করুন।’
এ সময় স্থানীয় কয়েকজন রাজনীতিবিদ বলেন, ‘জনমনে আতঙ্ক ছড়াতে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসররা এসব অপকর্ম করছে।’