আবারও ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইল-২ আসনের এমপি তানভির হাসান ওরফে ছোট মনিরের বড় ভাই গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনিরের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) মধ্যরাতে ৯৯৯-এ কল দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করেন এক কলেজছাত্রী। এর পর তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে রাতভর নানা নাটকীয়তা শেষে আসামিকে অজ্ঞাত উল্লেখ করে অভিযোগ নেয় তুরাগ থানা পুলিশ।
গণমাধ্যমকে ভুক্তভোগী বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সূত্র ধরে গত দুই মাস আগে বড় মনিরের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর উত্তরার জমজম টাওয়ারে তাদের প্রথম দেখা হয়।
পরে গতকাল রাতে আবারও রেস্টুরেন্টে দেখা করার কথা বলে ভুক্তভোগীকে তুরাগ থানাধীন প্রিয়াংকা সিটিতে নিজের ফ্ল্যাটে নিয়ে যান বড় মনির। সেখানেই তাকে অস্ত্রের মুখে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, উনি আমাকে অস্ত্র দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। আমি বারবার ওনার কাছে মাফ চেয়েছি, যাতে আমার কোনো ভুল থাকলে আমাকে মাফ করে দেয়। তবু রেহাই মেলেনি।
পরে ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী ওই ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে ৯৯৯ কল করলে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে। এরই মধ্যে ওই বাসার সিসি ক্যামেরাও জব্দ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীকে থানায় নিয়ে গেলে রাতভর চলে নানা নাটকীয়তা। শেষে আসামিকে অজ্ঞাত উল্লেখ করে অভিযোগ নেয় পুলিশ। থানার পুলিশ পরিদর্শক আবু সাঈদ মিয়া বলেন, অনুসন্ধান চলছে। তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলছে। গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনিরের নামে অভিযোগ এসেছে। আসামি শনাক্ত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরাধ যে করবে, সে যেই হোক তাকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
এর আগে ২০২২ সালেও ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল টাঙ্গাইলের বড় মনিরের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ ছিল, গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনির ২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর তাকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এতে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। পরে ২০২৩ সালের ৫ এপ্রিল টাঙ্গাইল সদর থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন ভুক্তভোগী।
সেই সময় ওই তরুণী অভিযোগ করেন, বড় মনির মূলত তার সম্পত্তির সমস্যা সমাধান করে দেবে বলে বাসায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে এবং বিভিন্ন রকমের ছবি তোলে। ধর্ষণের বিষয়টি প্রকাশ করলে তাকে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। এর পর সেই ছবি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে বড় মনির আরও কয়েকবার তাকে ধর্ষণ করে বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি।
পরে জন্ম নেওয়া ওই পুত্রসন্তানের ডিএনএ টেস্ট করা হলে দেখা যায়, শিশুটির সঙ্গে বড় মনিরের ডিএনএ মেলেনি। অর্থাৎ শিশুটির জৈবিক (বায়োলজিক্যাল) পিতা বড় মনির নন। এর ভিত্তিতে গত বছরের ৯ অক্টোবর ডিএনএ টেস্টের প্রতিবেদনটি উপস্থাপনের পর শুনানি শেষে বড় মনির জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
এর পর ওই বছরের ১৮ নভেম্বর বিকালে টাঙ্গাইল শহরের বোয়ালী এলাকা থেকে বড় মনিরের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলার ওই বাদীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।