সংবাদ প্রকাশের ভয় দেখিয়ে কথিত সাংবাদিকের চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট!
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১১ পিএম
আহসান উল্লাহ হাসান। ফাইল ছবি
সাংবাদিক পরিচয়ে রাজধানীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করে সমঝোতার নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে আহসান উল্লাহ হাসান নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। কথিত ওই সাংবাদিক বিভিন্ন পত্রিকার ভুয়া আইডি কার্ড ব্যবহার করে ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করেন। এছাড়া অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজেকে ভূঁইফোড় অপরাধ বিচিত্রা নামে একটি পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আহসান উল্লাহ হাসানের নেতৃত্বে সাংবাদিক পরিচয়ে সংঘবদ্ধ কয়েকটি চক্র সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের হয়রানি করে আসছে। চক্রটি ভুক্তভোগীদের কোম্পানির নামে প্রথমে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে। এরপর আর কোনো সংবাদ হবে না বলে নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা দাবি করে; আর সেই টাকা না দিলেই শুরু হয় ধারাবাহিকভাবে মিথ্যা সংবাদ প্রচার এবং ফেসবুক পোস্ট।
পরে এসব নিউজের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন দপ্তর থেকে চিঠি পাঠিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। সেই টাকা কথিত সাংবাদিকরা মিলে ভাগ-বাটোয়ারা করে নেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভুক্তভোগী বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নামসর্বস্ব একটি পত্রিকায় কথিত সাংবাদিক আহসান উল্লাহ হাসান সংবাদ প্রকাশ করেন। এরপর ভয়ভীতি দেখিয়ে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর আবার আমার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ চক্রটি বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষদের টার্গেট করে সংবাদ প্রকাশের ভয়ভীতি দেখিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়ি, কারখানা থেকে নিয়মিত চাঁদাবাজি করেন। এরই মাঝে হাসান ভুক্তভোগীর আইনি পদক্ষেপের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে নামসর্বস্ব পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করেন।
কথিত ভুয়া সাংবাদিকদের বিষয়ে র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আসলে এসব ভুয়া হলুদ সাংবাদিক পরিচয় দানকারীদের ব্যাপারে আমরা প্রায়ই অভিযোগ পেয়ে থাকি এবং তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, কাউকে হয়রানি এবং কারো কাছ থেকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা হাতিয়ে নিলে তদন্ত করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে কথিত সাংবাদিক আহসান উল্লাহ হাসান জানান, আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি শুধুমাত্র নিউজ করার জন্য অভিযুক্তদের বক্তব্য নিতে ফোন দেই। এছাড়া কারো কাছে কোনো চাঁদা চাইনি। আমার কাজ হিসেবে আমি ধারাবাহিক নিউজ করে যাচ্ছি।