Logo
Logo
×

রাজধানী

নিজের গায়ে আগুন দিলেন ঋণগ্রস্ত রিকশাচালক

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৮ আগস্ট ২০২৩, ০৮:৩৫ পিএম

নিজের গায়ে আগুন দিলেন ঋণগ্রস্ত রিকশাচালক

অভাবের তাড়নায় নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে আত্মহননের চেষ্টা করেন ঋণগ্রস্ত এক রিকশাচালক। তার নাম রনি মিয়া (৩৫)। ঢাকার বাড্ডা এলাকায় সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। মারাত্মক দ্বগ্ধ অবস্থায় তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।

রনি মিয়ার স্ত্রী সোনিয়ার দাবি, সংসারের অভাব এবং ঋণগ্রস্ত হয়ে হতাশা থেকে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়েছেন তার স্বামী। 

রনি মিয়ার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্চারামপুরের সাহেবনগরে। স্ত্রী ও ছয় বছর বয়সি কন্যাসন্তান নিয়ে থাকেন বাড্ডার ৭ নম্বর রোডের জিএম বাড়ি পানির পাম্পের কাছে আনিছ মিয়ার টিনশেড বাড়িতে। মাসে বাসা ভাড়া গুনতে হয় সাড়ে তিন হাজার টাকা। রনি রিকশা চালান। স্ত্রী সোনিয়া একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। 

স্বামী-স্ত্রীর আয়ে আগে ভালোই চলছিল সংসার। সাম্প্রতিক সময়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে রনির পক্ষে সংসারের ভার সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে। সংসারের ঘানি টানতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন রনি। রিকশা চালিয়েও উপার্জন হয় না আগের মতো। এ অবস্থায় রনির সুখের সংসারে নেমে আসে বিষাদ। শুরু হয় পারিবারিক কলহ। ঋণের বোঝা, অভাব আর পারিবারিক কলহ সব মিলিয়ে দিশেহারা রনি। উপায়ন্তর না পেয়ে বেছে নেন আত্মহননের পথ।

সোমবার রাতে দোকান থেকে কিনে আনেন কেরোসিন। রাত ১২টার দিকে কেরোসিনের বোতল হাতে বেরিয়ে আসেন জিএম গলির পানির পাম্পের কাছের রাস্তায়। রাতের নির্জন রাস্তায় নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। আগুন যখন দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে, তখন অসহ্য যন্ত্রণায় চিৎকার করতে থাকেন রনি। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে আগুন নেভান। রাতেই তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। 

রনির স্ত্রী সোনিয়া যুগান্তরকে বলেন, রনি শারীরিক অসুস্থতার কারণে ঠিকমতো রিকশাও চালাতে পারতেন না। যে টাকা আয় করতেন তা দিয়ে সংসারে অভাব লেগেই থাকত। তাকে ৩০-৪০ হাজার টাকা ঋণ করতে হয়। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারছিলেন না। এ নিয়ে সংসারে টুকটাক ঝগড়াঝাটি হতো।
 
রনির শ্যালিকা অঞ্জনা বলেন, আমার ভগিনীপতিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের এইচডিইউতে রাখা হয়েছে। তার অবস্থা সম্পর্কে চিকিৎসকরা তাদের কিছুই বলছেন না। অন্যদিকে রনির বড় ভাই এ বিষয়ে কথা বলতে নারাজ। তিনি বলেন, আমার ভাই সুস্থ হলে সেই আপনাদের জানাবে- কেন নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিল। এ মূহূর্তে আমরা কিছুই বলতে পারছি না।
 
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, রনির শরীরের ৪২ শতাংশ পুড়ে গেছে। তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম