
দীর্ঘ ২৪ বছর পর কারামুক্ত হয়েছেন ইমামুল হাসান হেলাল। গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগার-৪ থেকে জামিনে মুক্ত হন তিনি। কোনো মামলায় সাজা ছাড়াই দীর্ঘ সময় তাকে কারাগারেই থাকতে হয়েছে। কেন তাকে এতদিন সাজা ছাড়া কারাগারে থাকতে হলো, তার কারণ জানা গেল হেলালের বড় ভাইয়ের মুখ থেকে।
২০০০ সালের ১২ জানুয়ারি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার তাকে গ্রেফতার করেছিল। সেই থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।
তার বড় ভাই ওয়াহিদুল হাসান দিপু যুগান্তরকে বলেন, সব ষড়যন্ত্র ভেদ করে আমরা আমার ভাইকে বুকে পেয়েছি। আল্লাহর কাছে লাখো শুকরিয়া আদায় করছি।
দিপু বলেন, ‘ইমামুল হাসান হেলাল ছাত্রদলের মোহাম্মদপুর থানার সাধারণ সম্পাদক ও মহানগরের যুগ্ম সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক ছিল। বিএনপি ঘোষিত সব কর্মসূচি হেলালের নেতৃত্বে মোহাম্মদপুর এলাকায় সম্পন্ন হতো। তোফায়েল আহমেদ জোসেফসহ আওয়ামী লীগের অনেকেই তা সহ্য করতে পারেনি। কোনোভাবে আটকাতে না পেরে ২০০০ সালের ১২ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নির্দেশে হেলালকে মিথ্যা-ভিত্তিহীন মামলায় গ্রেফতার করা হয়।’
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে গ্রেফতার হওয়া হেলাল যখন কারাগারে ওই অবস্থায় ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম ঘোষণা করে পুলিশ। ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বরের সেই তালিকায় হেলালের নামও ছিল।
বড় ভাই দিপু বলেন, আওয়ামী লীগের পর চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসলে বিএনপির কিছু নেতার ষড়যন্ত্রে হেলালের কারামুক্তি আটকে যায় এবং তাকে সন্ত্রাসী তালিকায় নাম উঠায়। ধারাবাহিকভাবে ওয়ান ইলেভেন এবং আওয়ামী লীগ কৌশল করে ক্ষমতা দখল করে। এরমধ্যে হেলালের বিরুদ্ধে যত মামলা হয়েছে, সবগুলো মামলায় আদালত তাকে খালাস দেয়। পরিবেশ পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকা এবং জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে দুই-তিনটি মামলায় জামিন না চেয়ে হেলাল কারাগারকেই নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নেয়।’
তিনি বলেন, ‘৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে গেলে তার বিরুদ্ধে যেসব মামলা ছিল, সেই সব মামলায় জামিন হয়। শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের প্রতিহিংসা এবং কিছু মানুষের ষড়যন্ত্রে আমার ভাইয়ের নামের আগে সন্ত্রাসী লাগানো হয়েছে। এই করে আমার ভাইকে ২৪টি বছর আমাদের থেকে দূরে রাখা হয়েছে।’