Logo
Logo
×

রাজধানী

রিকশার পাদানিতে ঝুলতে থাকা গুলিবিদ্ধ নাফিজের নামে ভবন

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২৫ পিএম

রিকশার পাদানিতে ঝুলতে থাকা গুলিবিদ্ধ নাফিজের নামে ভবন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৪ আগস্ট বিকাল সাড়ে চারটার দিকে ফার্মগেটের পদচারী-সেতুর নিচে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ হন বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী গোলাম নাফিজ। গুলিবিদ্ধ গোলাম নাফিজকে পুলিশ যখন রিকশার পাদানিতে তুলে দেয়, তখনও তিনি রিকশার রডটি হাত দিয়ে ধরে রেখেছিলেন। যে ছবিটি কাঁদিয়েছিল পুরো বাংলাদেশকে। 

১৮ আগস্ট নাফিজের নিজ স্কুল বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজে গোলাম নাফিজসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সকল শহিদদের স্বরণে আয়োজিত স্মরণসভায় ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক, প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীরা `শহিদ গোলাম নাফিজ' এর নামে এ প্রতিষ্ঠানের একটি ভবনের নামকরণের দাবি করেন। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক-কর্মচারী-শিক্ষার্থীরা সে দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে। 

এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুপুর তিনটায় রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল এন্ড কলেজে শহিদ গোলাম নাফিজ ভবনের নামফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ  ইসলাম। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহীদ গোলাম নাফিজের বাবা মো. গোলাম রহমান। 

অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে ছিলেন বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল এন্ড কলেজ গবর্নিং বডির সভাপতি এবং ঢাকার ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। 

উদ্বোধনী বক্তৃতায় অধ্যক্ষ ড. মো. মশিউর রহমান জানান, নাফিজ অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিল।  সে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেছে। নাফিজের রক্তে আমরা নতুন এক রাষ্ট্র পেয়েছি। আমাদের প্রতিষ্ঠানে পশ্চিম পাশে নির্মিত নতুন ভবনটি শহীদ গোলাম নাফিজের নামে করতে পারায় আমরা গর্বিত। 

বক্তব্যে নাফিজের বাবা গোলাম রহমান জানান, গুলি খাওয়ার পর বেশ কিছুক্ষণ আমার ছেলে জীবিত ছিল। কিন্তু পুলিশ এবং স্থানীয় ছাত্রলীগের বাধায় আমার ছেলেকে চিকিৎসার জন্য সময়মতো হাসপাতালে নিতে পারেনি কেউ। ছেলে হারানোর তীব্র ব্যথা আমি হারে হারে টের পাচ্ছি। ছেলের চিন্তায় আমি দিন দিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। সকলের কাছে দোয়া চাই আল্লাহ যেন আমার ছেলেকে জান্নাতবাসী করে এবং আমাকে সুস্থতা দান করে। 

নামফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম জানান, আপনারা এই মাত্র আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে। আসলে এই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড দেশের আপাময় জনতা। আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড যারা রক্ত দিয়েছে এবং শহিদ হয়েছে তারা। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মতো এ আন্দোলন কি আপনারা একটি দল এবং একটি ব্যক্তির করে ফেলবেন না। এ আন্দোলনে সফলতা সকলের। যারা এ আন্দোলনের মানুষ হত্যায় জড়িত তাদের সকলকে আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবো। যাতে বিশ্বে আর কোনো ফ্যাসিস্ট এ ধরনের মানুষ হত্যার  সাহস না পায়। যারা এ আন্দোলনে আহত এবং নিহত হয়েছে তাদের দেখভালের জন্য  ড.ইউনুস ও মুগ্ধের ছোট ভাই স্নিগ্ধের নেতৃত্বে ইতোমধ্যে ১০০ কোটি টাকার ফান্ড গঠন করা হয়েছে। আপনাদের সকলকে এই ফান্ডে সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম