Logo
Logo
×

রাজধানী

দুর্ধর্ষ সেই অপহরণ ও নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন এনবিআরের নারী কর্মকর্তা

Icon

সিরাজুল ইসলাম

প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২৩, ০৪:৫৯ পিএম

দুর্ধর্ষ সেই অপহরণ ও নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন এনবিআরের নারী কর্মকর্তা

পঞ্চাশ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক নারী যুগ্মকমিশনারকে অপহরণ করে নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর তিনি কৌশলে মুক্তি পান। 

শুক্রবার রাজধানীর রমনা এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। পরদিন শনিবার এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়। পুলিশ এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন রমনা থানার ওসি আবুল হাসান।

নির্যাতনের শিকার মাসুমা খাতুন এনবিআরের যুগ্ম কমিশনারের (ট্যাক্স) কর অঞ্চল-২-এ কর্মরত আছেন। গ্রিন রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়েছে।

মাসুমার করা মামলার এজাহারে বলা হয়, ওই দিন বড় মগবাজার থেকে নিজের গাড়িতে করে সিদ্ধেশ্বরীর বাসায় ফিরছিলেন এই কর কর্মকর্তা। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে পৌঁছালে তাদের গাড়িতে ধাক্কা দেয় একটি মোটরসাইকেল। চালক গাড়ি থেকে নামলে সংঘবদ্ধ কয়েকজন চাবি কেড়ে নিয়ে গাড়িচালক আনোয়ার ও মাসুমাকে মারধর শুরু করে।

এর পর আনোয়ারকে রেখে মাসুমা ও তার গাড়ি সবুজবাগের একটি গ্যারেজে নিয়ে যান অপহরকারীরা। মাসুমার মুখ টেপ দিয়ে আটকে রাতভর নির্যাতন করা হয়। পর দিন দুপুর ২টা পর্যন্ত তাকে আটকে রেখে নির্যাতন চলে।

এজাহারে মাসুমা আরো বলেন, আমাকে অপহরণ করে আসামিরা আমার কাছে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তাৎক্ষণিকভাবে তারা আমার কাছে থাকা নগদ দেড় লাখ টাকা এবং একটি মোবাইল ফোন মুক্তিপণ হিসেবে আদায় করে। এরপর হুমকি দিয়ে বলে, মুক্তিপণের বাকি টাকা না দিলে পরদিন আমাকে হত্যা করে লাশ বস্তাবন্দী করে পানিতে ফেলে দেওয়া হবে। পরদিন আমাকে হত্যার জন্য একটি অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। ১৮ আগস্ট দুপুর দুইটার দিকে আসামি সাইফুল ইসলাম, আবু বকর সিদ্দিক ও ইয়াসিন আরাফাত রাজুকে পাহারায় রেখে মাসুদ ও তার কয়েকজন সহযোগী একসঙ্গে খাবার কিনতে যায়।  এই সুযোগে আমি গাড়ি থেকে নেমে বাঁচার বাঁচাও চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে। 

ঘটনাস্থল থেকে সাইফুল ইসলাম, আবু বকর সিদ্দিক ও ইয়াসিন আরাফাত রাজুকে আটক করে স্থানীয়রা সবুজবাগ থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আমাকে এবং আমার গাড়িটি হেফাজতে নেয়। পরে জানতে পারি আমাকে যে গ্যারেজে আটকে রাখা হয়েছিল সেটি ছিল সবুজবাগ থানাধীন ৬ নম্বর কবরস্থানে পাশে। 

জানা যায়, এরই মধ্যে মাসুদের তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন সাইফুল ইসলাম, আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে সাব্বির ও ইয়াছিন আরাফাত রাজু। তবে মাসুদকে এখনো গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া তার অন্য সহযোগীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। 

এর মধ্যে শান্ত, পনু, শাহীনসহ আরও ৫-৬ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে পুলিশ। এদিকে একদিনের রিমান্ড শেষে গ্রেফতার তিনজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া তিনজনই পুলিশের রিমান্ডে অপহরণের দায় স্বীকার করেছে। মাসুদসহ অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানায় পুলিশ। ইতোমধ্যে মাসুদের বাড়ির ঠিকানা সংগ্রহ করা হয়েছে।

রমনা মডেল থানার ওসি আবুল হাসান যুগান্তরকে জানান, ভিকটিমকে উদ্ধার এবং তিন আসামি গ্রেফতারের পর তাদের বিরুদ্ধে ১৯ আগস্ট একটি মামলা হয়। মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে এসআই সহিদুল ওসমান মাসুমকে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম