ঢামেক হাসপাতালে ভুয়া নারী ডাক্তার আটক
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৩৬ পিএম
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে মুনিয়া খান রোজা (২৫) নামে এক ভুয়া গাইনি চিকিৎসককে আটক করেছেন আনসার সদস্যরা। শনিবার রাতে তাকে ঢামেক হাসপাতালের নতুন ভবনের মেডিসিন বিভাগের আইসিইউর সামনে থেকে আটক করা হয়।
ঢামেক হাসপাতালে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা জানান, মুনিয়া ভুয়া আইডি কার্ড লাগিয়ে চিকিৎসক বেশে প্রতারণা করতে এসে হাতেনাতে আটক হন।
পুলিশ জানিয়েছে, আটক ওই নারী ঢামেক থেকে রোগী ভাগানোর কাজ করেন ও ফোন চুরি করেন।
শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সানরুল হক বলেন, এ ঘটনায় হাসপাতালের পক্ষ থেকে থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। মুনিয়াকে রোববার আদালতের মাধ্যমে কারগারে পাঠানো হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে তার ব্যবহৃত চিকিৎসকদের ইউনিফর্ম ও ভুয়া আইডি কার্ড।
ঢামেক হাসপাতালে দায়িত্বরত আনসারের প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) মো. উজ্জ্বল জানিয়েছেন, ঢামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের আইসিইউর এক নার্সের মোবাইল চুরি হয়। বিষয়টি নিয়ে আমাদের আনসাররা সন্দেহভাজনদের নজরদারি করেন। এ সময় ওই নারী চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে ঘোরাফেরা করতে থাকেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকদেরও বিষয়টি সন্দেহ হয়। পরে তাকে জিজ্ঞেসাবাদ করা হলে তিনি নিজেকে গাইনি বিভাগের চিকিৎসক পরিচয় দেন। পরে তাকে গাইনি বিভাগে নিয়ে গেলে তাকে কেউ চিনতে পারেন না এবং তার আইডি কার্ডটিও ভুয়া প্রমাণিত হয়। পরে তাকে ঢামেক পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে গেলে স্বীকার করেন, তিনি কোনো চিকিৎসক নন।
তিনি আরও বলেন, নীলক্ষেত থেকে ইউনিফর্ম সাড়ে পাঁচশ টাকার বিনিময়ে কিনেছেন। অবৈধভাবে আইডি কার্ড তৈরি করেছেন। মিটফোর্ড থেকে কিনেছেন স্টেথোস্কোপ। পরে তাকে সেখান থেকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়। হাসপাতালের পক্ষ থেকে ওয়ার্ড মাস্টার জিল্লুর বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
গাইনি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক মাহবুবুর রহমান রাজি জানিয়েছেন, সে আমাদের কোনো চিকিৎসক নন। ওই নারী একজন প্রতারক। তার আইডি কার্ডটিও ভুয়া প্রমাণিত হয়। সেখানে গাইনি বানানটাও ছিল ভুল।
মুনিয়া খান রোজার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার হাসনাকান্দি গ্রামে। মৃত করিম খানের মেয়ে তিনি। বর্তমান বংশাল নাজিমউদ্দিন রোডে ভাড়া থাকতেন।
অভিযুক্ত মুনিয়া খান সাংবাদিকদের বলেন, আমি এখানে আসছি কাজ শিখতে। কারো ক্ষতি করি নাই আমি। গত এক মাসে বেশ কয়েকবার এখানে এসেছি।
তিনি আরও বলেন, আমি ভয়ে প্রথমে বলেছিলাম ঢাকা মেডিকেলের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক; কিন্তু আমি ভুল বুঝতে পেরেছি। সত্যিকার অর্থে আমি কোনো চিকিৎসক নই, চিকিৎসা পেশার সঙ্গে আমি জড়িতও নই।
এদিকে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ওই নারী আইসিইউর ভেতর থেকে চিকিৎসকের পোশাক পরা অবস্থায় বেরিয়ে যাচ্ছেন।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, ওই নারীকে আনসার সদস্যরা আমাদের পুলিশ ক্যাম্পে দিয়ে যান। আমরা তাকে শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি।