Logo
Logo
×

রাজধানী

যমুনা ফিউচার পার্কে খুদেদের আঁকাআঁকি

Icon

শিপন হাবীব

প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২৪, ০৯:১২ পিএম

যমুনা ফিউচার পার্কে খুদেদের আঁকাআঁকি

বিদ্যাপসা দেবনাথ, বয়স চার ছুঁইছুঁই। খাতার পেছনের প্রায় ৪-৬ পাতা জুড়ে রঙিন আঁকিবুকি। চারদিকে তার মতো প্রায় অর্ধশত শিশু চিত্রাঙ্কনে ব্যস্ত। ছোট্ট বিদ্যাপসাও মনের সুখে আঁকছে, রঙ করছে। আর তাতেই ধীরে ধীরে ফুটে উঠলো চলমান বর্ন্যার একটি চিত্র। 

এমন অসাধারণ চিত্রাঙ্গনের আয়োজন করে এশিয়ার সর্ববৃহৎ শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্ক। সহযোগিতায় ছিল নৃত্য রঙ নামের একটি সংগঠন। শনিবার বিকাল ৩টায় পার্কের ৫ তলায় ফিউচার ওয়ার্ল্ডে অনুষ্ঠিত চিত্রাঙ্গন ঘিরে অংশগ্রহণকারী শিশু, তাদের অভিভাবক, শিক্ষকদের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছিল। চিত্রাঙ্কনের পাশাপাশি শিশু কিশোরদের নাচ, গান, আবৃত্তি ও মার্শাল আর্ট প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হয়। 

বাচ্চাদের আঁকা, রঙ করার প্রবণতা একটু বেশিই থাকে। ছোট্ট বাচ্চাকে বড় করে তুলতে গিয়ে তাই এ ধরনের নানা অনুষ্ঠান আয়োজন খুবই জরুরি। অনুষ্ঠানে প্রায় অর্ধশতাধিক শিশু ইচ্ছে মতো চিত্রাঙ্কন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সুযোগ পায়। 

নৃত্য রঙের শিক্ষক মেহজাবিন যুগান্তরকে বলেন, এশিয়ার সর্ববৃহৎ শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্কে এমন একটি অনুষ্ঠান হচ্ছে ভাবতেই মনটা ভরে যায়। আমরা শিশুদের উন্নয়নে কাজ করছি। এ আয়োজনে যমুনা গ্রুপের সহযোগিতা, আমাদের আরও সমৃদ্ধ করবে। শিশুসহ অভিভাবকরাও আনন্দিত। 

নৃত্য রঙ সাংস্কৃতিক উন্নয়নে কাজ করছে। রাজধানীর মিরপুর এলাকায় এর একটি শাখা রয়েছে। দ্বিতীয় বৃহত্তর শাখাটি শনিবার যমুনা ফিউচার পার্কের ৫ম তলার ফিউচার ওয়ার্ল্ডে উদ্বোধন করা হয়। 
উদ্বোধন হওয়া এ সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে ফিউচার ওয়ার্ল্ড’ এ প্রতি সপ্তাহের শনি, রোব, সোম ও বৃহস্পতিবার বিকালে নিয়মিতভাবে চিত্রাঙ্কনসহ সাংস্কৃতিক শিক্ষা হাতে কলমে শেখানো হবে। শিশু-কিশোরদের এ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণে সংগঠনটির পক্ষে থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

জান্নাতুল কেয়া নামের এক অভিভাবক জানান, তিনি তার কন্যা সন্তানকে নিয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় এসেছেন। যমুনা ফিউচার পার্কে এসে মনটা ভরে গেল। ফিউচার ওয়ার্ল্ডের ভেতরটা বিশাল বড়। শিশুরা খুবই আনন্দিত হয়েছে। শিল্প চর্চার পাশাপাশি শিশুরা পার্ক ঘুরে দেখছে। এতে শিশুদের মনন ও মেধা বিকশিত হবে। 

তিনি বলেন, যমুনা ফিউচার পার্কে নৃত্য রঙের এ আয়োজন নিশ্চয় শিশু-কিশোরদের মাঝে সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক মূল্যবোধ গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।

 

শিক্ষকরা বলেন, যমুনা ফিউচার পার্কের মতো বৃহৎ শপিংমলে নৃত্য রঙের শাখা উদ্বোধন হয়েছে। এখানে শিশু-কিশোরদের উপচে পড়া ভিড় হবে। অভিভাবকরাও নিশ্চিন্তে তাদের সন্তানদের নিয়ে সংস্কৃতি চর্চায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। বাচ্চাদের খামখেয়ালি আঁকিবুকি মানেই মেধার বিকাশ হওয়া। বিজ্ঞান বলছে, ওই ছোট্ট ছোট্ট মস্তিস্কে অবিরাম তোলপাড় করা হাজারো কল্পনার বহিঃপ্রকাশ হল, চিত্রাঙ্কন। আঁকিবুকি আসলে ইনফ্যান্ট থেকে বড় ইন্ডাষ্ট্রি। যখন কাউকে কোনও কাগজ আর পেন বা রঙ দিয়ে দেওয়া হয়, তখন মস্তিস্ক এবং মনের ভাবনা, অনুপ্রেরণা আর কল্পনার দরজা খুলে যায়। 

শিক্ষকরা জানান, শুধু পড়াশোনার ক্ষেত্রেই নয়, অনেক সময়ে জীবনের নানা জটিল মোড়ে দাঁড়িয়ে এই চিত্রাঙ্কন সাহায্য করে নতুন দিশা দেখাতে। এক টুকরো কাগজে নিচের স্বপ্ন, আশা, আকাঙ্খা থেকে শুরু করে না বলা সব কথার প্রকাশ ঘটাতে পারে রং-তুলি। এর ফলে হতাশা যেমন পাততাড়ি গোটায়, তেমনই জীবন ভরে ওঠে নতুন উদ্যম এবং ইচ্ছায়। চিত্রাঙ্কন শেখার ও শেখানোর জনপ্রিয়তা ক্রমশ বাড়ছে। বিদেশে তো বটেই, যমুনা ফিউচার পার্কেও লেগেছে রং-তুলির জোয়ার। 

চিত্রাঙ্কনের এক শিক্ষক জানান, অভিভাবকরা বাচ্চার আঁকার প্রবণতা কী ভাবে সামলেবে-সেটা নিতান্তই অভিভাবকদের উপর নির্ভর করে। কিন্তু তার পরেও, বিজ্ঞানের অথবা সাহিত্যের কোনও তত্ত্বেও মন না বসলে কারও বাচ্চা যদি ক্লাসনোটের খাতাতেই আঁকিবুকি কাটতে শুরু করে-তা হলে হতাশ হলে চলবে না। কে জানে, এর মধ্যেই হয়তো লুকিয়ে আছে ভবিষ্যতের মাসিত কিংবা গঘ হওয়ার রহস্য। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম