ডেমরায় যুবদল নেতাকে হত্যা, গণপিটুনিতে নিহতের নাটক সাজানোর চেষ্টা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৪, ১০:৩৪ পিএম
রাজধানীর ডেমরায় মো. সাঈদ (৩২) নামে ডিএসসিসির ৬৭ নং ওয়ার্ড যুবদলের আহ্বায়ককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার রাতে ডেমরার বাহির টেংরা কোবা মসজিদসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পূর্বপরিকল্পিতভাবে খুনিরা এ ঘটনাকে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহতের নাটক সাজিয়েছে বলে সাঈদের পরিবারের অভিযোগ। মৃতের স্ত্রী মোসা. বিথী শনিবার বিকালে ডেমরা থানায় অভিযুক্ত ১৭ জন নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম বলেন, ময়নাতদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে এ মৃত্যুর আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাঈদের মামা মো. বাবুল ও মাহাবুব মাতব্বর বলেন, এলাকার কিছু যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর সঙ্গে ছিল তার পূর্ব বিরোধ ছিল। তাই হাসিনার সরকারের পতনের দিনই সাঈদ এলাকায় এসে প্রতিপক্ষের ক্লাব ভাঙচুর করেন। তখন থেকেই ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিপক্ষরা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ওই দিনই তারা সাঈদের ও তার বোন হ্যাপির বাড়িঘরে হামলা চালায়।
এ ঘটনায় স্থানীয় শুক্কুর আলীর ছেলে ও মাদক মামলার আসামি জাহিদুল, সৈয়দ আলীর ছেলে আরিফ, নবী ও আইয়ুব আলী, আলমাসের ছেলে জিম বাবু, আমির হোসেনের ছেলে রনি, সোনামিয়া মাতবরের ছেলে আনোয়ার, হাকিমের ছেলে সালাউদ্দিন ও বিল্লাল, ফজল ভান্ডারির ছেলে আকবর ও আজগর, বেপারির ছেলে সালাম ও বিল্লাল, মরন মিয়ার ছেলে সেন্টু রুবেল ও শাহজাহানের ছেলে শুভসহ অজ্ঞাত আরও অনেকে মিলে সাঈদকে হত্যা করে। পরে তারা গণপিটুনিতে ডাকাত নিহত বলে নাটক সাজানোর চেষ্টা করে।
নিহতের মামারা আরও জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার পরে এলাকায় বিএনপির মিটিং শেষে সাঈদ তার বোবা মায়ের (জোসনা বেগম) সঙ্গে বাড়িতে দেখা করে বাইরে আসেন। এ সময় ওরিয়েন্টাল স্কুলসংলগ্ন কালভার্টে উপরোক্ত অভিযুক্তরা পরিকল্পিতভাবে সাঈদের মাথায় কোপ দিয়ে, লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করে ও চোখ উপড়ে ফেলে। পরে তারা রাতের আঁধারে সাঈদকে আমতলা-তালতলা কোবা মসজিদের সামনে নিয়ে দুটি মসজিদের মাইকে মাইকিং করে, এলাকায় ডাকাত পড়েছে। এ সময় এলাকাবাসী নানা ধরনের দেশীয় লোহার অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে বের হন। পরে তারা দেখতে পান, চাপাতি হাতে একটি মৃতদেহ গলিতে পড়ে আছে। এ ঘটনায় হত্যাকারীরা নাটক সাজিয়ে সাঈদ বাহিনীর নামে এলাকার দোকানপাটে ভাঙচুর চালায়। এ সময় খবর পেয়ে সেনাবাহিনী এলে তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে হত্যাকারীরা। পরে সেনাবাহিনীর ৩টি গাড়ি এলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
উল্লেখ্য, ২ বছর আগে বিথীর সঙ্গে বিয়ে হয় সাঈদের। ছোয়াদ নামে তার একটি দেড় বছরের ছেলে আছে।