ছয় বছরে ‘হোলসেল ক্লাব’
ব্যবসা নয়, ক্রেতার সেবায় যমুনার হাইপার মার্কেট
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫৭ পিএম
ছবি: যুগান্তর
দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্কের হাইপার মার্কেট ‘হোলসেল ক্লাব’ মঙ্গলবার ছয় বছরে পদার্পণ করেছে। বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে গ্রাহকদের জন্য থাকছে ‘শপিং ফেস্টিভ্যাল’। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটি ক্রেতাদের ধারাবাহিকভাবে বিশ্বমানের পণ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে। ইউরোপ-আমেরিকার আদলে এই মার্কেটের মাধ্যমে দেশের মানুষের কাছে পাইকারি মূল্যে ভেজালমুক্ত আন্তর্জাতিকমানের নিত্যপণ্য পৌঁছে দিচ্ছে স্বনামধন্য গ্রুপ অব কোম্পানিজ ‘যমুনা গ্রুপ’। ব্যবসায়িক চিন্তা নয়, সেবার লক্ষ্য নিয়েই ক্রেতার কাছে পণ্য সরবরাহ করছে হোলসেল ক্লাব। তাই পণ্য ও সেবার মানে সন্তুষ্ট ক্রেতা।
২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর যুমনা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত মো. নুরুল ইসলাম এই হাইপার মার্কেট উদ্বোধন করেন। তারই হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানটি এখন পরিচালনা করছেন হোলসেল ক্লাব ও যমুনা গ্রুপের অন্যতম পরিচালক সোনিয়া সারিয়াত। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তিনি বলেন, পঞ্চম বর্ষপূর্তি হোলসেল ক্লাবের জন্য অনন্য এক মাইলফলক। গ্রাহকদের সেরা অভিজ্ঞতা দেওয়ার জন্য আমরা সর্বদাই কাজ করে যাচ্ছি। বিনামূল্যে মেম্বারশিপ কার্ড দেওয়া গ্রাহকদের সন্তুষ্টির প্রতি হোলসেল ক্লাবের যে প্রতিশ্রুতি তারই বহিঃপ্রকাশ। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতেও শপিংয়ে গ্রাহকদের দেশসেরা অভিজ্ঞতা দেওয়ার পাশাপাশি দেশি-বিদেশি পণ্যের বাজারের সেরা অফার দিতে পারব।
পঞ্চম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার যমুনা ফিউচার পার্কের হোলসেল ক্লাবে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে হোলসেল ক্লাব ও যমুনা গ্রুপের অন্যতম পরিচালক সোনিয়া সারিয়াতসহ গ্রুপ পরিচালক এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। এ সময় নতুন একটি ব্র্যান্ডের কাউন্টার উদ্বোধন করা হবে। হোলসেল ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানায়, হোলসেল ক্লাবের পঞ্চম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে গ্রাহকদের জন্য এক্সাইটিং অফার নিয়ে মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে ‘শপিং ফেস্টিভ্যাল’। যেখানে হোলসেল ক্লাবের দুই হাজারেরও বেশি দেশি-বিদেশি পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ৭৫ শতাংশ মূল্যছাড় থাকছে। আর এ আয়োজন চলবে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। তাছাড়া গ্রাহকদের জন্য থাকছে র্যাফেল ড্র। আজ থেকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ২০০০ টাকার কেনাকাটায় গ্রাহকরা এই র্যাফেল ড্রতে অংশ নিতে পারবেন। ১ নভেম্বর ড্র অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে রেফ্রিজারেটর, ডিপ ফ্রিজ, এয়ারকন্ডিশনসহ আকর্ষণীয় পুরস্কার জেতার সুযোগ রয়েছে। পাশাপাশি আজ থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত ১৫০০ টাকার শপিং করলে গ্রাহকরা পাবেন ফ্রি স্টার মেম্বারশিপ কার্ড। এছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ মেম্বারশিপ কার্ডের জন্য থাকছে ফ্রিতে নবায়ন করার সুযোগ।
কর্তৃপক্ষ জানায়, হোলসেল ক্লাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ক্লাবের ভেতরে বিভিন্ন কোম্পানির নিত্যনতুন পণ্যের ফ্রি প্রদর্শন এবং বিনামূল্যে স্বাদ গ্রহণ করার সুযোগ থাকছে। নির্দিষ্ট পরিমাণের কেনাকাটায় থাকছে যমুনা ফিউচার পার্কে ফ্রি পার্কিং ব্যবস্থা। রয়েছে আমেরিকা থেকে আমদানিকৃত বিশ্বমানের আসবাবপত্রের ওপর বিশেষ মূল্যছাড়।
এদিকে ইউরোপ-আমেরিকাসহ উন্নত বিশ্বের নামিদামি মার্কেটের আদলে স্বপ্নের এ মার্কেটের আয়তন প্রায় ২ লাখ বর্গফুট। এখানে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সব ধরনের পণ্য একই ছাদের নিচে সহনীয় মূল্যে পাওয়া যাচ্ছে। সবমিলে এখানে দেশি-বিদেশি ৫০ হাজারের বেশি পণ্য রয়েছে। এর মধ্যে ৩০ হাজারের বেশি আমদানি করা। এসব পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ালমার্ট, কস্টকো এবং স্যাম’স ক্লাবের মতো আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড থেকে নিজস্ব তত্ত্বাবধানে সরাসরি আমদানি হচ্ছে। হোলসেল ক্লাবের প্রতিশ্র“তি হলো গুণগতমানের পণ্য সহনীয় দামে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। কসমেটিক্স, খাবার আইটেম, কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে একজন মানুষের ব্যবহৃত সব পণ্য পাইকারি দরে পাওয়া যাচ্ছে।
দেশের সবচেয়ে বড় এবং অত্যাধুনিক এই হাইপার মার্কেটে প্রবেশ করেই ক্রেতারা বিস্ময় প্রকাশ করছেন। এখানে থরে থরে সাজানো আছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব ধরনের সামগ্রী। গ্রাহকরা বলছেন কী নেই এখানে! মাছ, মাংস, শাকসবজি, চাল, ডাল থেকে শুরু করে সব ধরনের দৈনন্দিন বাজার, প্রসাধনী, বেকারি আইটেম, ফলমূল, ওষুধ, আসবাবপত্র, রান্নাঘরের সরঞ্জাম, চাদর থেকে শুরু করে ঘরের যাবতীয় পণ্য, শিশুর খাবার, বই, এমনকি পোষা প্রাণীর খাবারও রয়েছে এই মার্কেটে। প্রতিদিনই এখানে ক্রেতা এবং উৎসুক জনতা ভিড় করেন।
হোলসেল ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানায়, ৩৫০টির বেশি ভেন্ডর এবং ১০ হাজারের বেশি সদস্য রয়েছে। ই-কমার্সের মাধ্যমে পণ্য মিলছে এখানে। ফলে দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে হোলসেল ক্লাবের পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক সাড়া মিলছে। প্রতিষ্ঠানটিতে ৩ শতাধিক কর্মী কাজ করছেন। ক্রেতাদের ভিড় এড়াতে রয়েছে ৩০টি ক্যাশ কাউন্টার। যেখানে একসঙ্গে অনেক ক্রেতা বিল পরিশোধ করতে পারছেন। দুই ধরনের মেম্বারশিপ কার্ড রয়েছে। এগুলো হলো স্টার কার্ড এবং এক্সিকিউটিভ কার্ড। ক্লাবের কার্যক্রম সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে। তবে ক্রেতাদের চাহিদা বিবেচনায় তা ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।