‘গরমে ট্রাফিক পুলিশ কিভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে?’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৪৬ পিএম
তীব্র তাবদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ। বর্তমান পরিস্থিতিতে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, সাংবাদিকরাও আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন- যেখানে রোদে এক মিনিট দাঁড়িয়ে থাকা যায় না সেখানে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা কিভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দায়িত্ব পালন করেন?
তিনি বলেন, আমি বলেছি, ঘণ্টা বলতে চাই না; যদি এক মিনিট এই ঢাকা শহরে ট্রাফিক পুলিশ কার্যক্রম বন্ধ করে তবে কী পরিস্থিতি হবে একবার চিন্তা করে দেখেন। শুধু এই তীব্র গরমের জন্য কেন আরও যদি কোনো দুর্যোগ আসে পুলিশ বসে থাকতে পারে না। পুলিশ মানুষের পাশে রয়েছে, মানুষের পাশে থাকবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ পুলিশ বার্ষিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ২০২৪-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ একটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দুই লাখের বেশি সদস্য রয়েছে পুলিশ বাহিনীতে। আমরা দিনরাত ২৪ ঘণ্টা মানুষের আইনশৃঙ্খলাজনিত সেবা দিয়ে থাকি; কিন্তু আমি গর্বের সঙ্গে বলতে চাই- বাংলাদেশ পুলিশ শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; যা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে জাতি দেখেছিল। জাতীয়তার পরীক্ষার বাংলাদেশ পুলিশ সবার আগে ভালো রেজাল্ট করে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছিল। ২০১৩ সালের ৫ মে আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা ছিল সেটি ঢাকার পুলিশ দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করেছিল দেশবাসী তা জানেন।
তিনি বলেন, মহামারি করোনার সময়ে বাবা-মা সন্তানের লাশ ফেলে চলে গেলেও পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব নিয়ে দাফন-কাফনের কাজ করেছেন। রাতে বাসা-বাড়িতে গিয়ে খাবার পৌঁছে দিয়েছে পুলিশ। বাসা থেকে করোনা আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। এটিই আমাদের বাংলাদেশের আধুনিক পুলিশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে পুলিশ বাহিনী চেয়েছিলেন আমি গর্বের সঙ্গে দাবি করতে চাই আজকের পুলিশ সেই পুলিশ।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, দ্বিতীয়বারের মতো তাপপ্রবাহের ঘোষণা এসেছে। স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ অবস্থায় পুলিশ বাহিনী শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নয়, তীব্র দাবদাহেও সারা ঢাকা শহরে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে।
হাবিবুর রহমান আরও বলেন, এই তীব্র গরমে ৫০টি থানা এলাকায় যারা পানি কিনে খেতে পারেন না তাদের জন্য বিনামূল্যে পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সঙ্গে স্যালাইন ও ওষুধের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এ অবস্থায় শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নয়, নাগরিক জীবনের সর্বত্রই পুলিশের অবস্থান রয়েছে।
ঢাকার পুলিশপ্রধান বলেন, পুলিশ আমাদের জীবন বাঁচাতে যেমন প্রয়োজন হয় ঠিক তেমনি জীবন সাজাতেও সংস্কৃতির প্রয়োজন হয়। জীবন বাঁচাতে এবং সাজাতে সবক্ষেত্রেই পুলিশ সতর্ক। সেই প্রতিজ্ঞা নিয়েই পুলিশ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা।
এবারই প্রথম জাতীয়ভাবে বাংলাদেশ পুলিশ বার্ষিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ২০২৪-এর আয়োজন হচ্ছে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আজকে যে এই প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেটি ১৯৮৬ সাল থেকে শুরু হলেও জাতীয়ভিত্তিতে এবারই প্রথম করছি। পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল আবদুল্লাহ আল মামুনের পৃষ্ঠপোষকতায় আমরা এটি শুরু করছি। এ অনুষ্ঠানে বিচারক হিসেবে যারা এসেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। পারফর্মগুলোর বিচারের পাশাপাশি তারা আমাদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেবেন সেটি প্রত্যাশা করি।
বক্তব্য শেষে প্রদীপ জ্বালিয়ে তিন দিনব্যাপী পুলিশ বার্ষিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ২০২৪-এর উদ্বোধন করেন ডিএমপি কমিশনার।