‘ছেলেটা আমার জনমদুখী, মৃত্যুটাও কষ্টের হইল’ বাবার আর্তনাদ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৬:২৭ পিএম
রাজধানীর খিলক্ষেতের কুড়িলে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ট্রেনে কাটা পড়ে মো. নিশাদ (২৫) নামে এক যুবক প্রাণ হারিয়েছেন।
সরেজমিনে দুপুর ১টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, যুবকের লাশটি ১৩৭/৫ পিলারের সামনে পড়ে আছে। লাশটি ঘিরে কিছু লোক জটলা বেধে আছে। পাশেই এক মধ্যবয়সি লোক আর্তনাদ করছেন। কথা বলে জানা গেল তিনি নিশাদের বাবা মো. নাছির। তিনি যুগান্তরকে বলেন, ‘আমার ছেলে (নিশাদ) গতকাল রাতেও সিকিউরিটি গার্ডের দায়িত্বপালন করেছে। দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ আগে বাসা থেকে বের হয়। আমার বাসা এখানেই (দুর্ঘটনাস্থলের কাছাকাছি)। কিভাবে কি হলো আমি বুঝতেছি না। বছর খানেক আগে ছেলেটার বিয়ে হয়। ছয় মাস আগে ছেলের বউ ছেলেকে রাইখা চলে যায়। আহারে ছেলেটা আমার জনমদুখী, মৃত্যুটাও কষ্টের হইল।’
প্রত্যক্ষদর্শী মো. আজিজ যুগান্তরকে বলেন, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সিলেটের উদ্দেশে রাজধানীর কমলাপুর থেকে ছেড়ে আসা জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি যখন কুড়িল পার হচ্ছিল তখন একজন যুবক কুড়িল (বিশ্বরোড) এয়ারপোর্ট রোড থেকে কুড়িল রেললাইনটি পার হচ্ছিলেন। আশেপাশের অপেক্ষমান অনেক মানুষ তখন চিৎকার করে তাকে নিষেধ করছিল। কিন্তু কানে হেডফোন থাকায় হয়ত তিনি শুনেনি। ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী নূর ফাতেমা মুন্নী বলেন, আমি কুড়িল কাজীবাড়ির পাশের দিকটায় ট্রেন যাওয়ার অপেক্ষায় ছিলাম। হঠাৎ লোকজনের চিৎকার শুনে তাকিয়ে দেখি এক যুবক হুড়োহুড়ি করে রেললাইন পার হচ্ছিল। ট্রেনে কাটা পড়ার ৫-৭ মিনিটের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, এই পথ দিয়ে আমি প্রতিদিন যাতায়াত করি। কুড়িল বিআরটিসি কাউন্টারের পেছনের দিকে অল্প পরিমাণ এই খোলা জায়গা দিয়ে বনানী-এয়ারপোর্ট রোডে চলাচলের জন্য প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ চলাচল করে। আমার চোখের সামনে এই জায়গায় ট্রেনে কাটা পড়ে ১২ জনের মৃত্যু দেখেছি। জনসমাগমের এই জায়গায় ট্রেন লাইনের দুটি ভয়ঙ্কর বাঁক। কর্তৃপক্ষের উচিত এর সুরাহা করা।