অডিটর পদকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার দাবিতে আজও বিক্ষোভ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৯ পিএম
অডিটর পদকে ১১ গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার দাবিতে সোমবারও বিক্ষোভ করেছেন নন-ক্যাডার কর্মচারীরা। এদিন দুপুর পৌনে ১২টা থেকে বেলা প্রায় ১টা পর্যন্ত তারা রাজধানীর কাকরাইলে অডিট ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন।
দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মিছিল নিয়ে অডিট ভবনের সামনে আসেন অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস (নন-ক্যাডার) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এর আগে থেকেই অডিট ভবনের ফটকের সামনে অবস্থান নেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীরা ভবনের সামনে এসে ভেতরে যেতে দেওয়ার অনুরোধ জানান। কিন্তু তাদের ভেতরে যেতে দেওয়া হয়নি।
ভেতরে ঢুকতে না পেরে অডিট ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখান আন্দোলনকারীরা। এ সময় ‘এক পদে দুই গ্রেড, মানি না, মানব না’, ‘দফা এক দাবি এক, অডিটর দশম গ্রেড’—ইত্যাদি স্লোগান দেন।
এর আগে রোববার আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করেছিলেন। তবে আজ তারা সড়ক অবরোধ করেননি। বেলা ১টার দিকে তারা সেখান থেকে চলে যান।
বিক্ষোভকারীরা ‘বৈষম্যবিরোধী কর্মকর্তা ও কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ’ এর ব্যানারে ২০ দফা দাবি–সংবলিত একটি প্রচারপত্র বিলি করেন। এতে পদ্ধতিগত ও প্রশাসনিক বিভিন্ন সংস্কারের দাবি জানানো হয়। তবে আন্দোলনকারীরা বলছেন, এখন তাদের মূল দাবি হলো অডিটর পদকে ১০গ্রেড ঘোষণা করে সরকারি আদেশ জারি করা হোক।
অডিটর আহমেদুর রহমান বলেন, অডিটর পদটি ১১ গ্রেডের। কিন্তু এটিকে দশম গ্রেডে উন্নীত করার বিষয়ে আদালতের রায় আছে। তাদের মূল দাবি, অডিটর পদটিকে পূর্ণাঙ্গভাবে দশম গ্রেডে উন্নীত করে সরকারি আদেশ জারি করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অডিটররা আন্দোলনে নামেন। অন্যদিকে সরকার পতনের পর প্রথম সপ্তাহে ক্যাডার কর্মকর্তাদের একটি অংশ সিএজি নূরুল ইসলামকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ উল্লেখ করে তার পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ করে। তখন অডিটররা (নন-ক্যাডার) সিএজির পক্ষে অবস্থান নেন। তখন সিএজি অডিটরদের দশম গ্রেডে উন্নীত করতে যা যা প্রয়োজন, তাই করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। এ নিয়ে তিনি অডিটরদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকও করেন।
পরে এই গ্রেড পরিবর্তনে সিএজি অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবও পাঠান। এই প্রস্তাব অর্থ বিভাগে গিয়ে আটকে যায়। এরপর অডিটররা প্রথমে অর্থসচিবের পদত্যাগ দাবি করেন। রোববার তারা সিএজির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমে সড়ক অবরোধ করেন। ক্যাডার কর্মকর্তারাও সিএজির পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
অডিটরদের বেতন গ্রেড বৃদ্ধির আন্দোলন ঘিরে ক্যাডার ও নন–ক্যাডার কর্মকর্তাদের দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে সরকারের হিসাব ও নিরীক্ষা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে যারা দাপ্তরিক কাজ যথাযথভাবে সম্পাদন করছেন না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে অফিস আদেশ জারি করেছে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের কার্যালয়।
ওই আদেশে বলা হয়, সংশ্লিষ্টদের অবিলম্বে নিজ নিজ কর্মস্থলে দাপ্তরিক কার্যক্রম সম্পাদন করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তারপরও কিছু কর্মচারী এখন পর্যন্ত দাপ্তরিক কার্যক্রম যথাযথভাবে সম্পাদন করছেন না, যা শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থি।
অফিস আদেশে আবারও সবাইকে নিজ নিজ দপ্তরে কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করার নির্দেশ দিয়ে বলা হয়, এই নির্দেশ অমান্যকারী কর্মচারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট অফিস প্রধানদের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।