ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে শাহবাগ থানায় নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৪:০২ এএম
রাজধানীর শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
শনিবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে সামাজিক মাধ্যমেও সংগঠনটির সাবেক ও বর্তমান নেতারা সরব হয়েছেন।
আহতরা হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম।
তাদেরকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভূক্তভোগী ও তাদের সহপাঠীদের অভিযোগ, পুলিশের রমনা বিভাগের এডিসি হারুন অর রশিদ তাদেরকে থানায় নিয়ে বেদমভাবে পিটিয়েছেন। ছাত্রলীগের নেতা পরিচয় দেওয়ার পরেও হারুনের সঙ্গে ১০-১৫ জন পুলিশ সদস্য মিলে তাদেরকে পেটান। এরমধ্যে নাঈমের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার মুখমণ্ডল মারত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত বর্ণনায় ছাত্রলীগ নেতারা জানান, পুলিশের ৩১ ব্যাচের ক্যাডার এডিসি হারুন শনিবার রাতে ৩৩ ব্যাচের আরেক নারী পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বারডেম হাসপাতালে আড্ডা দিচ্ছিলেন। ওই সময় নারী কর্মকর্তার স্বামী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান। নারী কর্মকর্তার স্বামীও একজন ক্যাডার কর্মকর্তা। তার সঙ্গে এডিসি হারুনের বাক-বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সেটি হাতাহাতিতে রূপ নেয়। এরই জেরে পুলিশ ডেকে এনে তাদেরকে থানায় নিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে শনিবার দিবাগত রাতে এডিসি হারুন অর রশিদকে কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। সংশ্লিষ্ট বিভাগের অন্য কোনো কর্মকর্তাকেও পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে অতি উৎসাহী হয়ে শিক্ষার্থী পেটানোর অভিযোগ উঠেছিল। তিনি ছাত্রলীগের সাবেক এক সভাপতির ঘনিষ্ঠজন হিসেবে বিভিন্ন মহলে পরিচিত।
ক্ষোভে ফুঁসছেন ছাত্রলীগ নেতারা
এদিকে থানায় নিয়ে দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে বেদম পেটানোর ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতারা। তারা এডিসি হারুনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকেও সরব হয়েছেন তারা।
ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আবদুল্লাহ বিন মুন্সি লিখেছেন, ‘এডিসি হারুনের বিচার না হলে যেই শাহবাগে আমার ছাত্রলীগের দুই ছোট ভাইকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হইছে। সেই শাহবাগ অবরোধ হোক!’
আহত নাঈমের ছবি শেয়ার করে ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ লিখেছেন, ‘আমার ছাত্রলীগের ছোট ভাই। কেন এমন হলো, কি জন্য এমন হলো জানতে চাই। এটা কি মেনে নেওয়ার মতো ঘটনা!!’
আরেক কেন্দ্রীয় নেতা তানিম খান লিখেছেন, ‘যেখানে কেন্দ্রীয় নেতাদের নিরাপত্তা নাই, সেখানে তৃণমূলের কি হবে? এ লজ্জা কার!!!’
ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেত্রী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য রুশী চৌধুরী লিখেছেন, ‘আজ এটা কি হলো !! আহারে ছাত্রলীগ !!’
কেন্দ্রীয় নেতা সোলায়মান ইসলাম লিখেছেন, ‘পুলিশের পরকীয়ার জেরে রক্তাক্ত আমার ছাত্রলীগ।’
আহত নাঈমের ছবি শেয়ার করে ছাত্রলীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ তপু লিখেছেন, ‘গায়ে পরিহিত উর্দিটার অপব্যবহার করে একজন মানুষকে এভাবে প্রহার করা হবে, এমনটা সহ্য করা যায় না। তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাই। বন্ধু নাইম এবং ছোট ভাই মুনিমকে যে বা যারা সুপরিকল্পিত ভাবে আঘাত করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় আইন সম্পাদক তৌহিদ বনী লিখেছেন, ‘এতিমদের সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ!’