যমুনা ফিউচার পার্কে উপচেপড়া ভিড়, শেষ মুহূর্তে কেনাকাটার হিড়িক
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ১০:০৮ পিএম
ঈদের আর মাত্র ৫ দিন বাকি। শেষ মুহূর্তে কেনাকাটা করতে মানুষের ঢল নেমেছে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্কে। এখানে দেশি-বিদেশি সব ব্র্যান্ডের পণ্যের সমাহারে কেনাকাটায় সুবিধা বেশি থাকায় ক্রেতাদের প্রথম পছন্দ। তাই সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার সকাল থেকেই আসতে থাকেন ক্রেতারা। বিকাল নাগাদ লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে এর চারপাশ। সন্ধ্যার পর ভিড় আরও বাড়ে।
তবে সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সুবিশাল এ শপিংমলে ভিড় থাকলেও, রোজা রেখে ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করেন, কোনো ক্লান্তি তারা বোধ করেন না। তাই এ শপিংমলে কেনাকাটার হিড়িক পড়েছে ক্রেতাদের।
এদিকে ঈদ ঘিরে কেনাকাটায় কোটি টাকার উপহার ক্যাম্পেইন করেছে যমুনা ফিউচার পার্ক কর্তৃপক্ষ। এর আওতায় প্রতিদিনই শপিংমলের যে কোনো শোরুম থেকে ন্যূনতম ৫০০ টাকার পণ্য কিনে বিভিন্ন ধরনের উপহার পাচ্ছেন ক্রেতা। প্রতিদিনই ডায়মন্ড, স্বর্ণ, মোটরসাইকেল, টিভি, ফ্রিজ, ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক পণ্যসহ নানা ধরনের আকর্ষণীয় ও নিশ্চিত উপহার পেয়ে খুশি মনে তারা বাড়ি ফিরছেন। এতে ক্রেতাসাধারণের জন্য ঈদ আনন্দে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।
শুক্রবার সকাল থেকে পোশাক ছাড়াও অন্যান্য ঈদসামগ্রীও ক্রেতাদের কিনতে দেখা গেছে। দেশি ও বিদেশি ক্রেতা-দর্শনার্থীর পদচারণায় শপিংমলের আন্তর্জাতিকমানের নান্দনিক সৌন্দর্য কেনাকাটায় এনেছে ভিন্ন আমেজ। এছাড়া রয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা।
শপিংমলটি ঘুরে দেখা গেছে, শাড়ি, জামা-কাপড়, জুতা, গহনা, ঘড়ি, কসমেটিক্স, ইলেকট্রনিক্স, মোবাইল, পারফিউমসহ সব ধরনের পণ্যের ব্র্যান্ড ও নন-ব্র্যান্ড দোকান রয়েছে এখানে। তাই প্রিয়জনদের পছন্দের জিনিস বাছাইয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে না ঘুরে ক্রেতারা ভিড় করছেন যমুনা ফিউচার পার্কে। এক ছাদের নিচে দেশের প্রথমসারির সব ব্র্যান্ডের সুবিশাল সব শোরুম থেকে তারা পছন্দের জিনিসপত্র কেনাকাটা করছেন।
এদিকে ক্রেতাদের ভিড় থাকায় পার্কের সামনের রাস্তায় সব সময় তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া দুপুর থেকে শপিংমলে ঢুকতে ক্রেতাদের গাড়ির দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করতে হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এ রাস্তায় চলাচলকারীদের।
শুক্রবার সন্ধ্যায় অনেকে শপিংমলের ফুডকোর্টে ইফতার সেরে আবার কেনাকাটায় মেতে ওঠেন। ইফতারের পর যেন ফের ঢল নামে আস্থার শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্কে। মধ্যরাত পর্যন্ত চলে কেনাকাটা। এ সময় যমুনা ফিউচার পার্কের মেট্রো ফ্যাশন, দেশের শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড হুর, ইনফিনিটি, কে ক্রাফট, অঞ্জনস, আড়ং, জিন্স অ্যান্ড কোম্পানি, টুয়েলভ, রেড, জেন্টল পার্ক, টিন’স ক্লাব, প্লাস পয়েন্ট, কান্ট্রি বয়, রেঞ্জ, সিক্স লাইফ স্টাইল, লা রিভ, আর্টিসান, টপ টেন মার্ট পোশাকের ব্র্যান্ড ও শপগুলোতে প্রচুর ক্রেতা সমাগম দেখা যায়।
দুপুরে যমুনা ফিউচার পার্কের আড়ং আউটলেটে মালিবাগ থেকে কেনাকাটা করতে আসেন প্রীতম। তিনি যুগান্তরকে বলেন, ঈদের ২ হাজার টাকার মতো কেনাকাটা করে কোটি টাকার ঈদ উপহার ক্যাম্পেইনে অংশ নিই। সেখানে লটারিতে আমার নাম আসে। এতে আমি একটা ফ্রিজ জিতেছি। এটা আমার কাছে অনেক আনন্দের। এত অল্প টাকার শপিং করে এত বড় ফ্রিজ জিতব তা কখনোই কল্পনা করিনি।
এদিকে গুলশান থেকে আসা স্বপন যুগান্তরকে বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে পরিবারের জন্য কিছু কেনাকাটা করছি। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সুবিশাল এই শপিংমলে স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করা যায়। বিশাল জায়গা হওয়ায় এই শপিংমলে ক্রেতার ভিড় থাকলেও কোনো সমস্যা হয় না। এক শোরুম থেকে অন্য শোরুমে ঘুরে ঘুরে কেনাকাটা করা যায়।
যমুনা বিল্ডার্সের পরিচালক (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) ড. আলমগীর আলম বলেন, যমুনা ফিউচার পার্কে ক্রেতারা ভালোমানের পণ্য পাচ্ছেন। এজন্য সবার পছন্দের শীর্ষে এখন যমুনা ফিউচার পার্ক। এখানে রয়েছে যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কোনো বিড়ম্বনা ছাড়াই কেনাকাটা করা যাচ্ছে।
কোটি টাকার ঈদ উপহার : ঈদ ঘিরে যমুনা ফিউচার পার্কে কেনাকাটা করে কোটি টাকার উপহার জেতার সুযোগ করে দিয়েছে শপিংমল কর্তৃপক্ষ। আর এ অফারের আওতায় শপিংমলের যে কোনো শোরুম থেকে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকার কেনাকাটা করলেই থাকছে এক ভরি স্বর্ণ, মোটরসাইকেল, টিভি, ফ্রিজ, ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক পণ্যসহ নানা ধরনের আকর্ষণীয় উপহার জেতার সুযোগ। এই ক্যাম্পেইন চলবে চাঁদরাত পর্যন্ত। ক্রেতারা যাতে সহজে উপহার পেতে পারেন সেজন্য শপিংমলের সেন্টার কোর্টে গিফটের পৃথক বুথ করা হয়েছে। পণ্য ক্রয়ের রসিদ নিয়ে সেখানে থাকা কিউআর কোড অথবা gift.jamuna.info এ তথ্য দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতা উপহার জিতলে বুথ থেকে সংগ্রহ করতে পারছেন। শুক্রবারও এই আয়োজনে যারা অংশ নিয়েছেন তাদের মাঝে উপহারসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়েছে।
এদিন ঈদ উপহার বিজয়ীদের মধ্যে গোল্ড নোজ পিন পেয়েছেন মো. সাবাব খান। ফ্রিজ জিতেছেন প্রীতম, এলইডি টিভি জিতেছেন মো. হাবিব। রাইস কুকার পেয়েছেন মো. সাইফুল ইসলাম, মো. মিরাজ, মো. হিমন, মো. শাহরিয়ার, মো. রুবেল, মো. গোলাম রব্বানি ও মো. জাবেদ। ড্রাই আয়রন পেয়েছেন মকসুদা নামের এক ক্রেতা।