মিরপুরে কলেজছাত্রের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা
মিরপুর (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ০৯:৫৩ পিএম
কলেজছাত্র আফরিদ ফারুক হৃদয় ছবি: যুগান্তর
রাজধানীর মিরপুরে আফরিদ ফারুক হৃদয় নামে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। ১১ জুন গুরুতর অসুস্থ হলেও রহস্যজনক কারণে পরিবারের কাছে হৃদয় গোপন রাখে বলে জানা গেছে। ১৭ জুন শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় ক্ষত চিহ্ন ছিল।
শিক্ষক ও সহপাঠীদের মতে, হৃদয়কে তারা কখনো অসুস্থ হতে দেখেননি। এত অল্প বয়সে তার মৃত্যু অস্বাভাবিক। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চান তারা।
ওই শিক্ষার্থী রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে আহসানিয়া মিশন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ অধ্যাপক মফিজুর রহমান বলেন, আফরিদ মেধাবী ও শান্তশিষ্ট ছিল। সে নিয়মিত ক্লাস করত।
অধ্যক্ষ আরও বলেন, প্রথমে হৃদরোগে আক্রাত হয়ে ছেলের মৃত্যুর খবর জানান হৃদয়ের বাবা। পরে তার বোন জানান, কোচিং সেন্টারে যাওয়ার পর সেখানে তাকে মারধর করা হয়েছে। শরীরে অনেক দাগ। তার মৃত্যু নিয়ে পরিবারের সদস্যরা বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছেন। তারা একেক সময় একেক রকম কথা বলছেন। তাদের আচরণও রহস্যজনক।
এ ঘটনায় ১৯ জুন রাজধানীর শাহআলী থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়। মামলার বাদী হৃদয়ের বাবা ওমর ফারুক। মামলা সূত্রে জানা গেছে, ১১ জুন সকালে আফরিদকে ডান পা খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখা যায়। সে জানায় তার পায়ের রগে টান লেগেছে। ফার্মেসি থেকে ব্যথানাশক ওষুধ কিনেও সেবন করে সে। পা ঠিক না হওয়ায় ১৫ জুন তাকে পঙ্গু হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক সাতদিনের ওষুধ দেন। পরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতলে নেওয়ার পথে মারা যায় সে।
ওমর ফারুক বলেন, পায়ের রগে টান লাগার কথা শুনে আমরা গুরুত্ব দিইনি। সে হাসপাতালে যেতে চায়নি। মারা যাওয়ার পরে দেখেছি লজ্জাস্থান ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় ক্ষত চিহ্ন। আমার ছেলের কোনো শত্রু নেই। কাকে সন্দেহ করব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হৃদয়ের এক সহপাঠী জানায়, হৃদয়ের সঙ্গে একই প্রতিষ্ঠানের ৯ম শ্রেণির এক ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই ছাত্রীর বাবা বিষয়টি জেনে কলেজে বিচারও দিয়েছিলেন। এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর পেছনে প্রেমঘটিত কারণও থাকতে পারে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও শাহআলী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খন্দকার মনিরুজ্জামান বলেন, কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এখনো ক্লু পাওয়া যায়নি। আরও কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
শাহআলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুজ্জামান বলেন, হৃদয়ের শরীরে যে ক্ষত তা আঘাতের চিহ্ন বলে মনে হয়নি। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।