জশনে জুলুছে আওলাদে রাসুল আল্লামা সাবির শাহ্
আদর্শ মানুষ গড়তে মহানবীর আদর্শ অনুসরনের বিকল্প নেই
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:১৬ এএম
সোমবার আঞ্জুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট, ঢাকার উদ্যোগে আয়োজিত র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: রফিকুল ইসলাম
আওলাদে রাসূল আল্লামা সাবির শাহ্ বলেছেন, সন্ত্রাসবাদ ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার আঘাতে বর্তমান পৃথিবী আজ দিশেহারা। শান্তির খোঁজে ছুটছে মানুষ। মৌলিক অধিকার বঞ্চিত পৃথিবীর অধিকাংশ জনগোষ্ঠী। সম্পদের পাহাড় করছে কিছু মানুষ। অন্যদিকে অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা ও বাসস্থানের অভাবে আছে বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ জণসাধারণ। অন্যায়ভাবে যুদ্ধ চাপিয়ে প্রতিবছর শরণার্থী করা হয় অসংখ্য মানুষকে। বিশেষকরে অনেক জায়গায় মুসলিম নিধন ঘটে নীরবে-নীরবে।
তিনি বলেন, নৈতিক ও যথাযথ ধর্মীয় শিক্ষা ও অনুশীলনের অভাবে সমাজে খুন-খারাবি, ঘুষ-দুর্নীতি, নারী-নির্যাতন ইত্যাদি লেগেই আছে। এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায়- প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ ও শিক্ষার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন। এই শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের অন্তরাত্মা পরিশুদ্ধ হয় এবং ইহলোক ও পরোলোকে শান্তি নসিব হয়।
সোমবার আঞ্জুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট, ঢাকার উদ্যোগে আয়োজিত র্যালি ও মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজধানীতে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ৯ রবিউল আউয়াল পবিত্র জশনে জুলুছে ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী (দঃ)’র র্যালি বের হয়েছে।
ঢাকার মোহাম্মদপুরস্থ কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া আলিয়া (কামিল) মাদ্রাসা হতে আরম্ভ হয়ে শাহজাহান রোড, ইকবাল রোড, আসাদ এভিনিউ, শিয়া মসজিদ, রিং রোড, শ্যামলী সড়ক সমূহ প্রদক্ষিণ করে পুনরায় মাদ্রাসা ময়দানে গিয়ে বিশাল মাহফিলে পরিণত হয়।
জুলুছের নেতৃত্ব ও মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ৪১ তম আওলাদ আল্লামা আলহাজ্ব সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ । প্রধান অতিথি ছিলেন পীর আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন শাহজাদা আলহাজ্ব সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসিম শাহ্।
ড. মাওলানা মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন এর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শাহজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসিম শাহ (মুদ্দা জিল্লুহুল আলী) বলেন, রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ থেকে বিচ্যুতির কারণেই মূলত পৃথিবীতে অশান্তি নেমে এসেছে। যারা ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে নবী-অলিদের প্রতি বিদ্বেষী করে তোলে।
তিনি আরও বলেন, আল্লাহ পাকের নেয়ামতসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ নেয়ামত রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সৃষ্টি। তার সৃষ্টিতে ধন্য হয়েছে সমগ্র সৃষ্টিজগত। যার সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ বলেন, আপনাকে সৃষ্টি না করলে কিছুই সৃষ্টি করতাম না (আল-কোরআন)। আল্লাহর রহমত ও করুণাপ্রাপ্তির কারণে খুশি উদযাপন করা কোরআনের নির্দেশ। নবীজির শুভ জন্মলগ্নে দাসীকে মুক্ত করে আনন্দ প্রকাশ করায় আবু লাহাবের মত অভিশপ্ত কাফেরও প্রতি সোমবার ভয়াবহ শাস্তি হতে কিছুটা পরিত্রাণ পায় বলে হাদিসে আছে।
মাহফিলে স্বাগত বক্তব্য আঞ্জুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাষ্ট, ঢাকার চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. শহীদ উল্লাহ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আঞ্জুমানের সম্মানিত সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মুহাম্মদ মহসিন, সেক্রেটারী জেনারেল আলহাজ্ব মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, ঢাকা আঞ্জুমানের সেক্রেটারী মোঃ মিজানুর রহমান। মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ও ঢাকা আঞ্জুমানের নেতৃবৃন্দ।
পবিত্র ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের তাৎপর্য তুলে ধরে বয়ান করেন- কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া আলিয়া (কামিল) মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্য আলহাজ্ব মুফতি আবুল কাশেম মুহাম্মদ ফজলুল হকসহ দেশ বরেণ্য ওলামায়েকেরাম।
খতমে গাউসিয়া ও মিলাদ শরীফ শেষে বাংলাদেশসহ সমস্ত মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় দোয়া করেন হযরতুল আল্লামা আলহাজ্ব সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্।