রামপুরায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও শিশুর প্রাণ কাড়ল ভিক্টর বাস
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৩, ০৯:১৯ পিএম
ছবি: যুগান্তর
রাজধানীর রামপুরা ব্রিজ এলাকায় জাহিদ হাসান নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও মেহেদী হাসান পারভেজ নামে এক শিশুর প্রাণ কেড়েছে ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহণের একটি বাস।
বৃহস্পতিবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। শিশুটি ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে শিক্ষার্থী জাহিদকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
জানা গেছে, সদরঘাট থেকে বাইপাইল রুটে চলাচল করে ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহণের বাস; কিন্তু রামপুরা ব্রিজ থেকে এই পরিবহণের একটি বাস নির্দিষ্ট রুটে না গিয়ে পূর্বদিকে বনশ্রীর রাস্তায় ঢুকে যায়। এরপর ইউটার্ন নিয়ে রামপুরা টিভি সেন্টারের পাশের ইউলুপ হয়ে রাস্তার অপরপাশে যাওয়ার চেষ্টা করে। ইউলুপ থেকে নামার মুখে জাহিদ হাসান (২৪) নামে এক শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দেয় বাসটি। এরপর পালানোর জন্য দক্ষিণ দিকের বাড্ডার রাস্তায় না গিয়ে ইউলুপের পশ্চিম দিকে হাতিরঝিলের রাস্তায় ঢুকে যায়। সেখানে চাপা দেয় মেহেদী হাসান পারভেজ নামের এক প্রতিবন্ধী শিশুকে।
হারিতঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ যুগান্তরকে বলেন, এ ঘটনায় ঘাতক বাসটি জব্দ করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে চালকের সহকারীকে। চালককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, জাহিদ হাসান চীনের নর্থ চায়না ইলেকট্রিক পাওয়ার ইউনিভার্সিটির বিএসসি ইঞ্জনিয়ারিংয়ের ছাত্র। তিনি মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার ভবেরচরের মোদাচ্ছের আলীর ছেলে। ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়।
নিহতের বড় ভাই ইমরান হোসেন বলেন, আগামী ২৫ আগস্ট তার চীনে যাওয়ার কথা ছিল। বিকালে দুজন মিলে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টারের বাসা থেকে শপিং করার উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন। রামপুরা ব্রিজের কাছে বাস থেকে নেমে গুলশান যাওয়ার জন্য তারা হাঁটছিলেন। এ সময় পেছন থেকে একটি বাস জাহিদকে ধাক্কা দেয়। এতে সে গুরুতর আহত হয়। পরে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মিজানুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, বাসটি তার সঠিক রুটে না গিয়ে ইউলুপে চলে যায়। কেন এমন করল সেটা জানা যায়নি। ইউলুপে শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। তখন হাতিরঝিলের মুখেই ওই প্রতিবন্ধী শিশুটি তার মায়ের সঙ্গে ভিক্ষা করছিল। ওই শিশুটির ওপর বাসটি উঠিয়ে দেওয়া হয়। এতে সে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। গাড়ির চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহতদের স্বজনরা থানায় এসেছেন, মামলা প্রক্রিয়াধীন।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া যুগান্তরকে বলেন, লাশ দুটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে।