ডিএসসিসির ৬০ শতাংশ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন হয়েছে: মেয়র
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৪, ১০:৪২ পিএম
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৬০ শতাংশ এলাকার জলাবদ্ধতা গত ৪ বছরে নিরসন হয়েছে বলে দাবি করেছেন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
রোববার মেয়রের দায়িত্বভার গ্রহণের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত ‘উন্নত ঢাকার উন্নয়ন অগ্রযাত্রার ৪ বছর’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন তিনি।
ডিএসসিসি মেয়র বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের সময়ে ডিএসসিসির ৭০ শতাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতা ছিল, এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ১০ শতাংশে। ইতোমধ্যে শ্যামপুর বাণিজ্যিক এলাকা, মিটফোর্ড রোড, নটর ডেম কলেজের সামনের সড়ক, বঙ্গভবনের দক্ষিণ ও পশ্চিম অংশের রাস্তা, বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনের সড়ক, বাংলাদেশ সচিবালয়, লালবাগ রোড, আজিমপুর মোড়সহ অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা ও জলজট সমস্যার সমাধান হয়েছে।
তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসনে ডিএসসিসি খাল, বক্স কালভার্ট ও নর্দমা হতে বার্ষিক সূচি অনুযায়ী বর্জ্য ও পলি অপসারণ করে চলেছে। এছাড়াও জলাবদ্ধতাপ্রবণ ১৬১টি স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ২৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে নিজস্ব অর্থায়নে ১০৯টি স্থানে জলাবদ্ধতা নিরসনে অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন করা হয়েছে। ২৬টি স্থানে অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে এবং বাকি ২৬টি স্থানে কাজ বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যে সংস্থা একসময় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিতে হিমশিম খেত সে সংস্থা এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ, আত্মনির্ভরশীল ও মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়েছে। এই সময়ে সফলতার সঙ্গে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ, বর্জ্য অপসারণ ও জলাবদ্ধতা নিরসনের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে সুশাসন নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি জানান, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে ডিএসসিসি যাচাই-বাছাই শেষে গত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত আমরা এলাকায় ৯ হাজার ৭৬৪ ডেঙ্গু রোগী পেয়েছি (তখন সারা দেশে রোগী ছিল দুই লাখ ৭১ হাজার ১৭৫ জন), যা সারা দেশের মোট রোগীর মাত্র ৩ দশমিক ৬০ শতাংশ। ফলে সফলতার সঙ্গে ডিএসসিসি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি আরও জানান, দায়িত্বভার গ্রহণের প্রথম দিন হতেই করপোরেশনের সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাফিলতি, অনিয়ম, দুর্নীতি দূর করার মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমি শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্রহণ করে তার বাস্তবায়ন কাজ অব্যাহত রয়েছে।
আর্থিক সক্ষমতার বিষয়ে মেয়র তাপস বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে করপোরেশনের রাজস্ব আদায় ছিল মাত্র ৫১৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা, যা ২০২০-২১, ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে যথাক্রমে ৭০৩ কোটি ৩১ লাখ, ৮৭৯ কোটি ৬৫ লাখ ও এক হাজার ৩১ কোটি ৯৭ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত যে রাজস্ব আদায় হয়েছে তা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৫৪ কোটি টাকা বেশি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, কামরাঙ্গীরচরের উন্নয়ন দর্শন ঠিক করে ধাপে ধাপে অগ্রসর হচ্ছে ডিএসসিসি। সেখানে যে উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে, তাতে বেশি মানুষকে বাস্তুচ্যুত হতে হবে না। ভূমিদস্যুরা গুজব ছড়িয়ে ডিএসসিসির উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে। কিন্তু এলাকাবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় করে তার সুরাহা করা হয়েছে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, রাজধানীর জন্য সমন্বিত মাস্টারপ্ল্যান তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এ কাজ যে প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছিল, তারা সে কাজ সঠিকভাবে করতে পারেনি। এজন্য তাদেরকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এখন নতুন করে মাস্টারপ্ল্যান তৈরির কাজ চলছে।