রাজধানীর পুরান ঢাকার ধোলাইখালের ঋষিকেশ দাস লেনের একটি বাসা থেকে লিপিকা জুলিয়ানা গোমেজ (৫৫) নামে এক নারীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

বুধবার বিকালে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। লিপিকা জুলিয়ানা গোমেজ নটর ডেম কলেজের অফিস সহকারী ছিলেন বলে জানা গেছে।

পুলিশ বলছে, লিপিকার মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, হত্যাকারী তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে গেছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, ঋষিকেশ দাস লেনের একটি পাঁচতলা বাড়ির চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাটে একা থাকতেন লিপিকা। ২০ বছর আগে মাহবুবুল আলম নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে তার বিয়ে হয়। পরে তাদের বিচ্ছেদ হয়। লিপিকার কোনো সন্তানসন্ততি নেই। লিপিকার বাড়ি ঢাকা জেলার দোহার উপজেলায়। সেখানে তার বৃদ্ধা মা থাকেন। তার একমাত্র ভাই থাকেন বিদেশে।

সূত্রাপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বৃহস্পতিবার সকালে গণমাধ্যমকে জানান, বুধবার বিকালে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন আসে। ফোন পেয়ে সূত্রাপুর থানার পুলিশ বাড়িটিতে যায়। ফ্ল্যাটের একটি কক্ষের খাটের ওপর লিপিকার রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। তার মাথার বাঁ পাশে ধারালো অস্ত্রের আঘাত দেখা যায়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠিয়েছে।

অধ্যক্ষের বরাত দিয়ে ওসি জানান, গত মঙ্গলবার লিপিকা তার কর্মস্থল নটর ডেম কলেজে যাননি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ যোগাযোগ করে তার মুঠোফোন বন্ধ পান। বুধবার অধ্যক্ষ তার ব্যক্তিগত সহকারী জনি চার্লস গোমেজকে লিপিকার খোঁজ নিতে ভাড়া বাসায় পাঠান। জনি সেখানে গিয়ে বাড়ির তত্ত্বাবধায়ককে সঙ্গে নিয়ে ফ্ল্যাটে যান। ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ পাওয়া যায়। তত্ত্বাবধায়কের কাছে থাকা বিকল্প চাবি দিয়ে তালা খুলে ফ্ল্যাটে ঢোকেন তারা। এ সময় তারা লিপিকাকে খাটের ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। তার মুখমণ্ডল ও কপালের ওপর বালিশ চাপা দেওয়া। তারা বালিশটি সরিয়ে দেখতে পান, লিপিকার মাথা রক্তাক্ত। মাথার বাঁ পাশে কোপের চিহ্ন। তারা তখন ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লিপিকার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে।

সাইফুল ইসলাম আরও জানান, লিপিকা যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন, সেই বাড়িতে কোনো নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন না। প্রত্যেক ভাড়াটের কাছে ভবনে ঢোকার প্রধান ফটকের তালার চাবি আছে। যে যার মতো ঢুকে তালা মেরে যেতেন। ধারণা করা হচ্ছে, মঙ্গলবার লিপিকার পরিচিত কেউ তার সঙ্গে বাসায় আসেন। তিনি তাকে কুপিয়ে হত্যা করে চলে যান। লিপিকার মাকে খবর দেওয়া হয়েছে। তিনি থানায় এলে মামলা নেওয়া হবে।